যে কোনও ব্যবসায় শুভ ফল লাভ। বিশেষ কোনও ভুল বোঝাবুঝিতে পারিবারিক ক্ষেত্রে চাপ। অর্থপ্রাপ্তি হবে। ... বিশদ
শীত আসি আসি করছে। এসময়ে ত্বকের চাই বিশেষ যত্ন। আপনি কীভাবে ত্বকের খেয়াল রাখেন এই মরশুমে?
ত্বক খুব সেনসিটিভ ব্যাপার। তাই ত্বককে একটা সুন্দর সময় দিতে হয়। সেই সময়টা সবসময় আমাদের ব্যস্ত জীবনে পাওয়া যায় না। তাহলেও আমি যেটা মনে করি যে ত্বককে মসৃণ ও সুন্দর রাখার একটা দায়িত্ব নিজের উপরে বর্তায়। কারণ শরীর মন্দিরের মতো। তাকে যত সুন্দর করে সম্মান দিয়ে রাখবেন তত তার ফলটাও পরে ফিরে পাবেন। তাই ত্বক শুষ্ক হলে খেয়াল রাখুন রাতে ময়েশ্চারাইজ করতে যেন না ভুলে যান। মেকআপ মুখে থাকলে সেটা ভালো করে তুলে ত্বককে হাইড্রেট করতে হবে। হাইড্রেশন খুব জরুরি। মুখ ভালো করে জল দিয়ে ধুয়ে নাইট ক্রিম মেখে নিলে ত্বক সেই আর্দ্রতাটা পায়। আমার মনে হয় প্রাকৃতিক উপায়ে রূপচর্চা করা সবসময়েই ভালো। আমাদের ছোটবেলায় যেমন মা-ঠাকুরমারা শিখিয়েছেন, দুধের সর বা অলিভ অয়েল কিংবা নারকেল তেল ত্বকের জন্য ভীষণ উপযোগী। এই সব মিলিয়েই ত্বককে ভালো রাখা যায়।
একই কথা প্রযোজ্য কেশচর্চার ক্ষেত্রেও। শীতে চুল খুব রাফ হয়ে যায়। আপনার হেয়ার কেয়ার রুটিন একটু বলুন।
চুলের দেখভালও গুরুত্বপূর্ণ। হেয়ার ফল বা চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা এখন অনেকেরই। নিয়মিত নারকেল তেল, ক্যাস্টর অয়েল আর পেঁয়াজের রস মিশিয়ে একসঙ্গে চুলের গোড়ায় লাগালে ভালো হয়। চুলের যে পুষ্টি দরকার, এই মিশ্রণ থেকে চুল সেটা পাবে। সেটা চুল আর্দ্রও রাখবে। আর রোজ শ্যাম্পু, কন্ডিশনার নিয়ম করে দেওয়া উচিত। চুলের গোড়ায় একটু হট অয়েল মাসাজ করতে পারলে সেটাও চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে। শীতকালে চুল যখন খুব বেশি রাফ হয়ে যায়, তার জন্য কোনও ন্যাচারাল সিরাম ব্যবহার করা উচিত। আবারও বলছি, কৃত্রিম উপাদানে তৈরি সিরাম নয়। আজকাল বাজারে ন্যাচারাল জিনিস প্রচুর পাওয়া যায়। তার থেকে বেছে ভালো সিরাম ব্যবহার করলে ফল পাওয়া যায়।
আপনি অভিনেত্রী হওয়ার পাশাপাশি একজন মা। এই মরশুমে ছেলেমেয়েদের যত্নের দিকেও আপনাকে খেয়াল রাখতে হয়। এক্ষেত্রে সাবধান থাকার কী কী টিপস?
বাচ্চাদের মধ্যে আমার ছেলের (অঙ্কন) স্কিন একটু ড্রাই আর আমার মেয়ের (ঋষণা) স্কিন মিক্সড। ছেলে ইতিমধ্যেই বাইরে গিয়েছে পড়তে। শীতের দেশেই আছে। তাই ওর চুল ও ত্বকের যত্ন নেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি ওকে খুব ভালো ভালো কিছু ময়েশ্চারাইজার দিয়ে দিয়েছি। হ্যান্ড ক্রিমও দিয়েছি। এছাড়া কিছু ভেষজ প্রোডাক্টও দিয়েছি, সেগুলো সময় বুঝে ব্যবহার করতে বলেছি। আর মেয়ের ক্ষেত্রে বলতে পারি ওরা বন্ধুরা মিলে আজকাল ইন্টারনেট দেখে দেখে নিজেরাই বেশ সচেতন। মেয়েই আজকাল আমায় শিখিয়ে দেয়, এই সিরামটা ভালো, এই টনিকটা ভালো বা এই স্প্রে-টা ভালো!
এই সময়ে প্রচুর বিয়েবাড়ি, উৎসব লেগেই থাকে। নিজের মেকআপ-এর ক্ষেত্রে আপনি কী কী ফলো করেন?
বিয়েবাড়ি বা যে কোনও উৎসবে যাওয়ার জন্য আমার নির্দিষ্ট মেকআপ আর্টিস্ট থাকেন। অনেক সময় নিজেকেও করতে হয়। এখন অভ্যাসের মতো হয়ে গিয়েছে! আমি নিজের চোখ এবং ঠোঁট আর ব্লাশ — এইগুলো একটু হাইলাইট করে থাকি। স্কিনে একটু জেল্লা আনার জন্য ইলিউমিনেটর জাতীয় কিছু ব্যবহার করলে ভালো লাগে। বিয়েবাড়ির জন্য এটা খুব কাজে দেয়। মনে রাখবেন, আই মেকআপ খুব কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। তার সঙ্গে লিপ কালারও যেন মানানসই হতে হয়। বিয়েবাড়িরর মেকআপ একটু গর্জিয়াস হলে ভালো লাগে।
হেয়ারস্টাইলিং-এর সময় কী কী বিষয় মাথায় রাখেন?
হেয়ারস্টাইলিংটা মুখের আকৃতির উপরে অনেকটা নির্ভর করে। মুখের সঙ্গে চুলের সামঞ্জস্য বজায় রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া যেরকম পোশাক পরবেন, তার সঙ্গে মানানসই হেয়ার স্টাইল করতে হবে। আমার ধারণা শাড়ি বা এথনিক ড্রেসের ক্ষেত্রে একটু ট্র্যাডিশনাল লুক ভালো লাগে। তাই সেইভাবে চুল বাঁধলে অর্থাৎ খোঁপা এবং ফুল ইত্যাদি দিলে ভালো লাগে। আর ওয়েস্টার্ন পরলে তার সঙ্গে সাধারণ স্টাইলে খোলা চুল বা হর্স টেল করলে ভালো লাগে।
আপনার সাজগোজ সবসময়েই প্রশংসার দাবি রাখে। আমাদের পাঠকদের যদি একটু জানান, এই মরশুমে কীভাবে সাজলে ভালো মানাবে?
পাঠকদের বলতে পারি সাজগোজটা একেবারেই নিজস্ব রুচির মধ্যে পড়ে। নিজের রুচি অনুযায়ী কিছু পরলে প্রত্যেককেই সুন্দর দেখায়। তবে আমি এটাও মনে করি যে প্রত্যেকের একটা ইউনিক স্টাইল আছে, সেটা মেনে চলা খুব দরকার। তার সঙ্গে কেউ যদি কোনও বিশেষ ধরনের স্টাইলিং আপনার জন্য রেকমেন্ড করে, তাহলে সেটা ট্রাই করে দেখতে পারেন। এমনিতে যা সাধারণ, স্বাভাবিক এবং অভিজাত স্টাইল সেটাই আমার পছন্দ।
আপনার কাছে ভালো থাকা মানে কী?
আমার কাছে ভালো থাকা মানে মন ভালো রাখা। পজিটিভ ভাইবস যেন সবসময় রাখা যায়। মানুষকে সম্মান, ভালোবাসা দিতে যেন না ভুলি। অন্যের ভালো হলে সেটা যেন আমরা ভালোভাবে নিতে পারি। সবাই মিলেমিশে ভালো থাকাটা খুব দরকার। আর সৌন্দর্যের দিক থেকেও বলতে পারি, নিজেকে ভিতর থেকে ভালো রাখলে সেটাই মুখে ফুটে ওঠে। কারণ মুখ হল মনের আয়না।