ব্যবসা ও পেশায় ধনাগম ভাগ্য আজ অতি উত্তম। বেকারদের কর্ম লাভ হতে পারে। শরীর স্বাস্থ্য ... বিশদ
এযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক আর্নেস্ট হেকেল বলেনঃ ‘প্রকৃত বিজ্ঞানের প্রচেষ্টাই হল সত্যের জ্ঞানলাভ করা।’ যদি সত্যোপলব্ধিই আমাদের জীবনে শ্রেষ্ঠ আদর্শ হয়, তবে আমাদের মনে কেবল এই প্রশ্নই জাগেঃ ‘যাঁকে জানলে মানবাত্মা মুক্ত হয় এবং শান্তি লাভ করে সেই সত্যের স্বরূপ কি এবং কি উপায়েই বা সেই জ্ঞান লাভ করা যায়?’ প্রথমত যদি আমরা ‘সত্য’ এই শব্দটির বিভিন্ন ব্যাখ্যাসম্বন্ধে বিশ্লেষণ করি তাহলে জানতে পারব যে, সূক্ষ্মার্থের দিক দিয়ে ‘সত্য’ এই শব্দটি যা কিছু বিশ্বজনীন তারই নির্দেশক। কিন্তু ধর্ম যখন সাম্প্রদায়িকভাবে ও বিশেষ কতকগুলি আচার ও মতবাদের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে তখন সে তার মৌলিক সর্বজনীন অর্থটি হারিয়ে ফেলে।
উদাহরণস্বরূপ, ‘সত্যকে জানো এবং সত্যোপলব্ধি করলেই মুক্ত হবে’— এই অংশটির ব্যাখ্যাপ্রসঙ্গে প্রাচীনকালের শাস্ত্রবেত্তাগণ বলেছিলেনঃ ‘যীশুখ্রীষ্টই ঈশ্বরের একমাত্র পুত্র যিনি জগতে মানবের ত্রাণকর্তারূপে অবতীর্ণ হয়েছিলেন—এটিই প্রকৃত সত্য এবং এতে অবশ্যই বিশ্বাস করবে। এই সত্যে বিশ্বাসের বলেই মানুষ সকল প্রকার পাপ হতে মুক্ত হবে এবং ঈশ্বরও তাকে ক্ষমা করবেন।’
বহু ধর্মশাস্ত্রী-কর্তৃক উপরি-উক্ত ব্যাখ্যাটিই দেওয়া হয়েছিল। আবার অন্য অনেকে একটু ভিন্নরূপ ব্যাখ্যাও দিয়েছিলেন। যেমন, যীশুখ্রীষ্ট পৃথিবীতে উচ্চতম সত্যের প্রচারকল্পে অবতীর্ণ হয়েছিলেন এবং তাঁর জীবনই ছিল সত্যের মানদণ্ডস্বরূপ। যদি তাঁর জীবন ও বাণীতে আমাদের বিশ্বাস থাকে তবে তা-ই সত্যোপলব্ধি করতে সাহায্য করবে এবং সত্যের স্বরূপ কি তা আমরা জানতে সক্ষম হ’ব ও পরিণামে মুক্তিলাভ করব। এজাতীয় চিন্তাশীল ব্যক্তিদের কাছে অন্য কোন ব্যাখ্যাই গ্রহণযোগ্য নয়। পক্ষান্তরে এইসব ব্যক্তিরা তাঁদের সংকীর্ণ মতবাদ ও ধারণার বহির্ভূত কোনকিছুই গ্রহণ করবেন না।
স্বামী অভেদানন্দের ‘ঈশ্বরদর্শনের উপায়’ থেকে