প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
এই জাতীয় স্বীকৃতির আওতা থেকে অবশ্য বাদ রাখা হয়েছে দেশের সব মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালকে। মূলত জেলা থেকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যন্ত সব স্তরের হাসপাতালকে এই সমীক্ষার আওতায় আনা হয়েছে। পরিষেবা ব্যবস্থা, অর্থ খরচ, রোগীদের অধিকার, সহায়তা পরিষেবা, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ, ক্লিনিকাল কেয়ার, কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট এবং আয়— হাসপাতাল পরিচালনায় আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে এই আটটি ক্ষেত্র যাচাই করে গুণমানের শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। পারফরম্যান্স বিচার করতে রাজ্যগুলিকে নিয়ে একটি প্রতিযোগিতামূলক কর্মসূচি নিয়েছিল কেন্দ্রের জনস্বাস্থ্য কল্যাণ মন্ত্রক। সেই মতো রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে বিভিন্ন পরিষেবার গুণমান যাচাই করে দেখতে কয়েকমাস আগে রাজ্যে বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে গ্রামীণ, মহকুমা ও জেলা স্তরের হাসপাতাল পরিদর্শন করে তাঁরা পরিষেবার মান খতিয়ে দেখেন। সব রাজ্যেই এই পদ্ধতিতে সমীক্ষা চালানো হয়। তার ভিত্তিতে দেওয়া হয় শংসাপত্র। কেন্দ্রের এই শংসাপত্রের পোশাকি নাম ন্যাশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স স্টান্ডার্ডস বা এনকিউএএস। দেখা যাচ্ছে, গুণমানের বিচারে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পরিষেবা কেন্দ্র হিসেবে পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে তালিকায় শীর্ষে। অধিকাংশ বিজেপি শাসিত রাজ্যের মতো প্রধানমন্ত্রীর নিজের রাজ্য গুজরাতও পিছিয়ে রয়েছে অনেকটাই।
এনকিউএএসের বিচার অনুযায়ী, এ রাজ্যে জেলাস্তর থেকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র পর্যন্ত মোট ১২,৮৫৯টি পরিষেবা কেন্দ্রে গুণমান বিচারের পরীক্ষা চালান বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যে ৩০৩৯টি কেন্দ্র শংসাপত্র লাভ করে, শতকরা হারে যা ২৩.৬ শতাংশ। বাংলার পরেই রয়েছে দক্ষিণের রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশ। তাদের স্বীকৃত কেন্দ্রের সংখ্যা ২১৭২টি, তালিকায় তৃতীয় মধ্যপ্রদেশ। সেখানে স্বীকৃতি পেয়েছে ১৯৫২টি কেন্দ্র। তার পরেই রয়েছে গুজরাত, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক ও ওড়িশা। এই সাফল্যের কারণ হিসেবে মমতা সরকারের দাবি, রাজ্যে নতুন স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন, আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করা, প্রাথমিক স্তরে ন্যূনতম চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া নিশ্চিত করা হয়েছে গত তেরো বছরে। প্রথমবার ক্ষমতায় এসেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার মানোন্নয়নের উপর বিশেষভাবে মনোনিবেশ করেন। বলাবাহুল্য, এই সরকারের পরবর্তী লক্ষ্য হল, যেসব স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র এখনও নির্ণায়ক মান ছুঁতে পারেনি বা পিছিয়ে রয়েছে তাদের পরিকাঠামো আরও উন্নত করা। সেই লক্ষ্যে এগনোর পথে কেন্দ্রের এই স্বীকৃতি নিঃসন্দেহে উৎসাহ জোগাবে। সেইসঙ্গে এও বলতে হয়, এ রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে যাঁরা ‘গেল গেল’ রব তুলছেন, এরপর থেকে বাংলার স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে সমালোচনা করার আগে অন্তত দু’বার ভাবতে হবে তাঁদের, বিশেষত বিরোধীদের।