প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
মূল্য নিয়ন্ত্রণে মোদি সরকারের এই সীমাহীন ব্যর্থতার দিকে পরোক্ষে আঙুল তুলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়ে দিয়েছে, নিকট ভবিষ্যতেও খুচরো বাজারে দাম কমার কোনও সম্ভাবনা নেই। তাই ‘রেপো রেট’ থাকছে অপরিবর্তিত। অর্থাৎ ব্যাঙ্ক ঋণের উপর ধার্য হওয়া চড়া সুদ দিয়ে যেতে বাধ্য থাকবে আম জনতা। রেপো রেট না কমানোর কারণ হিসেবে গত দু’বছর ধরে মূল্যবৃদ্ধিকেই ঢাল করে যুক্তি খাড়া করছে সর্বোচ্চ ব্যাঙ্ক। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবার খুচরোর সঙ্গে পাইকারি বাজারে দাম বৃদ্ধিও উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এর মধ্যেই বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম বাড়ায় ভারতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার প্রভূত সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এবং সেটা হলে পরিবহণ খরচ বেড়ে যাবে, ফলে আরও দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা। এর সঙ্গে পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধ পরিস্থিতি অবস্থা আরও ঘোরালো করে তুলেছে। প্রশ্ন উঠেছে, এই কঠিন পরিস্থিতিতে হেঁশেলের খরচ কমিয়ে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে কেন পারছে না কেন্দ্রীয় সরকার বা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক? পরিস্থিতি এখন কার্যত হাতের বাইরে চলে যাওয়ার পর মোদি সরকার অবশ্য পেঁয়াজ, টম্যাটোর মতো কয়েকটি পণ্যের জোগান বাড়িয়ে আগুন কিছুটা প্রশমিত করার কথা জানিয়েছে। এ জন্য বিভিন্ন সমবায় সংস্থা, বিপণী, কেন্দ্রীয় ভাণ্ডারের মাধ্যমে খুচরো বাজারে ভর্তুকি দিয়ে খাদ্যপণ্য বিক্রির পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। কিন্তু সমস্যা যেখানে গোটা দেশজুড়ে সেখানে এই সামান্য উদ্যোগকে স্রেফ লোকদেখানো মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে। কারণ ইতিমধ্যেই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে ঘরে ঘরে যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে তাতে শখের খাবারদাবার তো দূরের কথা, বাজারে গিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় কেনাকাটাতে কাটছাঁট করতে বাধ্য হচ্ছে মধ্যবিত্ত। নিম্নবিত্তদের পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাদ্য জুটছে না। যেখানে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস নিজেই বলছেন, মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানা সম্ভব হচ্ছে না, সেখানে দাম কমার আশা বাতুলতা মাত্র। মূল্যবৃদ্ধি যেন নিয়তির মতো চেপে বসেছে মানুষের উপর।
মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রের এই ব্যর্থতার মাশুল দিতে হচ্ছে আপামর ভারতবাসীকে। এর থেকে বুঝি সাধারণ মানুষের মুক্তি নেই। যদিও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার উৎসবের আগে থেকেই পথে নেমেছে। তাতে বিক্ষিপ্তভাবে কিছু সুফলও মিলেছে। কিন্তু খুচরো পণ্য ও আনাজের বাজার এতটাই চড়ে রয়েছে যে টাস্ক ফোর্সের নজরদারি ও রাজ্যের পদক্ষেপের পরেও দামের ক্ষেত্রে বিশেষ পার্থক্য চোখে পড়ছে না। এই অবস্থায় সাধারণ ও দিনআনা দিনখাওয়া মানুষের দুর্বিষহ অবস্থা কবে, কীভাবে কাটবে— তা বোধহয় কেউই বুঝতে পারছেন না। তাই সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ যাদের ভোটে জিতিয়ে এনেছে সেই কেন্দ্রীয় সরকার নয়, এখন শুধু ঈশ্বরই ভরসা।