প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ইনক্লুসিভ পলিটিক্স’ শুধুমাত্র পূর্ণবয়স্ক মহিলাদের কথাই ভাবেনি, সমাজের অন্যসকল দুর্বল মানুষের কথাও ভেবে থাকে সমানভাবে। যেমন স্কুল-কলেজ পড়ুয়া মেয়েরা পায় কন্যাশ্রী প্রকল্পের সহায়তা। বিবাহযোগ্য তরুণীদের দেওয়া হয় রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা। এর বাইরে রয়েছে ৬০ বছর বা তদূর্ধ্ব মহিলাদের জন্য বয়স্ক বা বার্ধক্য ভাতার সুবিধা। এমনকী বার্ধক্য ভাতার বেনিফিসিয়ারা হলেন লিঙ্গনির্বিশেষে সব শ্রেণির বয়স্ক মানুষ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়দের সরকার ২০২১ সালে সমস্ত দপ্তরের বার্ধক্য ভাতা ‘জয় বাংলা’ নামক একটি ছাতার নীচে নিয়ে এসেছে। মাসিক বার্ধক্য ভাতা বেড়ে বেড়ে এখন এক হাজার টাকায় উন্নীত হয়েছে। গত তিনবছরে প্রায় এক কোটি মানুষকে জয় বাংলার অধীনে আনা হয়েছে। বিধবা এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন নাগরিকদেরকেও রাজ্য সরকার এই প্রকল্প মারফত প্রতিমাসে নিয়ম করে পর্যাপ্ত ভাতা দিয়ে থাকে।
বুধবার ছিল বাংলাজুড়ে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো। ওই বিশেষ দিনে নবান্ন থেকে বাংলার লক্ষ্মী মায়েদের পাশাপাশি অন্য দুর্বল শ্রেণির জন্যও দেওয়া হয়েছে বিরাট সুখবর। রাজ্যের নিয়মিত বার্ধক্য ভাতার তালিকায় এবার যুক্ত হবেন প্রায় দেড় লক্ষ নতুন উপভোক্তা। পুজোর ছুটির পর রাজ্য সরকারি অফিস খুললেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। ২০২১ সালে পঞ্চায়েত, সমাজকল্যাণ, কৃষিসহ বিভিন্ন দপ্তরের আওতাধীন একগুচ্ছ প্রকল্পকে একছাতার তলায় এনে ‘জয় বাংলা’ নাম দেয় রাজ্য সরকার। এর মধ্যে রয়েছে জয় জোহার, তফসিলি বন্ধু, বিধবা ভাতা, মানবিক, ওল্ড এজ পেনশন, বয়স্ক তাঁতিদের পেনশন, বয়স্ক শিল্পীদের পেনশন, প্রবীণ মৎস্যজীবীদের পেনশন এবং বয়স্ক কৃষকদের পেনশন প্রকল্প। তখনই এসব প্রকল্পের মাসিক ভাতা বাড়িয়ে এক হাজার টাকা করা হয়। বর্তমানে ‘জয় বাংলা’ প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের প্রায় এক কোটি মানুষ বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা এবং বিশেষভাবে সক্ষম নাগরিকরা প্রতিমাসে ১০০০ টাকা হারে ভাতা পেয়ে থাকেন। এই টাকার মধ্যে ন্যাশনাল সোশ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রামের (এনএসএপি) অধীনে যৎসামান্য কিছু দেয় কেন্দ্র। তবু তা নিয়েই মোদি সরকারের হাঁকডাকের বহর বিরাট! রাজ্যের এই ভাতা নতুন করে কারা পাবেন, তা চূড়ান্ত করতে পুজোর আগেই প্রয়োজনীয় সমীক্ষার কাজ শেষ করা হয়েছে। তার ভিত্তিতেই প্রায় দেড় লক্ষ প্রবীণ নাগরিককে বার্ধক্য ভাতার উপভোক্তা তালিকায় আনার সুযোগ তৈরি হয়েছে। রাজ্যের সামাজিক সহায়তা প্রকল্পগুলির সুবিধা স্বচ্ছতার সঙ্গে সর্বাধিক সংখ্যক দুর্বল মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের প্রধান লক্ষ্য। সেই কাজটি যে পদ্ধতিতে এবং যতটা দ্রুততার সঙ্গে চলছে, তার জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। কোনও সংশয়ের অবকাশ নেই যে, রাজ্যের শাসক দল মানুষের প্রাণঢালা আশীর্বাদ বার বার পাচ্ছে এই কারণেই। বিষয়টি বিলম্বে হলেও অনুধাবন করে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসসহ সমস্ত কুচুটে রাজনৈতিক দল বাংলার জননেত্রীর অনবদ্য প্রকল্প-ভাবনার বিরুদ্ধাচারণে অবশেষে ক্ষান্ত দিয়েছে। ভোট কুড়োবার জন্য তারাই এখন বেচারা নকলনবিশের ভূমিকায়!