পারিবারিক ঝামেলার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি। প্রেম-প্রণয়ে শুভ। অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষে মানসিক চাপ বৃদ্ধি। প্রতিকার: আজ দই খেয়ে ... বিশদ
এবার বাণিজ্য সম্মেলনে ২ লক্ষ ৮৪ হাজার ২৮৮ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে। রাজ্য সরকারের হিসেব মতো এর ফলে আট থেকে দশ লক্ষ কর্মসংস্থানের দরজা খুলবে। রাজ্যের অর্থ ও শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্রর দাবি, এর আগে যে চারটি শিল্প সম্মেলন হয়েছে, সেখানে প্রস্তাবিত বিনিয়োগের মোট অঙ্কের ৪০ শতাংশ বাস্তবায়নের বিভিন্ন স্তরে আছে। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, সিঙ্গুর-কাণ্ডের পর এখনও সেই জমিই এরাজ্যে শিল্পের পথে প্রধান বাধা। জমিঅধিগ্রহণ নিয়ে সরকারের একগুঁয়েমি এখানে বিনিয়োগের প্রধান অন্তরায়।
কিন্তু, এবার শিল্প দপ্তর প্রকৃত অর্থেই যে শিল্পগঠনের জন্য প্রস্তুত, সেই বার্তাও দেওয়া হয়েছে। রাস্তা তৈরি, বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া বা সামাজিক পরিকাঠামো গড়ে দেওয়ার পাশাপাশি সেখানে বহু জায়গায় সরকার কারখানা গড়ে তোলার সুবিধার্থে কমন ফেসিলিটি সেন্টার, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বা পণ্যদ্রব্য বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা করে রেখেছে।
সংবাদে প্রকাশ, রাজ্য সরকার জানিয়েছে, তাদের হাতে মোট ১৪৮টি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক বা এস্টেট রয়েছে। জেলাভিত্তিক সেই শিল্প তালুকগুলির মধ্যে দার্জিলিং এবং ঝাড়গ্রামে একটি করে, কালিম্পং, কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং হুগলিতে দুটি করে, আলিপুরদুয়ার, পূর্ব বর্ধমান, পুরুলিয়ায় তিনটি করে, বীরভূমে চারটি, মালদহ ও মুর্শিদাবাদে পাঁচটি করে, জলপাইগুড়িতে ১১টি, নদীয়া এবং উত্তর ২৪ পরগনায় নয়টি করে, পশ্চিম বর্ধমান এবং বাঁকুড়ায় সাতটি করে, কলকাতায় ১৭টি, পশ্চিম মেদিনীপুরে ১০টি, পূর্ব মেদিনীপুরে ছ’টি, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১৬টি শিল্পতালুক রয়েছে। হাওড়ায় শিল্পতালুকের সংখ্যা ২১। সরকারের দাবি, এরাজ্যে শিল্পের জন্য মোট ২৭ হাজার ১০৯ একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে ইতিমধ্যেই শিল্প গড়া হয়েছে ১৬ হাজার ৮৮৩ একর জমিতে। বাকি জমি তৈরি রাখা হয়েছে ভবিষ্যৎ শিল্পের জন্য।
শিল্প দপ্তরের মতে, জমি যে এখন কোনও ইস্যুই নয়, তার প্রমাণ ল্যান্ড ব্যাঙ্ক। সে কারণেই খোদ বিশ্বব্যাঙ্কের তালিকায় শিল্পবান্ধব রাজ্য হিসেবে বাংলা প্রথম সারিতে উঠে এসেছে। লগ্নির জন্য প্রশাসনিক গেরো কাটানোর লক্ষ্যে দেশের সেরা দশের মধ্যে আছে এই রাজ্য, ইতিমধ্যেই তা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এরপর প্রস্তাবিত বিনিয়োগের বাস্তবায়ন কতটা হয়, এখন সেটাই দেখার।
কারণ, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষির সঙ্গেই শিল্পে জোর দেওয়ায় বণিকমহলের খুশির বার্তা বয়ে গিয়েছে। ভিন রাজ্যের অনেক শিল্পপতিই এখন পশ্চিমবঙ্গের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। কারণ পশ্চিমবঙ্গ হল উত্তর-পূর্ব ভারতের সিংহদুয়ার। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব ভারত অনাঘ্রাতা বাজার হয়ে পড়েছিল। গুজরাত-মহারাষ্ট্র বা কর্ণাটক থেকে শিল্পদ্রব্য নিয়ে সেখানে বিক্রি করতে অনেক মাশুল গুনতে হচ্ছিল। কিন্তু, সেই উৎপাদন এরাজ্যে করা গেলে উৎপাদন মূল্য অনেক কমে যাবে। আর সে কারণেই এরাজ্যে শিল্প গড়ার ক্ষেত্রে অনেকেই বহুদিন ধরে উৎসাহী ছিলেন। এবার তাঁদের সামনে সেই খিল তুলে দিয়ে দরজা উন্মুক্ত করে দিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। অবশ্যই তাঁর এই উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে।