পারিবারিক ঝামেলার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি। প্রেম-প্রণয়ে শুভ। অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষে মানসিক চাপ বৃদ্ধি। প্রতিকার: আজ দই খেয়ে ... বিশদ
ফলে, নতুন প্রজন্ম লেখাপড়া শিখে কৃষির বাইরে অন্য পেশায় অথবা চাকরিবাকরির দিকেই ঝুঁকছে। এই নতুন ধরনের কর্মসংস্থানের জন্য নতুন নতুন শিল্প গড়া জরুরি হয়ে পড়েছে। আধুনিক শিল্পের প্রয়োজন বাংলার কৃষির স্বার্থেও। কৃষিতে অনেকখানি উন্নতি হলেও বিকাশের সম্ভাবনা এখনও বিপুল। কিন্তু, কৃষির সেই বিকাশের জন্য শিল্পের ‘সাপোর্ট’ খুবই জরুরি। যেমন আলু, টমেটো, নানাবিধ সব্জি, আম, লিচু, পেয়ারা, তরমুজ, আনারস প্রভৃতি উৎপাদনের জন্য কৃষকের যে দাম প্রাপ্য এখানে তার সামান্য শতাংশও পাওয়া যায় না। একইভাবে ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত দুধ, ডিম, মাংস, মাছ প্রভৃতি উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাও। যদি রাজ্যে এইসব কৃষিজপণ্যনির্ভর আধুনিক শিল্পে জোয়ার আনা যেত তবে কৃষকের হাসি চওড়া হতো নিঃসন্দেহে। কৃষি এবং কৃষিনির্ভর শিল্পবিকাশের আশীর্বাদ হিসেবে পরবর্তী ধাপে বাংলায় আসার কথা বাকি সমস্ত ধরনের আধুনিক শিল্প। শিল্পের সমস্ত পরিবেশ বাংলায় বিদ্যমান। তার সঙ্গে বাড়তি পাওনা সুশিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদ। এই সত্য দেরিতে হলেও বুঝেছিলেন সিপিএমের বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তিনি স্লোগান তুলেছিলেন—‘কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ’। কিন্তু, জঙ্গি শ্রমিক আন্দোলনের মদতদাতাদের বিশ্বাস করতে পারেননি লগ্নিকারীরা।
কথায় কথায় বন্ধ হরতাল ধর্মঘটে দাঁড়ি টেনে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তার ফলে, এই জমানায় আর কর্মদিবস শ্রমদিবস বিশেষ নষ্ট হয় না। এই সরকারের উন্নয়ন প্রচেষ্টা অক্লান্ত ও আন্তরিক। এই মজবুত সরকার আইনশৃঙ্খলারক্ষার প্রশ্নেও আপসহীন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলার রাজনৈতিক ভিত্তিও ক্রমশ দোর্দণ্ড হচ্ছে। বাংলার ক্ষেত্রে এই ঘুরে দাঁড়ানো অভূতপূর্ব ব্যাপার। এই অসম্ভবকে সম্ভব করেই দেশ-বিদেশের শিল্পমহলের বিশেষ আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে আমাদের পশ্চিমবঙ্গ। বৃহস্পতিবার কলকাতায় শুরু হল বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। নিখুঁত আয়োজনে আর উদ্দীপনায় চমৎকৃত হলেন ৩৬টি দেশ থেকে আসা অতিথিরা এবং মুকেশ আম্বানি, সঞ্জীব পুরী, সজ্জন জিন্দাল, রাজেন ভারতী মিত্তাল, নিরঞ্জন হিরানন্দানি, সঞ্জীব গোয়েঙ্কাদের মতো দেশীয় শীর্ষ শিল্পপতিরা। লগ্নি আকর্ষণের বার্তা কতখানি সফলভাবে দিতে পেরেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তা টের পাওয়া গেল প্রথম দিনেই ৪০ হাজার কোটি টাকার লগ্নিপ্রস্তাব গ্রহণের মধ্য দিয়ে। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে তথা চূড়ান্ত পর্বে সেই প্রস্তাব ২ লক্ষ ৮৪ হাজার ২৮৮ কোটি টাকার শীর্ষ স্পর্শ করেছে! এই সম্মেলনে মোট ৮৬টি ‘মউ’ স্বাক্ষর হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর আশা, এই বিপুল বিনিয়োগের আশীর্বাদে বাংলায় আগামী দিনে আট-দশ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতে চলেছে। সরকারকে এই লক্ষ্যে আরও আন্তরিকতার সঙ্গে পদক্ষেপ করতে হবে, যাতে প্রতিটি প্রস্তাব চূড়ান্ত বিনিয়োগে রূপান্তরিত হতে পারে। জলেই জল বাধে। অতএব এই সাফল্যের সূত্রে আমরা আশা করব, বাংলাই হয়ে উঠতে চলেছে আগামী দিনের সেরা বিনিয়োগ গন্তব্য। শিল্পসমৃদ্ধ বাংলা হয়ে ওঠাই এখন সময়ের অপেক্ষা।