পারিবারিক ঝামেলার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি। প্রেম-প্রণয়ে শুভ। অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষে মানসিক চাপ বৃদ্ধি। প্রতিকার: আজ দই খেয়ে ... বিশদ
আর তিন দশক পর আরও একবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির কাঠগড়ায়। আর এবারও হিন্দু সংবাদপত্র। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একটি নোট ফাঁস করে দিয়েছে তারা। রাফাল সংক্রান্ত এই নোটে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সাফ জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা সংক্রান্ত বিষয়ে ‘সমান্তরাল সমঝোতা’ চালিয়ে যাচ্ছে। যা কখনওই মেনে নেওয়া যায় না। এর ফলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকও এই আলোচনায় যুক্ত প্রতিনিধিদের সঙ্গে ফরাসি সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থার মধ্যে কথাবার্তায় প্রভাব ফেলছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পরামর্শ, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর যেন রাফাল যুদ্ধবিমান সংক্রান্ত এই আলোচনার মাঝে হস্তক্ষেপ না করে।
সর্বভারতীয় সংবাদপত্রে ফাঁস হয়ে যাওয়া প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এই নোট বিলক্ষণ বিপাকে ফেলেছে নরেন্দ্র মোদি সরকারকে। তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিক্কর সাফাই গেয়েছেন, ‘বাড়াবাড়ি রকমের প্রতিক্রিয়া’ দেখানো হচ্ছে। তোপ দেগেছেন অধুনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও। তা সত্ত্বেও কিন্তু সমালোচনার আগুনের আঁচ কমেনি। বিরোধীরা, বিশেষত কংগ্রেস ফের তেড়েফুঁড়ে নেমেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী রাজনীতির ময়দানে নেমে পড়া মাত্র এমনিতেই তাঁর স্বামী রবার্ট ওয়াধেরাকে জেরা শুরু করে দিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। দু’দিন ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তাঁকে। প্রিয়াঙ্কা নিজে তাঁর স্বামীকে ইডির দপ্তরে গিয়ে ছেড়ে এসেছেন। রাহুল গান্ধী বলছেন, রবার্ট ওয়াধেরার বিরুদ্ধে তদন্ত হোক। কিন্তু রাফাল ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী কেন তদন্তের বাইরে থাকবেন? যাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, সবাই তদন্তের আওতায় আসুন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকেও বাদ রাখা যাবে না।
সুপ্রিম কোর্টে রাফাল সংক্রান্ত হলফনামায় কেন্দ্রীয় সরকার যা জানিয়েছিল, তারপর তো রাহুল গান্ধীর এই দাবি আরও শক্তপোক্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ, মোদি সরকার শীর্ষ আদালতকে গত অক্টোবর মাসে জানিয়েছিল, বায়ুসেনা প্রধানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি দল রাফাল ডিল নিয়ে আলোচনা চালিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর যে সমান্তরাল সমঝোতা চালিয়েছে, তার কোনও উল্লেখ সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় সরকার করেনি। ওই নোটে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক প্রতিবাদ জানিয়েছে, পিএমও যে আলোচনা চালাচ্ছে, তার সঙ্গে আমাদের মন্ত্রকের অবস্থান মিলছে না। যা কাম্য নয়।
কেন্দ্রীয় সরকার কিন্তু এই নোটের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি। বরং পাল্টা সাফাই দেওয়ার চেষ্টা চলছে, ও এমন কিছু নয়! রাফাল যুদ্ধবিমানের দাম নিয়ে তো পিএমও কোনও আলোচনা করেনি! তাহলে এই বিষয়টা নিয়ে এত লাফালাফি করার কী আছে? হয়তো সত্যিই বাড়াবাড়ি করা হচ্ছে। কিন্তু কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল দেশের সর্বোচ্চ আদালতে এই গোটা বিষয়টা চেপে গেল কেন? বিরোধীদের প্রধান অভিযোগই তো ছিল, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর তথা নরেন্দ্র মোদির হস্তক্ষেপ নিয়ে। বায়ুসেনা প্রধান বা তাঁর নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের কমিটি কী করল, তা নিয়ে খুব একটা মাথাব্যথা বিরোধীদের নেই। রাহুল গান্ধী তথা কংগ্রেস বারংবার বলে এসেছে, রাফাল ডিল থেকে টাকা নয়ছয় হয়েছে। অভিযোগ, কাটমানি খেয়েছেন স্বয়ং মোদি। ঠিক যে অভিযোগ উঠেছিল রাজীব গান্ধীর বিরুদ্ধে। আর আজ রাহুলের প্রধান স্লোগান, ‘চৌকিদার...’। সমবেতভাবে শেষটা করছে সভায় উপস্থিত জনতা, ‘.... চোর হ্যায়’।