পারিবারিক ঝামেলার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি। প্রেম-প্রণয়ে শুভ। অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষে মানসিক চাপ বৃদ্ধি। প্রতিকার: আজ দই খেয়ে ... বিশদ
শুরুটা অবশ্য মোদি করেছিলেন উচ্চবর্ণের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের ঘোষণার মাধ্যমে। সাধু সিদ্ধান্ত। জেনারেল ক্যাটিগরির মানুষ প্রথমে ভেবেছিলেন, এই তো বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার আমাদের জন্য কিছু ভাবল। এতদিন তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর জাতির জন্যই সংরক্ষণের ভাবনা ছিল। কিন্তু সমস্যাটা হল, মোদি সরকার এই সংরক্ষণের জন্য যে মাপকাঠি ঠিক করেছে, তাতে দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ আওতায় এসে যাচ্ছে। তাহলে এমন সংরক্ষণের মানেটা কী? প্রতিযোগিতা যেমন ছিল, তেমনই তো থাকল! এ তো প্রায় হয়ে গেল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেই সংরক্ষণের সিদ্ধান্তের মতো। সরকারি চাকরিতে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ। তবে ৫ শতাংশ ধনী মানুষ এর মধ্যে পড়বেন না। পাশাপাশি অ্যাফ্রো-আমেরিকানরাও আবেদন করতে পারবেন না।
এই সরকারের কর্তাব্যক্তিরা সবাই জানেন, দেশে কর্মসংস্থানের হাল কতটা খারাপ। সরকারি চাকরি বলতে সম্প্রতি রেলের বেশ কিছু নিয়োগ। এছাড়া সেই অর্থে না হয়েছে নতুন কোনও উল্লেখযোগ্য শিল্প, না কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক কিছু সুরাহা। তাহলে কর্মসংস্থানটা হবে কীভাবে? নরেন্দ্র মোদি তাঁর জমানার প্রথম দিকে যে ১০০ দিনের কাজের নামে ভুরু কুঁচকাতেন, আজ অন্তর্বর্তী বাজেটে সেই খাতেই বরাদ্দ বাড়িয়ে ৬০ হাজার কোটি টাকা করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মসংস্থানের উদ্যোগকে বিজেপি চপ-মুড়ির শিল্প বলে কটাক্ষ করত। অথচ তাদের মুখেও পরে কিন্তু একই সুর শোনা গিয়েছে। আজ স্বরোজগার যোজনা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার যে এত হাঁকডাক করছে, তার কারণও কিন্তু সেটাই। চাকরির দিশা নেই। প্রথমে নোট বাতিল এবং তারপর জিএসটির জন্য একটা সময় দেশের নিম্ন এবং নিম্ন-মধ্যবিত্তের একটা অংশ মারাত্মক দোলাচলে পড়ে গিয়েছিল। চাকরি হারিয়েছিল অনেকে। ছোট ব্যবসায়ীরা হঠাৎ জলে পড়েছিলেন। সেই পরিস্থিতি থেকে দেশের মানুষ আজ অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে কর্মসংস্থানের সমস্যা সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছে।
ন্যাশনাল স্যাম্পল সার্ভের রিপোর্ট তৈরিতে অবশ্য একটা সমস্যা হওয়া খুব অস্বাভাবিক নয়। কারণ, ভারতে সঠিকভাবে বেকারত্বের হিসেব করা একটু কঠিনই। এখানে সাধারণ চাকরিজীবীর সংখ্যাই বরং জনসংখ্যার তুলনায় নগণ্য। অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করেন বহু মানুষ। এমন অনেকেই আছেন, চাষের ভরা মরশুমে যাঁরা কৃষিকাজে হাত লাগান। আবার অন্য সময়ে দিনমজুরের কাজ করেন। এমন শ্রেণীর একটা বড় অংশকে কোনও হিসেবের মধ্যে আনা মুশকিল। কাজেই পরিসংখ্যানে একটা ফাঁক থেকেই যায়। তবে তার মানে বেকার নেই, এমনটাও নয়। কর্মসংস্থানের অভাবের বিষয়টা অল্পবিস্তর সব রাজ্যকেই সমস্যায় ফেলেছে। আর গাফিলতি কিছু আছে বলেই হয়তো তথ্য প্রকাশে এত দেরি! এবং একইসঙ্গে ধরে নেওয়া যায় কোনও গোপন কারণের জন্যই এনএসএসও’র দুই সদস্যের আচমকা পদত্যাগ!
সন্দেহ নেই, ‘রিবেটে’র নামে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়করে ছাড় দিয়ে বড় দাঁও মারার চেষ্টা করেছেন মোদি। কিন্তু যাঁর করযোগ্য আয় ৫ লক্ষ ১ টাকা, তাঁর ক্ষেত্রে তো আর রিবেট কার্যকর নয়! এই ফাঁকটাও কিন্তু রয়েই গিয়েছে। এটা বুঝতে পারা মাত্রই এক শ্রেণীর ভারতীয় নাগরিক এই সিদ্ধান্তে ভোটের গন্ধ খুঁজে সমালোচনা করতে শুরু করেছে। পীযূষ গোয়েল যতই স্লোগান তুলুন না কেন, ‘হাউ ইজ দ্য জোশ’? উত্তর কিন্তু সমস্বরে ‘হাই স্যার’ আসছে না। জনমোহিনী বাজেটের পরও কাঁটা সেই কর্মসংস্থান।