মেয়াদি সঞ্চয় থেকে অর্থাগম যোগ আছে। সন্তানের আবদার মেটাতে অর্থ ব্যয়। ধর্মকর্মে মন আকৃষ্ট হবে। ... বিশদ
বাবা অতুলপ্রসাদ মল্লিক ঝাড়গ্রাম পুরসভার সাফাইকর্মী। মা রাধা মল্লিকও একই কাজ করেন। অভাবের সঙ্গে বড্ড কঠিন সংগ্রাম। সন্তানের মুখে একমুঠো ভাত তুলে দিতে হিমশিম খেতে হতো দম্পতিকে। ওভার টাইম করেও মিটত না অভাব। বাজারে চলে যেতেন দু’জনে। সেখানে দিন মজুরের কাজ করতেন। শুরুর দিকে মল্লিক পরিবার থাকতেন ঝাড়গ্রাম স্টেশন সংলগ্ন ঝুপড়িতে। এক সময় বন্যায় ঘর-বাড়ি ভেসে যায়। পরবর্তী সময়ে সমূলে তাঁদের উচ্ছেদ করে রেল। ঘোর সঙ্কটে পড়েন অতুলপ্রসাদ। কিন্তু ছেলের পড়াশোনায় সেই সঙ্কটের ছায়া পড়তে দেননি কখনই। পান্তা ভাত বা মুড়ি খাইয়ে ছেলেকে স্কুলে পাঠালেও আদর-যত্নের কোনও খামতি রাখেননি মল্লিক দম্পতি।
রাধাদেবী বর্তমানে ঝাড়গ্রাম পুরসভা এলাকায় বাড়ি বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহের কাজ করেন। সকাল হলেই গলায় বাঁশি ঝুলিয়ে বেরিয়ে পড়েন। বিভিন্ন আবাসন ও বহুতল থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করেন তিনি। রাধাদেবীর ব্যবহারে খুশি ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারাও। অতুলপ্রসাদ বাবুও পুরসভায় সাফাইয়ের কাজ করেন। বৃহস্পতিবার সকালে কাজ করার ফাঁকে ভাবী জেনারেল মেডিসিনের চিকিৎসকের মা রাধাদেবী বলছিলেন, ‘খুব কষ্ট করে ছেলেকে মানুষ করেছি। এক সময় খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয়েছে। ঝুপড়িতে থাকার সময় মোমবাতি জ্বালিয়ে পড়াশোনা করত ছেলে। সেই ছেলে এখন আমাদের ভরসা দিচ্ছে, কষ্টের দিন শেষ। মা হিসেবে আমি গর্বিত।’ ছেলে স্কুলে পড়াকালীন সংসারে আর্থিক অনটন চরমে পৌঁছয়। অতুলপ্রসাদ তখন ভাড়ার গাড়ি চালাতেন। ২০১৬ সাল নাগাদ তাঁদের সন্তান মেডিক্যাল পরীক্ষায় সুযোগ পেয়ে যান। পড়ানোর খরচ জোগানো নিয়ে বেশ চিন্তায় পড়েন। কিন্তু হার মানেননি। আরও বেশি কাজ, আরও কিছু বেশি উপার্জনে ঝাঁপিয়ে পড়েন দু’জনেই। অতুলপ্রসাদ বলছিলেন, কম বয়স থেকেই ভালো পড়াশোনা করত। ওর ইচ্ছে ছিল চিকিৎসক হওয়ার। আজ ওর স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।’