হঠাৎ নেওয়া সিদ্ধান্তে বিপদে পড়তে পারেন। চলচিত্র ও যাত্রা শিল্পী, পরিচালকদের শুভ দিন। ধনাগম হবে। ... বিশদ
নীল চাষ, নীল বিদ্রোহ এই শব্দগুলি আমাদের পরিচিত। পরাধীন ভারতে ব্রিটিশরা জোর করে চাষিদের দিয়ে নীল চাষ করাত। হুকুম না মানলে চলত নির্মম অত্যাচার। সেই সময়ের ইতিহাস বহন করে বিভিন্ন জায়গায় আজও রয়ে গিয়েছে নীলকুঠি। তেমনই এক নীলকুঠি রয়েছে বীরভূমের লাভপুর থানার গুনুটিয়া এলাকায়। আগাছা ও জঙ্গলে ঘেরা ময়ূরাক্ষী নদীর তীরে রয়েছে সেই কুঠি। ইতিহাসের পাতা থেকে জানা গিয়েছে, আজ থেকে প্রায় ৩০০ বছর আগে জলপথে যাতায়াতের সুবিধার জন্য বীরভূমের এই গুনুটিয়া এলাকায় লাক্ষা, তুঁত, রেশম, নীল চাষ হতো। ১৭৭৫ সালে ব্রিটিশ বণিক এডওয়ার্ড হে লাভপুরে ময়ূরাক্ষী নদীর তীরে এই কুঠি তৈরি করেন। পরবর্তীতে হাতবদল হতে হতে ১৮০৮ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার এই কুঠি কিনে নেয়। আর সেই কুঠির দায়িত্ব দেয়া হয় জন চিপের হাতে। তারপর থেকেই এই কুঠিবাড়ির গুরুত্ব বাড়তে থাকে। জন চিপের হাত ধরেই গুনুটিয়া কুঠিবাড়ির ব্যবসায়িক প্রসার বাড়তে থাকে। ময়ূরাক্ষী নদীর পাড় বরাবর বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে শুরু হয় নীল চাষ। তারপর থেকেই গুনুটিয়ার এই কুঠি নীলকুঠি নামে পরিচিত হয়। কয়েক শতাব্দীর ইতিহাসের সাক্ষী এই নীলকুঠি বর্তমানে ভগ্নপ্রায় অবস্থায়। মূল কুঠিবাড়ি সহ একাধিক গোলাবাড়ি, জন চিপের সমাধি, নজরদারির জন্য বড় বড় মিনার সবকিছুই জরাজীর্ণ। গুনুটিয়ার ঘন জঙ্গলের মধ্যেই নীল চাষের ইতিহাস চাপা পড়ে রয়েছে। তাই স্থানীয় বাসিন্দা ও ইতিহাসবিদদের দাবি, সরকার তথা প্রশাসন কুঠিটি সংস্কারের মধ্যে দিয়ে ইতিহাসকে বাঁচিয়ে তুলুক। প্রায় তিনশো বছরের পুরনো এই নীলকুঠি সংস্কার করা হলে তা আগামীতে জেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে উঠে আসবে।
ইতিহাসবিদতথা অধ্যাপক রামানুজ মুখোপাধ্যায় বলেন, বীরভূমে নীল ও রেশম চাষের প্রসার ঘটেছিল জন চিপের হাত ধরেই। তার জন্যই গুনুটিয়ার নীলকুঠি সমৃদ্ধ হয়। এগুলি সংস্কার করা হলে পর্যটনের অন্যতম জায়গা হতে পারে।গুনুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা অভয় পাল, ধীরেন মণ্ডল বলেন, ছোট থেকে এই কুঠিবাড়ি দেখে আসছি। ধীরে ধীরে তা ভেঙে যাচ্ছে ও জঙ্গলে ঢাকা পড়ছে। ইতিহাস বাঁচাতে সরকার পদক্ষেপ নিলে ভালো হয়।