কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
পুলিস কমিশনার দেবেন্দ্র প্রকাশ সিং বলেন, আমরা মামলা রুজু করে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি তদন্ত করছি। এখনও পর্যন্ত তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল দক্ষিণ থানার মেনধোমা কোলিয়ারির আবাসনের বাসিন্দা ইসিএলের কর্মী বলকার সিংয়ের মেয়ে অমরপ্রীত কাউর(১৭) শনিবার থেকে নিখোঁজ ছিল। থাইরয়েডে আক্রান্ত দশম শ্রেণীর ওই ছাত্রী মানসিকভাবে সম্পূর্ণ পরিণত ছিল না বলে পরিবারের দাবি। ওইদিন সন্ধ্যায় অমরপ্রীত বাড়ি না ফেরায় দক্ষিণ পুলিস পোস্টে অভিযোগ করলেও পুলিস খুব বেশি সক্রিয়তা দেখায়নি বলে পরিবারের লোকজনের অভিযোগ। এরপরে ১২ আগস্ট দুপুরে নিখোঁজ মেয়ের ফোন থেকেই মিসড কল আসে তার বাবার নম্বরে। তারপরেই মেসেজ আসে, ১৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে। পুলিসকে জানালে খুন করা হবে। তৎক্ষণাৎ তাঁরা পুলিসকে বিষয়টি জানান। অপহরণের অভিযোগ পেয়ে পুলিসও নড়েচড়ে বসে। কয়েকজনকে ধরপাকড় করে মারধারও করে। কিন্তু গভীর রাতে পুলিসর কাছে খবর আসে, আপকার গার্ডেনে একটি দেহ পড়ে রয়েছে।
পুলিস উদ্ধার করে দেহ হাসপাতালে নিয়ে আসে। খবর দেওয়া হয় পরিবারের লোকজনদের। এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। হাসপাতালে দেহ আটকে রাখেন তাঁরা। এমনকী, দেহ ময়নাতদন্ত করতে নিয়ে যেতে বাধা দেওয়া হয়। পুলিস কেন প্রথম থেকে সক্রিয় হয়নি তা নিয়ে সরব হন তাঁরা। দোষীদের আগে গ্রেপ্তার করতে হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে একাধিক থানার ওসি সহ এসিপি স্বপন দত্ত হাসপাতালে আসেন। দেহ ময়নাতদন্ত পাঠালেও যতক্ষণ না ঘটনার কিনারা হচ্ছে তাঁরা দেহ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃতার মা সুখবন্ত কউর। পরে হাসপাতালে এডিসিপি সায়ক দাস এসে আত্মীয়দের সঙ্গে বৈঠকে করে দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে দেহ নেয় পরিবার। মৃতার বাবা বলেন, আমার মেয়ের খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্বাসরোধ করে, বাঁ হাতের শিরা কেটে খুন করা হয়েছে। কিন্তু, কেন খুন হল তা এখনও পুলিসের কাছে পরিষ্কার নয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, ওইদিন দুপুরে কিশোরী জিমে যাওয়ার সময় রাস্তায় একটি ছেলের সঙ্গে দেখা করে। মৃতার পরিবারের দাবি, ছেলেটি জানিয়েছে, তার সঙ্গে দেখা করার পর অমরপ্রীত তাকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে। সে ঘুরতে যায়নি। কিন্তু মেয়ের কাছ থেকে কুড়ি টাকা ধার নিয়েছিল। পুলিস তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
তবে, শুধু এই সূত্রই নয়, সব সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে পুলিস এই ঘটনার কিনারা করতে সব রকমভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে। কারণ শহরের মধ্যে এভাবে দেহ ফেলে রেখে কার্যত শহরের নিরাপত্তাকে প্রশ্নচিহ্নের মধ্যে ফেলেছে দুষ্কৃতীরা। তানিয়ে শহরজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এদিন সকালে উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। হ্যালোজেন ও পথবাতির আলোয় পরিপূর্ণ ওই এলাকায় কেন দেহ ফেলা হল তা ভাবাচ্ছে পুলিসকে। কারণ ওই এলাকা থেকে কয়েকশো মিটার দূরেই ঘন ঝোপ ও রেললাইন রয়েছে। সেখানে দেহ ফললে দুষ্কৃতীদের ঝুঁকি অনেক কম ছিল। পুলিস কুকুর এনে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। গোয়েন্দা অফিসাররাও তদন্ত শুরু করেছে। এখন দেখার, কত দ্রুত এই খুনের কিনারা করতে পারে পুলিস। এই ঘটনার জেরে এলাকার মানুষও আতঙ্কিত।