রাষ্ট্রসঙ্ঘ ও ইসলামাবাদ, ১৩ আগস্ট: ‘আপনি একজন চোর এবং পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করার যোগ্য নন।’ রাষ্ট্রসঙ্ঘে দেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মালিহা লোধির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনলেন এক পাকিস্তানি নাগরিক। মঙ্গলবার এমনই ঘটনা ঘটল রাষ্ট্রসঙ্ঘের এক অনুষ্ঠানে। ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলছিলেন মালিহা। সেই সময় জোর গলাতেই তাঁর উদ্দেশে কিছু প্রশ্ন করেন ওই পাক নাগরিক। তাঁর প্রশ্ন শুরুতে এড়িয়ে যান রাষ্ট্রসঙ্ঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি। তখনই মেজাজ হারিয়ে প্রশ্নকর্তা বলতে থাকেন, ‘গত ১৫-২০ বছর ধরে আপনি কী করেছেন? আপনি আমাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন না।’ মালিহা তাঁকে শান্ত হতে বললেও তাতে কান দেননি প্রশ্নকর্তা। পাল্টা তাঁর প্রশ্নের জবাব দেবেন না বলে অনুষ্ঠান ছেড়ে বেরিয়ে যেতে উদ্যত হন পাক প্রতিনিধি। তখনই প্রকাশ্যে তাঁকে চোর বলে হেনস্তা করেন ওই ব্যক্তি। তিনি চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘আপনারা আমাদের টাকা চুরি করছেন, আপনারা চোর এবং পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করার যোগ্য নন।’ এমনকী মালিহার পিছু নিতেও চেষ্টা করেন তিনি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাকিরা তাঁকে আটকে দেন। পাক প্রতিনিধি অনুষ্ঠান ছেড়ে যাওয়ার সময়ও তিনি চেঁচিয়ে বলেন, ‘আপনারা এত বছর ধরে আমাদের টাকা খেয়ে চলেছেন। লজ্জা হওয়া উচিত।’ ভিডিওটি ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়ার পর মালিহাকে অপদস্থ করার সুযোগ ছাড়েননি নেটিজেনরা। পাশাপাশি, ওই প্রশ্নকর্তার প্রশংসাতেও পঞ্চমুখ পাকিস্তানি নেটদুনিয়া।
অন্যদিকে, কাশ্মীর ইস্যুতে আন্তর্জাতিক স্তরে সমর্থন জোগাড় করাটা যে সহজ নয়, তা মেনে নিয়েছে পাকিস্তান। এই নিয়ে পাক নাগরিকদের মুর্খের স্বর্গে বাস করতে নিষেধ করেছেন পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। সোমবার পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মুজফ্ফরাবাদে তিনি বলেন, রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের সমর্থন পেতে পাকিস্তানিদের নতুন সংগ্রামে নামতে হবে। তাঁর কথায়, ‘আপনারা মুর্খের স্বর্গে বাস করবেন না। কেউ ওখানে (রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে) হাতে ফুলের মালা নিয়ে দাঁড়িয়ে নেই। কেউ আপনাদের অপেক্ষায় নেই।’ শুধু রাষ্ট্রসঙ্ঘই নয়, কাশ্মীর ইস্যুতে মুসলিম বিশ্বের দেশগুলিকেও পাশে পায়নি পাকিস্তান। এর কারণ হিসেবে ভারতের মতো বাজার দখলের চেষ্টাকেই দায়ী করেছেন পাক বিদেশমন্ত্রী। তাঁর মতে, বিশ্বের বিভিন্ন মানুষের নিজস্ব স্বার্থ রয়েছে। ভারতে ১০০ কোটিরও বেশি মানুষের বাজার। বহু মানুষ সেখানে বিনিয়োগ করেছেন। তাই পাকিস্তানকে নিজেদের মতো করেই এই ইস্যুতে প্রতিবাদ করতে হবে। উল্লেখ্য, চিরদিনের বন্ধু বলে পরিচিত চীনকেও কাশ্মীর ইস্যুতে পাশে পায়নি পাকিস্তান।