কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। উপার্জন ভাগ্য ভালো। কর্মে উন্নতির যোগ আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা মিলবে। ব্যবসা ... বিশদ
ঠিক কী নিয়ে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে হইচই পড়েছে? আসলে ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের সময় কোল্লাম আসনটি নিয়ে সিপিএমের সঙ্গে কামড়াকামড়ির জেরে আরএসপি শিবির বদলে সরাসরি কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ-এর শরিক হয়। কেরল আরএসপি’র এক নম্বর নেতা প্রেমচন্দ্রন ইউডিএফ প্রার্থী হিসেবে কোল্লম কেন্দ্রের টিকিট পাওয়ার সবুজ সঙ্কেত আদায় করেই শিবির বদলের সিদ্ধান্ত নেন। সেই সময় তাঁর বিরুদ্ধে সিপিএম প্রার্থী করে দলের অন্যতম হেভিওয়েট নেতা তথা পলিটব্যুরো সদস্য এমএ বেবিকে। বেবিকে জেতাতে দলের রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতারা অনেকেই প্রায় ক্যাম্প করে ছিলেন কোল্লামে। কিন্তু শেষ হাসি হাসেন প্রেমচন্দ্রনই। সেই ভোটের প্রচারে গিয়ে ক্ষুব্ধ বিজয়ন বলেছিলেন, একটা আসনের জন্য নীতি-আদর্শ জলাঞ্জলি দিয়ে যিনি বামমোর্চা ত্যাগ করতে পারেন তিনি একজন নোংরা মানুষ ছাড়া আর কিছু নন। সেবারেই এনিয়ে এক দফা বিতর্ক হয়। এমনকী, প্রেমচন্দ্রন জিতে যাওয়ার পিছনে পিনারাইয়ের এহেন মন্তব্যের প্রভাব কাজ করেছে বলেও চর্চা হয় তখন।
এবারও প্রেমচন্দ্রন ভোটের ময়দানে হাজির হয়েছেন প্রার্থী হিসেবে। তবে এবার তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী আর বেবি নন। সিপিএম দাঁড় করিয়েছে দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা রাজ্যসভার প্রাক্তন সদস্য কেএন বালাগোপালকে। বৃহস্পতিবার বালাগোপালের হয়ে কোল্লামে প্রচারে এসেছিলেন বিজয়ন। জনসভা ছাড়াও কোল্লাম প্রেস ক্লাব আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি। দুই জায়গাতেই তিনি প্রেমচন্দ্রনপ্রসঙ্গে বলেন, গত লোকসভা ভোটের সময় প্রেমচন্দ্রন সম্পর্কে যে কথা বলেছিলাম এখনও আমি সেই অবস্থানেই রয়েছি। একটা আসনের জন্য উনি যে কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন গতবার তার জন্য ওঁর এটাই প্রাপ্য। কে বলতে পারে যে, যেভাবে উনি বামমোর্চা ছেড়েছিলেন ঠিক সেইভাবেই কখনও ইউডিএফ’কেও বিদায় জানাবেন না? আসলে রাজনীতিতে ন্যূনতম সততা ও বিশ্বাসযোগ্যতা মানুষ আশা করে সব দল বা নেতার কাছ থেকে। আরএসপি বা প্রেমচন্দ্রনরা যা করেছে তাতে ওঁদের আর বিশ্বাস করা যায় না। আমি ওঁর সম্পর্কে গতবারে যা বলেছি এখনও সেই অবস্থান থেকে মোটেও সরে আসছি না। উল্লেখ্য, গতবার বিজয়ন মালয়লাম ভাষায় নির্বাচনী ভাষণ দেওয়ার সময় প্রেমচন্দ্রনকে ‘পারনারি’ বলে সম্বোধন করেছিলেন। পারনারি শব্দটির অর্থ হল, অত্যন্ত নোংরা লোক।
আরএসপি সহ গোটা ইউডিএফ শিবির এবারেও বিজয়নের এহেন বিতর্কিত বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। ইউডিএফ নেতৃত্ব বলছে, সাংসদ হিসেবে নজিরবিহীন সাফল্য দেখিয়েছেন প্রেমচন্দ্রন। আচার-আচরণ, সদনে পেশ করা বক্তব্য, প্রশ্ন, মুলতুবি প্রস্তাব বা বেসরকারি বিল পেশের মতো পারফর্মিং বিষয়গুলির নিরিখে তিনি শ্রেষ্ঠ সাংসদের শিরোপা পর্যন্ত পেয়েছেন একবার। এহেন মানুষকে ‘নোংরা লোক’ বলে ইঙ্গিত করা কুরুচির পরিচয়। শনিবার প্রেমচন্দ্রন বলেন, বিজয়ন গোটা রাজ্যবাসীর মুখ্যমন্ত্রী। আমারও মুখ্যমন্ত্রী তিনি। তাই তাঁকে কোনও পাল্টা আক্রমণ করতে চাই না। কোল্লাম তথা কেরলের মানুষ এর বিচার করবে ইভিএমের মধ্য দিয়ে। এর ফল ওঁরা টের পাবেন ২৩ মে। অন্যদিকে, বালাগোপাল বলেন, অনর্থক বিতর্ক তৈরি করছে বিরোধীরা এবং একশ্রেণির মিডিয়া। একজন দায়িত্ববান নেতা বা দলের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ঠিক কী হওয়া উচিত, সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মোটেই কোনও কুকথা বলেননি তিনি।