কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। উপার্জন ভাগ্য ভালো। কর্মে উন্নতির যোগ আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা মিলবে। ব্যবসা ... বিশদ
বাংলা সঙ্গীত জগতের আলোচিত নায়ক কবীর সুমন তাঁর ক্ষুরধার লেখনীর ভাঁজে ভাঁজে অনিকেত ও দেবের বিরুদ্ধে গুরুতর কয়েকটি অভিযোগ এনেছেন। সুমনের প্রথম অভিযোগ, ‘...আপনি এবং দেববাবু মিডিয়ার সামনে বলেছেন ‘কবীর সুমনকে হ্যান্ডেল করা কঠিন’। কেন বলেছেন তা আপনারাই জানেন। স্রেফ গায়ে পড়ে এই অপমান আপনারা আমায় করলেন।’ এই বিষয়ে ফোনে যোগাযোগ করা হলে অনিকেত বলেন, ‘হবুচন্দ্র রাজা..’র প্রযোজক দেবকে জানাই যে এই ছবিতে সুমন কাজ করলে খুব ভালো হয়। দেব আমায় তখন বলেছিল, এরকম একজন সেনসিটিভ মানুষকে তুমি হ্যান্ডেল করতে পারবে তো? এইরকম কথা তো আমরা বিখ্যাত মানুষদের নিয়ে বলেই থাকি। আমি যখন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে কাজ করেছিলাম, তখনও মনে হয়েছিল আমি হ্যান্ডেল করতে পারব তো! দেবকে বলি, না না আমার অভিজ্ঞতা একেবারেই আলাদা। দেবের অনুমতি নিয়ে আমি কবীর সুমনের সঙ্গে কথা বলতে যাই। শুরু হয় গান লেখা। গান গাওয়া প্রায় শেষ যখন, সেই সময় একটা সাংবাদিক সম্মেলন হয়। তারিখটা সম্ভবত ১৮ ফেব্রুয়ারি। সুমনের উপস্থিতিতে আমি মঞ্চে দাঁড়িয়ে দেবের সঙ্গে আমার এই কথপোকথনের কথা বলি। পরে সুমন মঞ্চে তাঁর বক্তব্য রাখেন। সেই সময় উনি অপমানিত হওয়ার কথা একবারও বলেননি। ব্যক্তিগত ভাবেও আমাকে কিছু জানাননি। এরপর ২৭ ফেব্রুয়ারি ‘শঙ্কর মুদি’র সাংবাদিক সম্মেলন ছিল। সেখানে সাংবাদিকদের তরফে আবার প্রশ্ন আসে, কবীর সুমনের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কীরকম? আমি একই উত্তর দিই। সেদিন রাতে বাড়ি আসার পর, আমাদের জনসংযোগ আধিকারিক আমায় ফোন করে জানান, কবীরদা ভয়ঙ্কর রেগে গিয়েছেন এবং অপমানিত বোধ করেছেন। আমি সেইদিনই রাত্রি বেলায় কবীর সুমনকে মেসেজ পাঠাই। আমি কোনও রকমের ভণিতা না করে, ওঁর কাছে ক্ষমা চাই। কারণ এই রকমের মানুষের কাছে ভুল বোঝার অবকাশ তৈরি হোক, এটাই আমি চাই না। ওঁকে অপমান করার কোনও অভিপ্রায় আমার নেই। তারপরের দিন উনি আমায় জানিয়ে দেন, উনি আমার সঙ্গে আর কোনও কাজ করবেন না। কোনও টাকাও নেবেন না এবং ‘শঙ্কর মুদি’র প্রিমিয়ারেও যাবেন না।’ এরপর তাঁদের মধ্যে আর কোনও যোগাযোগ হয়নি। অনিকেত ‘হবুচন্দ্র...’র শ্যুটিং থেকে ১৪ মার্চ গানের রেকর্ডিংয়ের ক্লিপিংস সুমনকে পাঠান এবং বলেন,‘দেখো তোমার গানের শ্যুটিং চলছে।’ সুমন উত্তর করেন, ‘তুমি আমার টাকা মিটিয়ে দাও।’ এমনটাই দাবি অনিকেতের। অনিকেত তখনই টাকা মেটানোর জন্য দেবের অফিসে বলেন। দেব ‘পাসওয়ার্ড’ ছবি নিয়ে তখন ব্যস্ত। অনিকেত বললেন, ‘১৫ তারিখ সন্ধেবেলা আমার স্ত্রী আমাকে কয়েকটা ক্লিপিংস পাঠিয়ে বললেন, দেখো সুমনদা শঙ্কর মুদির প্রশংসা করে বলেছেন, অনিকেত একটা দলিল তৈরি করেছেন। আমরা ফিরে এসে দেখলাম, সুমনদা একটা সাক্ষাত্কার দিয়েছেন। সেটা পড়ে বুঝলাম উনি সত্যিই খুব আহত হয়েছেন এবং অপমানিত বোধ করেছেন। আমরা দেখলাম এখনই ওঁকে গিয়ে কিছু বলা ঠিক হবে না। অফিসে বললাম এখনই কনট্র্যাক্ট বানাও। অফিস জানাল আগামী ৭-৮ এপ্রিলের মধ্যেই কনট্র্যাক্ট হয়ে যাবে। যেন টাকা নিয়ে কোনও সমস্যা না হয়। এর মাঝখানেই উনি আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা চিঠি লিখে বসলেন। আমাদের আর কিছু বলার নেই।’
সুমনের আরও অভিযোগ, ‘...আমি ভেবেছিলাম আপনারা অন্তত আমার বাড়িতে আসবেন, সামনাসামনি ক্ষমা চাইবেন। ক্ষমাও চাইতে হতো না। একবার এসে দাঁড়ালেই আমি আপনাদের হাত ধরে বসাতাম। আমার ডেরায় আপনি অনেক এসেছেন।’ অনিকেত বলছেন, ‘দেব সারাদিন শ্যুটিং করছেন। আমার সঙ্গে ছাড়া দেবের যাওয়ার তো প্রশ্ন ওঠে না। আমি তো অনেকদিন আগেই নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছি।’
সুমন সেই চিঠিতে বলছেন, ‘এক ব্যক্তি দেখলাম ইউটিউবে বলছেন আমাকে নাকি আপনারা হবুচন্দ্র ছবির জন্য একটা রোল ‘অফার’ করেছিলেন। আপনি নিজেই জানেন - আমার গাওয়া বাংলা খেয়ালগুলি আপনিই বলেছিলেন কেউ লিপ দিতে পারবে না। তাই আপনি আমায় পীড়াপীড়ি করেছিলেন হবুচন্দ্র ছবির কালে খানের চরিত্রটা করে দিতে। অর্থাৎ আমিই আমার গানে লিপ দেব। আপনি জোরাজুরি করায় আমি রাজি হয়ে গিয়েছিলাম। একটি ফুটো পয়সাও চাইনি।’ অনিকেতের জবাব, ‘আমি বললাম, এরকম একটা চরিত্র আছে যে ক্লাসিকাল গান করবে। আপনি যদি গলা দেন ভালো হয়। সব অভিনেতার পক্ষে সঠিকভাবে লিপ দেওয়া সম্ভব নয়, তাই তাঁকে বলা। উনি পারিশ্রমিকের কথা বলেননি। উনি চাইলে আমরা টাকা দিতে পারতাম আবার নাও দিতে পারতাম। সেটা কথা বলে ঠিক করা যেত। আমি তো মনে মনে ভেবে নিতে পারি না। আর ‘রোল অফার’-এর কথা আমরা বলিনি। এই অবস্থায় আমরা সবার আগে ওঁর টাকা মেটানোর প্রক্রিয়া শুরু করছি। তারপর কিছু দিন যাক আমরা গিয়ে কথা বলব।’ ইতিমধ্যেই সুমন দেব ও অনিকেতকে নিয়ে আরও একটি দীর্ঘ পোস্ট লিখেছেন ফেসবুকে। বোঝাই যাচ্ছে সমস্যা বাড়ছে। এখন জল আরও ঘোলা হওয়ার আগে দুই পক্ষের মধ্যে কোনও রফা হয় কিনা সেটাই দেখার।