কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। উপার্জন ভাগ্য ভালো। কর্মে উন্নতির যোগ আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা মিলবে। ব্যবসা ... বিশদ
সেদিন রাতে চারতলার খোলা জানালা থেকে পড়ে গিয়েছিলেন দিব্যা। কিন্তু কীভাবে? দিব্যার মৃত্যু আত্মহত্যা না হত্যা? আজ ২৬ বছর পরও সেই রহস্যের সমাধান হল না। অধরাই থেকে গেল ‘সাত সমুন্দর’ গার্লের মৃত্যুরহস্য। বয়স মাত্র ১৯। তার মধ্যেই ১৪টি হিন্দি ছবি। মাত্র দু’বছরের মধ্যে এতগুলি ছবি এখনও রেকর্ড। যা আজ পর্যন্ত কোনও নায়িকা ভাঙতে পারেননি। ১৬ বছর বয়সে অভিনয় জগতে প্রবেশ। প্রথম ছবি ১৯৯০ সালে তেলুগু ভাষায় ‘বাবলি রাজা’। ডি রামা নাইডু প্রযোজিত এই ছবি শুধু হিট নয়, তেলুগু সিনেমায় ইতিহাস তৈরি করে। এরপর একাধিক তামিল, তেলুগু ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে বলিউডে টিকিট পাকা করে ফেলেন। ১৯৯২ সালে অ্যাকশন থ্রিলার ‘বিশ্বাত্মা’র সূত্রে হিন্দি ছবির জগতে পা। এলেন, দেখলেন এবং জয় করলেন। এই প্রবাদটি দিব্যা ভারতীয় জন্য যথার্থ। ‘বিশ্বাত্মা’ বক্সঅফিসে অ্যাভারেজ হলেও হিন্দি সিনেমা মাথা ঝুঁকে স্বাগত জানাল তরুণী দিব্যাকে। পরপর ছবি। অল্প দিনের মধ্যেই ভারতজুড়ে খ্যাতি তাঁকে শীর্ষস্থানে পৌঁছে দিল। আর সেই খ্যাতি একইসঙ্গে নিয়ে গেল অন্ধকার জগতের দিকে।
১৯ বছর বয়সী দিব্যার মর্মান্তিক মৃত্যুর সঙ্গেও জড়াল সেই অন্ধকার জগতের নাম। দিব্যাকে কি খুন করা হয়েছিল? ৫ এপ্রিলের ঘটনার পর যা নিয়ে প্রবল চর্চা শুরু হয়। ঠিক কী হয়েছিল? কোনও তথ্যপ্রমাণ মেলেনি। দীর্ঘদিন তদন্ত করার পর ১৯৯৮ সালে দিব্যা ভারতীর মৃত্যুরহস্যের ফাইল অমীমাংসিতভাবেই বন্ধ করে মুম্বই পুলিস। পুলিসের প্রাথমিক ধারণা, অতিরিক্ত মদ্যপান থেকেই অসাবধানতা বশত পড়ে যান অভিনেত্রী। ঘনিষ্ঠমহল দাবি করে, আত্মহত্যা করেছিলেন দিব্যা। কিন্তু কেন? অনেকেই অভিযোগ করেন, দিব্যার স্বামী সাজিদ নাদিয়াদওয়ালাই হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিলেন। জানা যায়, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় দিব্যার পুরনো বন্ধু ডিজাইনার নীতা লুল্লা এবং তাঁর স্বামী তুলসী অ্যাপার্টমেন্টে অতিথি হিসেবে ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে নতুন আর একটি ফ্ল্যাট কেনার ব্যাপারে দীর্ঘ আলোচনা করেছিলেন দিব্যা। নীতা জানিয়েছেন, দিব্যা সেদিন খুব খুশি ছিল। মুম্বই শহরে আরও একটি বড় ফ্ল্যাট কিনতে পেরে রীতিমতো গর্বিত ছিল। হাসিখুশি দিব্যা কেন রাতে আত্মহত্যা করবে? জানা নেই নীতার।
পরদিন সকালে দিব্যার মৃত্যুর খবরে বলিউডে অন্ধকার নেমে আসে। মৃত্যুর কয়েকদিন আগে ২৬ মার্চ মুক্তি পায় সানি দেওল, সঞ্জয় দত্ত এবং দিব্যা অভিনীত ‘ক্ষত্রিয়’। ছবির সাফল্য আর দেখে যাওয়া হয়নি তাঁর। দিব্যার অকাল মৃত্যুতে বলিউডের কমপক্ষে ২ কোটি টাকার লোকসান হয়। ‘লাডলা’ ছবির শ্যুটিং প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছিল। পরে শ্রীদেবী তাঁর ভূমিকায় অভিনয় করেন। পাশাপাশি, মোহরা, কর্তব্য, বিজয়পথ এবং আন্দোলন-এর মতো ছবির শ্যুটিং শুরু করে দিয়েছিলেন। সবগুলিতেই অন্য নায়িকাকে নিয়ে ছবির কাজ শেষ করা হয়। দিব্যার মৃত্যুর পর তাঁর অভিনীত ‘রং’ এবং ‘শতরঞ্জ’ মুক্তি পেয়েছিল। ফিল্মি কেরিয়ার মাত্র দু’বছরের হলেও বলিউড তাঁর তরুণী নায়িকাকে ভোলেনি। মৃত্যুর এত বছর পরও বলিউডের মনে আজও রঙিন দিব্যা ভারতী।
শাম্ব মণ্ডল