কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। উপার্জন ভাগ্য ভালো। কর্মে উন্নতির যোগ আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা মিলবে। ব্যবসা ... বিশদ
বাঙালির নস্ট্যালজিয়ার অন্য নাম সৌমিত্র-অপর্ণা। আর এক নস্ট্যালজিয়া হল, যৌথ পরিবার। যা এখন এক সাদা-কালো অ্যালব্যামের ধূসর পাতায় বসে থাকে। ‘বসু পরিবার’ আদতে একটি বাড়ির গল্প। যেরকম বাড়ি এখন অতীতের পাতায় হারিয়ে গিয়েছে। সেই বাড়িতে বহুকাল বাদে পা রেখেছেন এক রূপকথার নায়ক। আর এক নায়িকা। সময় যাঁদের ছুঁতে ভয় পায়। তবু তাঁরা জীবনের অন্তের দিকে পা বাড়িয়ে দেন কালের নিয়মে। তবে যে কোনও রূপকথার মতোই এখানেও আছে অভিশাপের আনাগোনা– মৃত্যু। সে এক এমনই মৃত্যু যার জের টেনে নিয়ে যেতে হয় টুবলু (শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়)-কে। লিলি চক্রবর্তী, টুবলুর মায়ের ভূমিকায়। যিনি সর্ব অর্থে অসহায় এখানে। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, অসুখী দাম্পত্যে জেরবার। বহুকাল বাদে দেশের বাড়ি এসেছেন, মা-বাবার বিবাহ-বার্ষিকী পালন করতে। একই ব্যাপার যিশু এবং শ্রীনন্দা শঙ্করেরও। তাঁদেরও দাম্পত্যে কালো মেঘ জমে আছে সন্তানের ইস্যুতে। চমকে যেতে হয়, কৌশিক সেন এবং সুদীপ্তা চক্রবর্তীর চরিত্র নির্মাণ এবং অভিনয়ে। অবশ্য অভিনয় নিয়ে কোনও নেতিবাচক মন্তব্য করার জায়গা রাখেননি কোনও অভিনেতাই। প্রত্যেকেই অসাধারণ কাজ করেছেন। শুভাশিস মুখোপাধ্যায়, অরুণ গুহঠাকুরতা, পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, যিশু সেনগুপ্ত, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, সুদীপ্তা চক্রবর্তী- সবাই যথাযথ। তবে শ্রীনন্দা শঙ্করকে বেশ আড়ষ্ট লাগে। পরিচালক সুমন ঘোষ কিন্তু দর্শকদের সুযোগ দেননি কোনও চরিত্রেরই গভীরে প্রবেশ করার। ফলে, ছবির প্লট অত্যন্ত আকর্ষণীয় হওয়া সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত মূল ক্রাইসিস দানা বাঁধতে পারেনি। যদিও তার যথেষ্ট সুযোগ ছিল। সৌমিত্র এবং অপর্ণা— এই দুই লিভিং লেজেন্ডকে একসঙ্গে দেখার উৎসাহ ছিল সীমাহীন এবং ছবিতে দু’জনের চরিত্রই ছিল অসীম সম্ভাবনাপূর্ণ। পরিচালক তাঁদের প্রতিও সুবিচার করতে পারেননি। ছবিটি ফিচার-ফিল্ম হিসেবে নয় – বরং নির্মিত হয়েছে অনেকটা তথ্যচিত্রর ছাঁচে। ফলে চরিত্রগুলির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি একেবারেই। স্পর্শ করা যায়নি,আত্মহত্যা, বিচ্ছেদ, রাগ,অভিমানের মতো আবেগের বিষয়ও। বিক্রম ঘোষের ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর সুন্দর। আর একেবারে শেষে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের লিখিত অংশটি তাঁর গলাতেই পাঠ, এই ছবির অন্যতম সম্পদ। এছাড়া বসু পরিবার নিয়ে উচ্ছ্বসিত হওয়ার তেমন কোনও কারণ মেলা ভার।