কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। উপার্জন ভাগ্য ভালো। কর্মে উন্নতির যোগ আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা মিলবে। ব্যবসা ... বিশদ
গত লোকসভা নির্বাচনে হিন্দি বলয়ে মোদি ঝড়ে সব বিরোধীদের ধুয়ে-মুছে দিয়েছিল বিজেপি। এবার সেই ঝড়ের তেজ নেই। তাই বিজেপির অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা হল উত্তরভারতের বা হিন্দি বলয়ের এই ঘাটতি অন্য জায়গা থেকে পুষিয়ে নিতে হবে। সেক্ষেত্রে বিজেপির নজর রয়েছে পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের দিকে। পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা থেকে এবার বেশি সংখ্যক আসন জিততে চাইছেন মোদি-অমিত শাহ জুটি। সেই কারণে ওড়িশায় ভোট প্রচারে এসেও তিনি তুলে ধরছেন পশ্চিমবঙ্গের কথা। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস কীভাবে বিজেপি কর্মীদের উপর আক্রমণ নামিয়ে আনছে, তা তুলে ধরে নরেন্দ্র মোদি বলেন, হামলা করে বিজেপি কর্মীদের ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির অগ্রগতি এবার রোধ করা সম্ভব হবে না। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ওড়িশার বিজু জনতা দলেরও কড়া সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। মোদি বলেন, এবার ওড়িশায় পদ্ম ফুটবেই। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি যে, এবার রাজ্যের বেশিরভাগ আসনেই পদ্ম ফুটবে। বিজেপি এবার এখানে জয়ের স্বাদ পাবে। এবার লোকসভা ভোটের সঙ্গে সঙ্গে ওড়িশায় বিধানসভা নির্বাচনও হচ্ছে। দু’টি জায়গাতেই বিজেপিকে জেতানোর আবেদন করেন মোদি। তাঁর অভিযোগ, কৃষকদের আর্থিক সহায়তা ও গরিবদের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের সুবিধা দিতে নবীন পট্টনায়েক সরকার বাধা দিচ্ছে। প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের প্রচারেও একইভাবে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা থেকে রাজ্যের মানুষকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বঞ্চিত করছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন মোদি।
এদিনের ভাষণে কংগ্রেসকে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই আক্রমণ করেন মোদি। বলেন, দেশের চৌকিদার জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে আর কংগ্রেস এমন কাজ করছে যাতে দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর মনোবল ভেঙে যাচ্ছে। পূর্বতন ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে মোদি বলেন, বর্তমান সরকারের আগেও সরকার ছিল। কিন্তু তারা কোনওদিন সার্জিকাল স্ট্রাইকের কথা ভাবতে পারেনি। বিমানবাহিনীর সাহায্যে সীমান্ত পেরিয়ে জঙ্গিদের খতম করে দেওয়ার মতো সাহস ওই সরকারের ছিল না। তাঁর অভিযোগ, সন্ত্রাসবাদী ও মাওবাদীদের সুরক্ষা দিতেই সবসময় তৎপর কংগ্রেস। বিজেপিই একমাত্র কেন্দ্রে স্থায়ী ও শক্তিশালী সরকার দিতে পারে বলে এদিন দাবি করেন মোদি।
সুন্দরগড়ের পর সোনেপুরেও একটি জনসভা করেন মোদি। সেখানেও কংগ্রেসকে তুলোধোনা করেন তিনি। বলেন. চিরকালই গরিবিকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে কংগ্রেস। গরিবি হটানোর উপায়ও বাতলেছেন মোদি। বলেছেন, সহজ পথ হল কংগ্রেসকেই হটিয়ে দাও। মোদি বলেন, যতদিন কংগ্রেস থাকবে, ততদিন দেশ থেকে গরিবি দূর হবে না। কংগ্রেস হটাও স্লোগান তুলে তিনি বলেন, ওদের থেকে তাড়াতে পারলে দেখবেন, গরিবি আপনা থেকেই কমে যাবে। তিনি অভিযোগ করেন, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে কংগ্রেস গরিবি হটাওয়ের ডাক দিয়ে আসছে। কিন্তু সেই কাজকে নিশ্চিত করার জন্য কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। গরিব আরও গরিব হয়েছে। আর কংগ্রেসের নেতা-মন্ত্রীরা বড়লোক হয়েছেন। মোদি বলেন, এসবের সুযোগই নিয়েছে মাওবাদীরা। কংগ্রেসকে দুর্নীতিগ্রস্ত ও নীতিহীন বলে প্রধানমন্ত্রী জনতার উদ্দেশে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, কাদের ক্ষমতায় আনতে চান? একদিকে রয়েছে সৎ ও উন্নয়নের পথে চলার অঙ্গীকারবদ্ধ সরকার। অন্যদিকে, রয়েছে দুর্নীতিগ্রস্ত ও নীতিহীন সরকার। আপনাদের এই দু’টি পছন্দের মধ্যে থেকে একটিকে বেছে নিতে হবে। এর আগে গত মঙ্গলবার কালাহান্ডিতে প্রচারে এসেছিলেন মোদি। আর শনিবার করলেন সুন্দরগড় ও সোনেপুরের মতো বিজেপির শক্তিশালী ঘাঁটিতে। মোদির সফরের পরেই রাজ্যে আসবেন অমিত শাহ। আর মোদি আগামীকাল যাবেন বিজেপির আরও এক বড় টার্গেট পশ্চিমবঙ্গে।
ওড়িশার পর এদিন ছত্তিশগড়েও সভা করেন মোদি। সেখানেও তিনি বলেন, একটি শক্তিশালী সরকারই সন্ত্রাসবাদীদের সাজা দিতে পারে এবং উন্নয়নের কাজ চালাতে পারে। কংগ্রেস ও অন্য বিরোধীরা সন্ত্রাসবাদীদের খোলা মনে কাজ করতে দেওয়ার জন্যই ভোটে লড়ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।