কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। উপার্জন ভাগ্য ভালো। কর্মে উন্নতির যোগ আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা মিলবে। ব্যবসা ... বিশদ
চারমিনার চত্বর লাগোয়া এলাকায় ডাব বিক্রি করেন ওই ভদ্রলোক। ওয়াইসির প্রভাব-প্রতিপত্তি বোঝাতে কাটারি ধরা হাতখানা একটা বিরাট বাড়ির দিকে তুলে ধরলেন। বললেন, ‘জানেন তো, চারমিনার হেরিটেজ এলাকা। এর লাগোয়া কোনও উঁচু বাড়ি বা নির্মাণ কাজ করা নিষেধ। কিন্তু ওই বাড়িটা হয়েছে দু’বছরও হয়নি। পেল্লায় বাড়িটিতে মুক্তোর শোরুম রয়েছে। এক মাড়োয়ারি ওই প্রপার্টি বানিয়েছে। পুরসভা, পুলিস, প্রশাসন কেউ বাধা দেয়নি। সবই বিরিয়ানির গুণ!’ কিন্তু বিরিয়ানি কেন? ডাবওয়ালার জবাব, ‘ওটাই তো চলছে। নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় এসে যেমন চাওয়ালা বলে সাড়া ফেলেছেন, তেমনই বিরিয়ানি সাড়া ফেলেছে হায়দরাবাদে।’ বিরিয়ানি আসলে এলাকায় চেনা শব্দ। ওটা বলে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। ডাবওয়ালা বুঝিয়ে দিলেন, পলিটিক্সে এখন নতুন শব্দ বিরিয়ানি। কখনও তা প্রতিপক্ষকে খাটো করতে ব্যবহার হচ্ছে। আবার কখনও নিজের ক্ষমতা জাহির করতেও ‘বিরিয়ানি’ ওড়াচ্ছেন কেউ কেউ।
দারুসালেমে ওয়াইসি’র দল এমআইএমের সদর দপ্তর। তার থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে দাঁড়িয়ে এলাকার ব্যবসায়ী সমিতির এক মাথা বললেন, পুলওয়ামা কাণ্ডের পর বিরিয়ানি শব্দটা এত চালু হয়েছে। পাকিস্তান আর বিরিয়ানি শব্দ দুটো হায়দরাবাদের কোথাও কোথাও একই অর্থে ব্যবহার হচ্ছে। এখানে ৭০ শতাংশ মুসলিম। তারা ওয়াইসির সমর্থক। ওয়াইসি যদি বিরিয়ানি খাওয়ার কথা বলেন, তাহলে তা আবার অন্য অর্থ নিয়ে আসে। তবে ওয়াইসির এই রাজনৈতিক বিরিয়ানির পাশাপাশি আসল বিরিয়ানিতেও খানিক পিছিয়ে পড়েছেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। চেভেল্লা থেকে জিতে আসা তাঁর দল টিআরএসের এমপি বিশ্বেশ্বর রেড্ডি এবার কংগ্রেসের কেন্দ্র থেকে ওই আসনেই লড়ছেন। প্রচারে বেরিয়ে ছেড়ে আসা দলের খুঁত খুঁজতে গিয়ে বলছেন, ‘হায়দরাবাদি বিরিয়ানিরও তো দিন গিয়েছে। আগে তেলেঙ্গানার ছাগলে মাটন বিরিয়ানি হতো। এখন তেলেঙ্গানায় এমন দূরবস্থা, ছাগলও পাওয়া যায় না। ভিন রাজ্য থেকে ভেড়ার মাংস এনে বিরিয়ানির হাঁড়ি চড়াতে হয়। কেসিআর তো ক্ষমতায় এসে বিরিয়ানিরও স্বাদ কেড়ে নিয়েছেন!’
পুরনো শহরে বিরিয়ানির বিখ্যাত দোকান সাদাব। একসঙ্গে কয়েকশো মানুষ সেখানে বিরিয়ানি খান। সঙ্গে পাওয়া যায় পাকিস্তানি চিকেন। পাকিস্তানি মাটন। দোকানের ম্যানেজার আজাহার আলির কথায়, দিনে ১৫০ প্লেট বিক্রি কোনও ব্যপারই নয়। আর বিরিয়ানি? মুচকি হেসে ছোট্ট জবাব, বলা কঠিন। অর্থাৎ ঘি-গরম মশলার গন্ধের সঙ্গে বিরিয়ানিতে মিশে গিয়েছে রাজনীতির গন্ধও। সাম্প্রদায়িকতাও আঁচ ফেলেছে সেখানে।