স্ত্রীর শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে হঠাৎ সমস্যায় মানসিক চিন্তা ও উদ্বেগ। কাজকর্ম কমবেশি এগবে। অতিরিক্ত পরিশ্রমে ... বিশদ
সূত্রের খবর, ২০২৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর রাজ্যকে চিঠি লেখেন কেন্দ্রের ষোড়শ অর্থ কমিশনের ডেপুটি ডিরেক্টর আশুতোষ অবস্থী। সেই চিঠিতেই কেন্দ্রের ঠিক করে দেওয়া নির্দিষ্ট ফর্ম্যাটে রাজ্যের অধীনস্থ কোম্পানিগুলির ঋণ, গ্যারান্টি সহ আর্থিক ক্ষেত্রের খুঁটিনাটি তথ্য চাওয়া হয়েছে। তবে শুধু এক বা দু’বছরের নয়, হিসেব চাওয়া হয়েছে টানা চারটি অর্থবর্ষের। প্রশাসনিকভাবে রাজ্যের বিভিন্ন দপ্তরের অধীন কোম্পানিগুলির তরফে ঋণ নেওয়ার হার কেমন, তা পাঠাতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ হিসেব চাওয়া হয়েছে ২০২০-২১ থেকে ২০২৩-২৪ পর্যন্ত প্রতিটি অর্থবর্ষের। ষোড়শ অর্থ কমিশনের তরফে রাজ্যকে এই চিঠি পাঠানো হলেও প্রশাসনিক মহলের প্রশ্ন, তাহলে কি রাজ্যকে নতুন কোনও প্যাঁচে ফেলতেই ঘুরপথে কোম্পানিগুলির ঋণ সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে পাঠাল কেন্দ্র?
কিন্তু এমন প্রশ্ন ওঠার কারণ কী? অভিজ্ঞ প্রশাসনিক কর্তাদের মতে, একাধিক উৎস থেকে রাজ্যের ঋণ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু, একটি রাজ্যের অধীনস্থ কোনও কোম্পানি আর্থিকভাবে দুর্বল বা রুগ্ন হলে, তাকে নির্ভর করতে হয় রাজ্য সরকারের সাহায্যের উপরেই। ফলে রাজ্যের উপরেই সেগুলিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার দায় বর্তায়। তাহলে কি এরাজ্যে কতগুলি আর্থিকভাবে দুর্বল এমন সংস্থা রয়েছে, তা জানতে চাইছে কেন্দ্র? তার উপর ভিত্তি করেই কি আগামী দিনে মোদি সরকার নতুন করে রাজ্যের নির্দিষ্ট কোনও ক্ষেত্রের আর্থিক বরাদ্দের উপর কোপ ফেলতে চলেছে! এই আশঙ্কাও রাজ্য প্রশাসনের। প্রসঙ্গত, পঞ্চদশ অর্থ কমিশন চালু হওয়ার আগেও এমন তথ্য চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই সময়ে কেন্দ্রের বকেয়া ‘পাহাড়প্রমাণ’ পর্যায়ে পৌঁছয়নি। ফলে বর্তমান পরিস্থিতিতে যথেষ্ট আশঙ্কার কারণ আছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকারের অধীনস্থ এমন ৪০-৪৫টি কোম্পানি রয়েছে, যেগুলির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগম, রাজ্য সরকারের বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা, পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম, ওয়েবেল, ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন প্রভৃতির আর্থিক চেহারা যথেষ্ট ভালো। রাজ্য সরকারের সহযোগিতা ছাড়াই স্বনির্ভরভাবে তারা পরিষেবা দিয়ে চলেছে। অনেক সংস্থা আবার লাভ করার পরে রাজ্যকে ডিভিডেন্ডও দিচ্ছে। অর্থাৎ অন্যান্য রাজ্যের সংশ্লিষ্ট সংস্থার থেকেও তাদের আর্থিক হাল অনেক ভালো বলেই প্রশাসন সূত্রের দাবি। ফলে যথাযথ তথ্য দিয়েই কেন্দ্রের এই চিঠির উত্তর দেবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। আর সেই কারণেই সংশ্লিষ্ট সমস্ত দপ্তরকে তাদের অধীন সংস্থাগুলির চারটি অর্থবর্ষের তথ্যসংবলিত রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ডিসেম্বর মাসের গোড়ায় নবান্ন সভাঘরে চেয়ারম্যান অরবিন্দ পানাগড়িয়ার নেতৃত্বে ষোড়শ অর্থ কমিশনের প্রতিনিধি দলের এক বৈঠক হয়। সেখানেই রাজ্যের বকেয়া নিয়ে সুর চড়ান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া কেন্দ্র এখান থেকে অধিকাংশ কর তুলে নিয়ে গেলেও রাজ্যের ন্যায্য প্রাপ্য মোদি সরকার মেটায় না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এই প্রেক্ষিতে কমিশনের হস্তক্ষেপও দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রেক্ষাপটে নয়াদিল্লির তরফে রাজ্যের কাছে এই তথ্য তলব যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।