নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: মঙ্গলকোটের মাটির তলায় লুকিয়ে রয়েছে বহু প্রাচীন ইতিহাসের নিদর্শন। মাটি খুঁড়লে মাঝেমধ্যেই উঠে আসে প্রত্নসামগ্রী। বিভিন্ন বৌদ্ধ তন্ত্রগ্রন্থে মঙ্গলকোটের বিভিন্ন জনপদের নাম উল্লেখ রয়েছে। সম্ভারের কথা জানতে পেরে রাখালদাস বন্দ্যোপধ্যায়ও এই এলাকায় এসেছিলেন। এখান থেকে উদ্ধার হওয়া বহু মূর্তি নিয়ে গবেষণা করছেন প্রত্নতত্ত্বিকরা। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রত্নসামগ্রী নিয়ে এলাকায় কোনও সংরক্ষণকেন্দ্র নেই। এবার পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ সেদিকেই নজর দিয়েছে। মঙ্গলকোট থেকে উদ্ধার হওয়া বিভিন্ন প্রত্নসামগ্রী নিয়ে সেখানে মিউজিয়াম তৈরি হবে। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বলেন, খুব শীঘ্রই মিউজিয়ামের জন্য আমরা জমি চিহ্নিত করব। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই মিউজিয়াম তৈরি হবে। উদ্ধার হওয়া মূর্তিগুলি থেকে নতুন প্রজন্ম অনেককিছু চাক্ষুষ করতে পারবে। যাঁরা ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেন তাঁদেরও সুবিধা হবে। অজয় নদের পাশে থাকা নতুনহাট, কোগ্রাম, পাদিমপুর, উজানি সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রাচীন সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। এই সমস্ত জায়গা খনন করলে অনেক ইতিহাস জানা যাবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, বহু আগে বর্ধমান এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ যৌথ উদ্যোগে বিভিন্ন জায়গায় খনন করেছিল। বেশকিছু মূল্যবান ইতিহাসের সন্ধানও পাওয়া গিয়েছিল। খননকাজ চালিয়ে গেলে আরও অনেক ইতিহাস জানা যেত। এলাকার বাসিন্দারা আরও বলেন, এখন মাটি খুঁড়ে কোথাও প্রাচীন মূর্তি উদ্ধার হলে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তা কোন মিউজিয়ামে রাখা হয় তা অনেকে জানতে পারেন না। এলাকায় মিউজিয়াম থাকলে স্থানীয় বাসিন্দারাও অতীত ইতিহাস চোখের সামনে দেখতে পারবেন। জেলা পরিষদ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া মূর্তিগুলি মঙ্গলকোটে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। কোন মূর্তির কী গুরুত্ব রয়েছে সেসব বিবরণ সেখানে দেওয়া থাকবে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি বলেন, মিউজিয়াম তৈরির প্রক্রিয়া কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হবে। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অনুমতি পাওয়ার পর পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু হবে।