সপরিবারে অদূরবর্তী স্থানে ভ্রমণে আনন্দলাভ। কাজকর্মে কমবেশি ভালো। সাহিত্যচর্চায় আনন্দ। ... বিশদ
উত্তর মালদহের বিজেপি এমপি খগেন মুর্মু বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে বাইক মিছিল করতে চেয়েছিলাম। দেশের সংসদের দু’টি কক্ষই এই সিদ্ধান্তকে বিপুলভাবে সমর্থন জানিয়েছে। সংসদ এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অভিনন্দন জানিয়ে মিছিল করতে চেয়েছিলাম আমরা। অথচ রাজ্য পুলিসের নির্দিষ্ট কয়েকজন আধিকারিক দলদাসের মতো আমাদের মিছিল আটকেছেন। সংসদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এই মিছিল আটকানোর অধিকার ওই পুলিস আধিকারিকদের আদৌ আছে কীনা, তার শেষ দেখে ছাড়ব।
জেলা বিজেপি’র সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডল বলেন, আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার জোর করে কেড়ে নেওয়া হলে আমরা চুপ করে বসে থাকব না। পুলিস জেনে রাখুক, গণতান্ত্রিক আন্দোলন গায়ের জোরে আটকালে যা যা করণীয় তার সবই আমরা করব।
বিজেপি নেতা অজয় গঙ্গোপাধ্যায় রীতিমতো হুমকির সুরে বলেন, আমরা শুধু আওয়াজ দিই না। যাঁর যা প্রাপ্য তাঁকে তা নির্দিষ্ট সময়ে পাইয়ে দিই। সারা দেশের দিকে নজর রাখুন। তাহলেই বুঝবেন। পুলিস নিজেদের ভূমিকা পালন করুক। আমরা চুপ থাকব। কিন্তু জোর করে মিছিল আটকালে তার ফল কী হয় তা ২০২১ সালের পর বুঝিয়ে দেব বলে পুলিসের বিরুদ্ধে রীতিমতো তোপ দাগেন তিনি।
তবে পুলিসের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি কোনও স্তরের কোনও আধিকারিক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা পুলিসের এক প্রবীণ আধিকারিক বলেন, পুলিসের উপর রাগ করে কী হবে? আমরা সরকারি কর্মী। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করাই আমাদের কাজ। নির্দিষ্ট বিধি মেনেই বিজেপি’র মিছিল আটকানো হয়েছে। সকলকেই পুলিসের বাধ্যবাধকতা বুঝতে হবে বলেও মন্তব্য করেন ওই প্রবীণ পুলিস আধিকারিক।
উল্লেখ্য, জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ও ৩৫এ ধারা প্রত্যাহারকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার বাইক মিছিলের আয়োজন করে বিজেপি। মালদহের জেলা সদর কার্যালয় শ্যামাপ্রসাদ ভবন থেকে মিছিল বের হয়ে এগোতেই নেতাজি সুভাষ মোড়ে তা আটকে দেয় পুলিস। সামনে ছিলেন ইংলিশবাজার থানার ইনস্পেক্টর ইনচার্জ শান্তনু মিত্র। তাঁর সঙ্গে সরাসরি বচসায় জড়িয়ে পড়েন মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিজেপি’র জেলা সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডল। থানার আইসি’র কাছে রীতিমতো মিছিল আটকানোর কৈফিয়ত তলব করেন বিজেপি’র এই দুই প্রধান নেতাই।
গোবিন্দবাবু ও খগেনবাবুর মনোভাব দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়েন মিছিলে অংশ নেওয়া বিজেপি কর্মীরাও। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিস মেজাজ ঠাণ্ডা রাখায় জল বেশি দূর গড়ায়নি। পুলিসের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি কঠোর বাক্য ছুঁড়ে দেন খগেনবাবু। রীতিমতো উত্তেজনা তৈরি হলেও পুলিশ আধিকারিকরা সংযত থাকায় শেষপর্যন্ত কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে পুলিস মহলের দাবি।
তবে এই যুক্তি মানতে নারাজ বিজেপি। জেলা বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, বিজেপি কর্মীরা আইন মেনে চলেছেন বলেই উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে ছিল। পুলিসের ভূমিকায় প্রবল ক্ষুব্ধ বিজেপি সাংসদ ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নজরে বিষয়টি এনেছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর রাজনৈতিক দপ্তর থেকেও বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অন্তত তিনজন পুলিস আধিকারিকের নামে সরাসরি রিপোর্ট জমা দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে মালদহের বিজেপি নেতৃত্ব।