ব্যবসা সূত্রে উপার্জন বৃদ্ধি। বিদ্যায় মানসিক চঞ্চলতা বাধার কারণ হতে পারে। গুরুজনদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন ... বিশদ
তুরস্কের সেনারা বাগদাদির সহযোগী ইসমায়েল আল ইথাবিকে গ্রেপ্তার করার পর তাকে ইরাকের হাতে তুলে দিয়েছিল। এই ইথাবিই ইরাকি কর্তাদের জানায়, বাগদাদি অনেক সময় শাকসব্জি ভরা চলন্ত বাসে বসে তার কমান্ডারদের সঙ্গে কৌশল নিয়ে আলোচনায় বসত। বাগদাদির চলাফেরা ও লুকিয়ে থাকার জন্য যেসব জায়গা সে ব্যবহার করে ইথাবি সেই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে দেয় গোয়েন্দাদের হাতে। ‘ইথাবি পাঁচ জন লোকের বিস্তারিত তথ্য আমাদের জানায়, এরা সবাই বাগদাদির সঙ্গে সিরিয়া ও বিভিন্ন স্থানে বৈঠক করেছিল’, রয়টার্সকে বলেন ওই ইরাকি কর্তারা।
ইসলামিক সায়েন্সে পিএইচডি করা ইথাবিকে আইএস নেতার শীর্ষ পাঁচ জন সহযোগীর একজন বলে মনে করেন ইরাকি গোয়েন্দারা। ইথাবি ২০০৬ সালে আল কায়েদায় যোগ দেওয়ার পর ২০০৮ সালে মার্কিন বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে চার বছর জেলে কাটায়। পরে বাগদাদি ইথাবিকে ধর্মীয় নির্দেশক ও আইএসের কমান্ডার বেছে নেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়। ২০১৭ সালে আইএস ব্যাপক ধাক্কা খেলে ইথাবি তার স্ত্রীকে নিয়ে ইরাক থেকে সিরিয়ায় পালিয়ে যায়। চলতি বছরের প্রথমদিকে মার্কিন, তুর্কি ও ইরাকি গোয়েন্দাদের যৌথ অভিযানে কয়েকজন শীর্ষ আইএস নেতা ধরা পরার পর বাগদাদি গোয়েন্দাদের হাতের মুঠোয় চলে আসে।
‘সিরিয়ার কোথায় কোথায় তারা বাগদাদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন সবগুলোর তথ্য আমাদের জানায় তারা। ওই এলাকাগুলোর ভিতরে আরও সূত্র বের করার জন্য সিআইএ-র সঙ্গে সমন্বয় করার সিদ্ধান্ত নেই আমরা। ২০১৯-র মাঝামাঝি সময় আমরা ইদলিবের ওই এলাকাকে শনাক্ত করি, যেখানে বাগদাদি তার পরিবার ও তিন ঘনিষ্ঠ সহযোগী এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে গা ঢাকা দিচ্ছিল। এই সময় সিরিয়ায় থাকা গোয়েন্দারা ইদলিবের বাজারে চেক স্কার্ফে মাথা ঢাকা এক ইরাকিকে দেখতে পায় এবং একটি ছবির সঙ্গে মিলিয়ে তাকে শনাক্ত করে, এই ব্যক্তিটিই ইথাবি ছিল। গোয়েন্দারা ইথাবিকে অনুসরণ করে বাগদাদি যে বাড়িতে ঘাঁটি গেড়েছিল তার খোঁজ পেয়ে যায়। আমরা বিস্তারিত এসব তথ্য সিআইএকে দিই, আর তারা স্যাটেলাইট ও ড্রোন ব্যবহার করে পাঁচ মাস ধরে ওই এলাকার উপর নজরদারি করে চলে। দুই দিন আগে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একটি মিনিবাসে চেপে বাগদাদি ওই এলাকা ছেড়ে কাছেই একটি গ্রামে চলে যায়। সেখানেই খতম করা হয় তাকে।’ বলেন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা এক ইরাকি কর্তা।
সিরিয়ায় স্থানীয় শত্রুরাও বাগদাদিকে তাড়া করছিল। ইদলিবে এক সময় নুসরা ফ্রন্ট নামে পরিচিত হায়াত তাহরির আল শাম জঙ্গি গোষ্ঠীর প্রাধান্য আছে। এই গোষ্ঠীটির এক কমান্ডার জানিয়েছে, বাগদাদি ইদলিবে আছে এমন তথ্য পাওয়ার পর তারাও বাগদাদিকে খোঁজা শুরু করে। নুসরা ফ্রন্ট ও আইএস পরস্পরের বিরোধী গোষ্ঠী ও তারা সিরিয়ার যুদ্ধ চলাকালে বিভিন্ন সময় পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী লড়াইয়ে জড়িয়েছে। ইদলিবের ওই কমান্ডারের ভাষ্য অনুযায়ী, আবু সুলেইমান আল খালিদি নামে বাগদাদির আরেক সহযোগীকে আটক করে তাহরির আল শাম। শেষ ভিডিও বার্তায় বাগদাদির পাশে যে তিন সহযোগী বসে ছিলেন এই খালিদি তাদের একজন। খালিদির আটক হওয়ার ঘটনা বাগদাদির খোঁজে প্রধান ‘চাবি’ হিসেবে কাজ করেছে বলে দাবি করেছে ওই কমান্ডার।