সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় সাফল্য প্রাপ্তি। কর্মে দায়িত্ব বৃদ্ধিতে মানসিক চাপবৃদ্ধি। খেলাধূলায় সাফল্যের স্বীকৃতি। শত্রুর মোকাবিলায় সতর্কতার ... বিশদ
শিশুটি পড়ছিল কলকাতার এক নামী বেসরকারি স্কুলে। কিন্তু, তার বাবা ও মায়ের মধ্যে নানা বিষয়ে তীব্র মতবিরোধ দেখা দেয়। ফলে তার মা অমৃতা চট্টোপাধ্যায় কলকাতা ছেড়ে বাপের বাড়ি বর্ধমানে চলে যান। যাওয়ার আগে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে যান স্থানীয় নেতাজিনগর থানায়। বর্ধমানে একটি বেসরকারি স্কুলে তাকে ‘প্রভিশনালি’ বা শর্তসাপেক্ষে ভর্তি নেওয়া হয়। কারণ, ট্রান্সফার সার্টিফিকেট ছাড়া ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয় না। ছেলেটির বাবা বর্ধমানের স্কুলে চিঠি দিয়ে জানতে চান, ট্রান্সফার সার্টিফিকেট ছাড়াই তাকে ভর্তি নেওয়া হয়েছে কেন? দুই অভিভাবকের স্বাক্ষর ছাড়া কীভাবে তাকে ভর্তি নেওয়া হল? এই প্রশ্নও তিনি তোলেন। অন্যদিকে, অমৃতাদেবী কলকাতার স্কুলে বারবার আবেদন করেন ওই সার্টিফিকেটের জন্য। কিন্তু সাড়া পাননি। সেই সূত্রে তিনি হাইকোর্টে আসেন।
মামলার নোটিস দেওয়া হলেও কলকাতার স্কুলটির তরফে কোনও আইনজীবী শুনানিতে হাজির হননি। অমৃতাদেবীর আইনজীবী উদয়শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় আদালতকে জানান, ওই সার্টিফিকেট না পাওয়ার ফলে ছেলেটির শিক্ষার অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত হতে চলেছে। অথচ, কলকাতার স্কুলটির প্রাপ্য যাবতীয় অর্থ ইতিমধ্যেই মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে, স্কুলটি বেসরকারি হওয়ায় এমন মামলা হাইকোর্টের কাছে সাধারণভাবে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয় না। এটা জানা থাকায়, অমৃতাদেবীর তরফে সুপ্রিম কোর্টে রমেশ আলুওয়ালিয়া বনাম পাঞ্জাব সরকারের মামলার উদাহরণ পেশ করা হয়। যে মামলায় সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, যে সংস্থা সম্পূর্ণভাবে বেসরকারি, যেখানকার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই, তার প্রতিও বাধ্যতামূলক নির্দেশ হাইকোর্ট দিতে পারে। যদি সেই বেসরকারি সংস্থা জনগণের স্বার্থে এমন কাজ করে, যা সাধারণভাবে সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
এই বিচারবিভাগীয় বিধিকে সামনে রেখে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য তাঁর রায়ে বলেছেন, কোনও সন্দেহ নেই কলকাতার স্কুলটি শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত, যা সংবিধানিক দিক থেকে রাজ্যের কাজ। বিষয়টি মানুষের মৌলিক অধিকারের মধ্যেও পড়ে। আপাতদৃষ্টিতে ছেলেটির ট্রান্সফার সার্টিফিকেট আটকে রাখার কোনও কারণ নেই। তাই স্কুলটিকে তা দিতে হবে, যদি তার কাছে প্রাপ্য সমস্ত অর্থ আদায় হয়ে থাকে।