সপরিবারে অদূরবর্তী স্থানে ভ্রমণে আনন্দলাভ। কাজকর্মে কমবেশি ভালো। সাহিত্যচর্চায় আনন্দ। ... বিশদ
হাঁদুবাবুর ছেলে হলেন তাপস। তিনি চটকলের শ্রমিক। তাঁর আর্থিক অবস্থা মোটেও ভালো নয়। ফলে দুই নাতির লেখাপড়ার খরচের বেশিরভাগটাই বইতে হয় হাঁদুকে। প্রতিদিন বিকেলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ট্রেনে চাপেন। উলুবেড়িয়া ষ্টেশনে নামেন। তারপর পায়ে হেঁটে উলুবেড়িয়া কালীবাড়ি পর্যন্ত যান। পথে বাদাম বিক্রি করেন। একসময় বাদাম শেষ হয়। তা করতে করতে শেষ ট্রেনের সময় হয়ে যায়। সেই ট্রেন ধরে বাড়ি ফেরেন বৃদ্ধ। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁর সঙ্গে হঠাৎ দেখা। অনেক কথা হল। হাঁদুবাবু বললেন, ‘বড় নাতি দেব দাস দশমে আর ছোট নাতি সোহম সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। পড়াশোনার খরচ আমাকে দিতে হয়। সেইজন্যই বাদাম বিক্রি করি।’ তিনি জানান, প্রতিদিন সকালে ফুলেশ্বরের মনসতলা থেকে বাদাম কেনেন। বাড়ি ফিরে তা প্যাকেট করেন। এরপর বিকেলে বেরন বিক্রি করতে। প্রতিদিন চেঙ্গাইল ষ্টেশন থেকে চারটে ৫৮ মিনিটের ট্রেন ধরে উলুবেড়িয়া ষ্টেশন। হেঁটে যান কালীবাড়ি পর্যন্ত। পথেই বিক্রি হয় প্যাকেটের বাদাম। রাত ১০টা ২০ মিনিটের ট্রেন ধরে ফেরেন বাড়ি। প্রতিদিন যেভাবেই হোক ৯০ টাকার বাদাম বিক্রি করতেই হয়। ১০ টাকা লাগে ট্রেনের টিকিট কিনতে। বাকি ৮০ টাকা বাড়িতে নিয়ে যান। ‘এই গরমে কষ্ট হয় না?’
এই প্রশ্নে বৃদ্ধের মুখে মলিন হাসি। তারপর দিলেন উত্তর, ‘নাতিদের মুখ চেয়ে কষ্ট হয় না। বাদাম বিক্রি করি কারণ, ওদের পড়াশোনার যেন কোনও সমস্যা না হয়। যতদিন শরীর চলবে এ কাজ করব। নাতি দু’টো মানুষের মতো মানুষ হয়ে ওঠার পরই আমার শান্তি।’