উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
ভারতীয়দের বিদেশ ভ্রমণের গন্তব্য হিসাবে অস্ট্রেলিয়া কীভাবে উপরের সারিতে উঠে এল?
আজকে অস্ট্রেলিয়ার পর্যটন শিল্পের ক্ষেত্রে ভারত সবথেকে বড় বাজার। বলতে ভালো লাগছে, গত তিন বছর ধরেই এই বাজারে ভারত শীর্ষস্থানেই রয়েছে। কারণ ভারত থেকে বিদেশে ঘুরতে যাওয়ার ক্ষেত্রে যেখানে ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রি প্রতি বছর ৮% হারে বাড়ছে, সেখানে আমাদের বৃদ্ধির হার ১৬%। এটার পিছনে মূলত দুটো কারণ রয়েছে। ২০১২ সাল থেকেই আমরা ‘টোয়েন্টি-টোয়েন্টি ট্যুরিজম গোল’ নামে নিজেদের জন্য তিনটে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছি। প্রথমত, ৩০ কোটি পর্যটক এবং দ্বিতীয়ত, ভারতের বাইরে প্রথম ছ’টা গন্তব্যের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার জায়গা করে নেওয়া। তৃতীয়ত, ১৯০ কোটি ডলারের ব্যবসা করা। এর মধ্যে নির্ধারিত সময়ের আগেই আমরা দুটো লক্ষ্যমাত্রাই পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি। ১৯০ এর মধ্যে ১৭০ কোটি ডলারের ব্যবসা করেছি। আর কিছুদিনের মধ্যেই বাকিটা আমরা সম্পূর্ণ করতে পারব। আর এইভাবে এগতে থাকলে আমরা ২০২৫ সালের মধ্যে আশা করি ১০০ কোটি পর্যটকের লক্ষ্যমাত্রাও পূরণে সক্ষম হব। এর পিছনে কিছু কারণ রয়েছে। আমরা পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার লাগাতার প্রচার করছি।
গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত বিভিন্ন জাতীয় চ্যানেলের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেও তো আপনারা প্রচারমূলক ক্যাম্পেন শুরু করেছিলেন।
একদম। সেখানে শিবানি ডাণ্ডেকর এবং ক্রিকেটাররাও আমাদের সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন। আগামী বছর ক্রিকেট টি টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ড কাপের আয়োজক দেশ অস্ট্রেলিয়া। ফলে এই সময় ভারত থেকে একটা বড় অংশের পর্যটক অস্ট্রেলিয়ায় যেতে চাইবেন। এই প্রসঙ্গে আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমি উল্লেখ করতে চাই।
সেটা কী?
গত পাঁচ বছরে অস্ট্রেলিয়াতে বসবাসকারী ভারতীয়দের সংখ্যাটা দ্বিগুণ হয়েছে। আজকে অস্ট্রেলিয়াতে প্রায় ১ লক্ষ ভারতীয় ছাত্রছাত্রীরা রয়েছেন। আর তার মানে তাদের সঙ্গে দেখা করতে সেখানে আরও ২ লক্ষ অভিভাবকের যাওয়ারও একটা সম্ভাবনা রয়েছে।
আর আপনি যে ১৯০ কোটি ডলারের কথা বললেন তার মধ্যে অনেকটাই তো এই ভারতীয়দের থেকেই উঠে আসছে?
একদমই তাই। শুধু অভিভাবক নন, অনেক সময় তাঁদের বন্ধুবান্ধবরাও অস্ট্রেলিয়ার ঘুরতে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি খুবই ভালো। আরও একটা জিনিস হচ্ছে যে, এখন অস্ট্রেলিয়ান ডলার অন্যান্য দেশের কারেন্সির তুলনায় অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীল। গত পাঁচ বছরে ডলারের দাম ২০ শতাংশ কমেছে। আর তার অর্থ এখন অস্ট্রেলিয়াতে ঘোরার খরচও ২০ শতাংশ কমেছে।
আনডিসকভারড অস্ট্রেলিয়া ক্যাম্পেন সম্পর্কে জানতে চাই।
অস্ট্রেলিয়ার অপেক্ষাকৃত কম জনপ্রিয় গন্তব্যগুলোকেও আমরা এখন প্রচারের আলোয় নিয়ে আসছি। সেখানে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস, স্থানীয় আদিবাসীদের সংস্কৃতিকে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে আরও বেশি করে মানুষ সেখানে যেতে চাইবেন।
বুঝলাম। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার ছুটি কাটাতে যাওয়া ভারতীয়দের ভিসার ক্ষেত্রে আপনারা কী কী পদক্ষেপ নিয়েছেন?
এখন বাড়ি বসেই অস্ট্রেলিয়ার ই-ভিসার জন্য আবেদন করা যাচ্ছে। পাসপোর্ট, সাক্ষাৎকার বা কোনও ব্যাঙ্কিং নথি জমা দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। খুবই সহজ হয়ে গিয়েছে। ফলে ছোট ছোট শহরের মানুষকে আর ভিসার জন্য বড় শহরে আসার দরকার নেই। বাড়ি বসেই তাঁরা অস্ট্রেলিয়ার ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এখন ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য ১৫ দিন ও বিজনেস ভিসার জন্য মাত্র ৮ দিন সময় লাগছে। এমনকী যাত্রার ১২ মাস আগেও ভিসার জন্য আবেদন করা যাচ্ছে।
তার মানে টি টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ড কাপ দেখতে ইচছুকরা এখনই আগাম ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন?
অবশ্যই। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক খুব ভালো বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যটন সংক্রান্ত একটা চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করেছেন। সেখানে দুই দেশের মধ্যে ভিসার সরলীকরণ, বিমানের সুবিধা নিয়ে নতুন নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সেটা দু দেশের পর্যটন শিল্পের উন্নতি সাধন করবে। দেখুন সাধারণত পুরুষদের বিশ্বকাপ সবাই দেখতে চান। কিন্তু আমরা মহিলাদের বিশ্বকাপকে আরও বেশি প্রচারের আলোয় নিয়ে আসতে চাইছি। ৮ মার্চ নারী দিবস এবং কাকতালীয়ভাবে ওইদিন মহিলা বিশ্বকাপের ফাইনাল। আশা করছি ওইদিন দর্শকের উপস্থিতির নিরিখে অস্ট্রেলিয়া নতুন রেকর্ড স্থাপন করবে। ভারত থেকে ১১জন স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত মহিলা তারকাদেরও নিয়ে যাওয়ার কথা হচ্ছে।
পরিণীতি চোপড়া তো অস্ট্রেলিয়া ট্যুরিজমের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। এক্ষেত্রে কারও কথা ভেবেছেন?
অবশ্যই। হর্ষ ভোগলে, শিবানি ডাণ্ডেকর, ব্রেট লি এবং করিনা কাপুরের সঙ্গে কথাবার্তা বলছি।
শুধুমাত্র বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে ভারতীয় পর্যটকদের জন্য কোনও বিশেষ প্যাকেজ কি রয়েছে?
অনেক পরিকল্পনাই রয়েছে। মহিলাদের ফাইনালকে ঘিরে তিন থেকে চারদিনের জন্য প্যাকেজ শুরু হচ্ছে ১ লক্ষ টাকা থেকে। পুরুষদের ক্ষেত্রে ইন্ডিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের ক্ষেত্রে কলকাতা থেকে ৯০ হাজার টাকার প্যাকেজ রয়েছে।