সংবাদদাতা, করিমপুর: মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর ছয় সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। ১০ জুন থেকে নতুন সিলেবাসে একাদশ শ্রেণির পঠন পাঠন শুরু হয়েছে। অথচ এখনও পর্যন্ত পাঠ্যবই হাতে পেল না একাদশের পড়ুয়ারা। ফলে বই না পেয়ে সমস্যায় পড়েছে ছাত্রছাত্রী সহ শিক্ষক শিক্ষিকারাও। জানা গিয়েছে, প্রতি বছরের মতো এবারেও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পক্ষ থেকে বাংলা ও ইংরেজি সহ প্রথম ও দ্বিতীয় ভাষার সমস্ত বই বিনামূল্যে স্কুলগুলিতে পৌঁছনোর কথা। কিন্তু সেই বই এখনও বিদ্যালয়ে এসে পৌঁছয়নি। বিকল্প হিসেবে শিক্ষা সংসদ পড়ুয়া ও শিক্ষক শিক্ষিকাদের পিডিএফ ডাউনলোড করে পড়ার পরামর্শ দিয়েছে এবং সেই সিলেবাস তাদের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। ২০২৬ সাল থেকে সেমিস্টার পদ্ধতিতে উচ্চ মাধ্যমিক হওয়ার কথা। সে কথা মাস তিনেক আগেই উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ জানিয়েছে। নতুন সেমিস্টার পদ্ধতিতে একাদশ এবং দ্বাদশে চারটি পরীক্ষা দিতে হবে। নতুন নিয়মে পাঠ্যক্রমেও বেশ কিছু পরিবর্তনও এনেছে সংসদ। কিন্তু তারপরে তিন মাস কেটে গেলেও কেন বই প্রস্তুত করা গেল না সে প্রশ্ন উঠছে। করিমপুরের এক অভিভাবক গোরাকেশ প্রামাণিক বলেন, মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল বেরিয়েছে গত ২ মে। একাদশের ক্লাস শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনও একাদশ শ্রেণির নতুন পাঠক্রমের বই পড়ুয়াদের হাতে দেওয়া গেল না। মাধ্যমিক পরীক্ষার পরপরই হাতে বই না পেলে পড়ুয়ারা ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারবে না। স্কুলে মিড ডে মিল, সাইকেল, পোশাক, ব্যাগ কিংবা জুতো দেওয়ার যেমন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে, পাঠ্যবই দেওয়ার ক্ষেত্রে সেই তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। একাদশ শ্রেণির ছাত্র প্রীতম সরকারের অভিযোগ, একাদশ ও দ্বাদশের ইংরেজি পাঠ্যবই দু’টির পিডিএফ-এ মোট ১৬৮টি পাতা রয়েছে। প্রতি পাতার প্রিন্ট খরচ ২ টাকা হলে মোট খরচ হবে ৩৩৬ টাকা। সে ক্ষেত্রে বইয়ের দামের থেকে পিডিএফ ডাউনলোড খরচ বেশি হয়ে যাবে। অনেকের বাড়িতে স্মার্ট ফোনও নেই। কারও বাড়িতে একটা থাকলেও বাড়ির অভিভাবক ফোনটা বাইরে নিয়ে গেলে আমরা কীভাবে পড়ব?  করিমপুরের আর এক অভিভাবক সমর মণ্ডল বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় ভাষার বইগুলি এখনও স্কুলে না আসায় সমস্যায় পড়েছে ছেলেমেয়েরা। গ্রামাঞ্চলের ছাত্র ছাত্রীদের পক্ষে বই ডাউনলোড করে পড়া সম্ভব নয়। এমনিতেই গরিব ঘরের ছেলেদের অনেকেই পেটের টানে পড়াশুনা ছেড়ে ভিনরাজ্যে কাজে চলে যায়। এবারের মাধ্যমিকে রেকর্ড সংখ্যক পরীক্ষার্থী ফেল করেছে। শিক্ষক নিয়োগের অভাবে বহু স্কুল বন্ধের মুখে। এই দেশে ভোটের বিষয়ে এত গুরুত্ব দেওয়া হয় সেখানে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা নিয়ে এত অবহেলা কেন তা নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই।