সপরিবারে অদূরবর্তী স্থানে ভ্রমণে আনন্দলাভ। কাজকর্মে কমবেশি ভালো। সাহিত্যচর্চায় আনন্দ। ... বিশদ
কয়েক দিন ধরে সিকিম পাহাড়ে ঝোড়ো ইনিংস শুরু করেছে বর্ষা। যার জেরে তিস্তা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে কালিম্পংয়ের লিকুভির, মেল্লি, ২৭ মাইল, ২৯ মাইল ও তিস্তাবাজারে নদীর জল উঠে গিয়েছে। সংশ্লিষ্ট গ্রামগুলির বাসিন্দাদের কেউ প্রতিবেশী, আবার কেউ আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। সকালে তিস্তাবাজারে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় তিস্তা। দুপুরের দিকে সেখান থেকে জল কিছুটা নামে। এখন তিস্তার জলস্তরের উচ্চতা জাতীয় সড়কের সমান। এছাড়া সংশ্লিষ্ট জাতীয় সড়কের একাধিক জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সড়ক দিয়ে শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং ও সিকিমের সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এদিন কালিম্পং জেলা প্রশাসন এব্যাপারে জরুরি বৈঠক করে। কালিম্পংয়ের জেলাশাসক বালাসুহ্মণ্যম টি বলেন, জেলায় ১০টি ত্রাণ শিবির প্রস্তুত করা হলেও কেউ এখনও সেখানে আশ্রয় নেননি। তিস্তার গতিবিধি নিয়ে গ্রামে গ্রামে মাইকে প্রচার চলছে। মানুষের সুরক্ষায় জাতীয় সড়কের তিনটি জায়গা দিয়ে যান চলাচল নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। জিটিএ’র মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শক্তিপ্রসাদ শর্মা বলেন, লিকুভির, মেল্লি, তিস্তাবাজার, ২৯ মাইল, ২৭ মাইল প্রভৃতি এলাকায় প্রায় ৫০টি বাড়িতে নদীর জল ঢুকলেও তা নেমে গিয়েছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে।
তিস্তার ভয়ঙ্কর ঢেউ আছড়ে পড়েছে জলপাইগুড়িতেও। জেলার ক্রান্তি ব্লকের চ্যাংমারি গ্রাম পঞ্চায়েত নদীর দাপট বেশি। এখানকার ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলি পরিদর্শন করেন ক্রান্তি ব্লকের বিডিও রিমিল সোরেন, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পঞ্চানন রায় সহ অন্যান্যরা। চ্যাংমারি পঞ্চায়েতের প্রধান আব্দুল সামাদ বলেন, সাহেববাড়িতে ২৫টি, পূর্ব দলগাঁওয়ে ২৫টি ও পশ্চিম দলগাঁওয়ের ৩৫টি বাড়িতে তিস্তার জল দাঁড়িয়ে আছে। দুর্গতদের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ও প্রাথমিক স্কুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় দেড় হাজার বিঘা চাষের জমি জলের তলায়। বাদাম, করলা, পটল, ঝিঙে প্রভৃতি সব্জি চাষে ক্ষতি হয়েছে। ওই ব্লকের চাপাডাঙা পঞ্চায়েতের মৌয়ামারি এলাকায় ৭০টি ও বাসুসুব্বায় ৩০টি বাড়ি জলমগ্ন। মাল ব্লকের বাগরাকোট পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ৪০টি বাড়ি জলমগ্ন। ডাবগ্রামের লালটং ও চমকডাঙি বনবস্তির অবস্থাও একই। এদিকে, নাগরাকাটায় বেড়েছে সুখানি নদীর জল। তা সুখানি সেতুর উপর দিয়ে বইছে। ফলে মনমোহনধুরা ও নাগরাকাটার মধ্যে যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন। এদিকে তিস্তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে গজলডোবায় তিস্তা ব্যারেজ থেকে কিছু জল ছাড়া হয়েছে। এরজেরে ভুটানের সঙ্গে সংযুক্ত জলঢাকাতে নদীতে বেড়েছে জলস্তর। তাই জলঢাকা নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সঙ্কেত জারি করে সেচদপ্তর।