স্ত্রীর শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে হঠাৎ সমস্যায় মানসিক চিন্তা ও উদ্বেগ। কাজকর্ম কমবেশি এগবে। অতিরিক্ত পরিশ্রমে ... বিশদ
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, ধর্মীয় আচারের মধ্যেই তারিকুল তার নিজের লক্ষ্যে অবিচল ছিল। লক্ষ্য বলতে জঙ্গি কার্যকলাপ বিস্তার। এ জন্য জেহাদি শিক্ষায় অন্যান্য জেলবন্দিদের উদ্বুদ্ধ করত তারিকুল। তাদের ধীরে ধীরে মগজধোলাই করে অন্যান্য বন্দিদের স্লিপার সেলের সদস্য বানিয়ে নিত সে এভাবেই জেলকে কার্যত স্লিপার সেলে নিয়োগের ‘কেন্দ্র’ করে তুলেছিল তারিকুল। গোয়েন্দা জেরায় তারিকুল নিজেও স্বীকার করেছে, ধর্মচর্চা করার ফলে বহু জেলবন্দি তাকে গুরু হিসেবে মানত।
বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর আনসারুল্লা বাংলা টিমের (এবিটি) গতিবিধি এপারে ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। কাজ বাড়ে তারিকুলেরও। এবিটি প্রধান জসিমউদ্দিন রহমানি ঘনিষ্ঠ বাংলাদেশি জঙ্গি নেতা ফারহান ইশরাক বহরমপুর জেলে গিয়ে দেখা করেছিল তারিকুলের সঙ্গে। তারপর থেকে দু’বেলা নিয়ম করে বন্দিদের ক্লাস নিতে থাকে তারিকুল। হরিহরপাড়া থেকে ধৃত জঙ্গি আব্বাস আলির সঙ্গে তারিকুলের জেলেই পরিচয় হয়। আব্বাসকে মিডলম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেয় তারিকুল। তার সঙ্গেই জেলে এসে একাধিক জঙ্গি নেতা দেখা করেছে বলেই খবর। কারা কারা তার সাক্ষাৎপ্রার্থী হয়েছে, তা জানতে জেলের রেজিস্টারও খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। কেউ নাম পরিচয় গোপন করে রেজিস্টার খাতায় নাম লিখিয়েছিল কি না, সেটাও তদন্তকারীদের আতস কাচের তলায়।
গোয়েন্দাদের দাবি, আব্বাস যখন নাবালিকা অপহরণের মামলায় বহরমপুর জেলে ছিল, সেইসময় তার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল তারিকুলের। আব্বাসের মগজ ধোলাই করে জেহাদি ভাবধারায় টেনে আনে তারিকুল ওরফে সুমন। আব্বাস তদন্তকারীদের জানিয়েছে, নুর ইসলাম তিন মাস আগে অসম থেকে মুর্শিদাবাদে এসে তাকে দায়িত্ব দিয়ে যায় তারিকুলের সঙ্গে জেলে বৈঠক করতে। কথা ছিল, এবিটি সংগঠনের পরবর্তী রূপরেখা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। মাস দুই আগে পরিবারের সদস্যরা তারিকুলের সঙ্গে দেখা করার অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেলে তাদের সঙ্গে আব্বাসও যায় জেলে। আব্বাস জেরায় তদন্তকারীদের জানিয়েছে, তারিকুলের সঙ্গে বিভিন্ন জেলে বন্দি জেএমবি ক্যাডারদের যোগাযোগ রয়েছে। তারিকুল জেলের মধ্যে মোবাইল ব্যবহার করার সুযোগ পেত। বাংলাদেশ থেকে আসা নির্দেশ মতো জেলে থাকা অন্য অপরাধীদের মগজ ধোলাই করত সে। যাতে জেলের মধ্যে সমান্তরাল সংগঠন তৈরি করা যায়। পাশাপাশি জেলবন্দিদের বের করে আনার জন্য অর্থ সাহায্য করার কথা ছিল তারিকুলের। বিভিন্ন প্রভাবশালী বন্দিদেরকেও কাজে লাগিয়েছে তারিকুল। এখন প্রশ্ন হল, বহরমপুর সংশোধনাগার থেকে গত তিন চার বছর ধরে যে সমস্ত বন্দিরা মুক্তি পেয়েছে, তাদের মধ্যে কার কার মগজ ধোলাই করতে সফল হয়ে তারিকুল? মুক্তি পাওয়ার পর তাদের গতিবিধি এখন কী, সেটাও নজরে রয়েছে তদন্তকারীদের।