যে কোনও কর্মেই একটু বাধা থাকবে। তবে উপার্জন মন্দ হবে না। ললিতকলায় ব্যুৎপত্তি ও স্বীকৃতি। ... বিশদ
১৯০৬ সালে কুমিল্লার দক্ষিণ চারথা গ্রামের রাজবাড়িতে জন্ম হয় শচীনকর্তার। তাঁর জীবনের ১৮ বছর কেটেছে ওই বাড়িতেই। পড়াশোনা কুমিল্লা জেলা স্কুলে। তারপর ১৯২৪ সালে ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক হন সরস্বতীর এই বরপুত্র। তাঁরা আদতে ত্রিপুরার রাজপরিবারের বংশধর।
বাংলাদেশ সরকারের এই উদ্যোগে খুশি দেব বর্মন পরিবারের আত্মীয় কলকাতার বাসিন্দা অভিজিৎ দাশগুপ্ত। বললেন, ‘কুমিল্লাতেই জীবনের শুরুটা কাটিয়েছিলেন শচীনদেব বর্মন। ওখানেই তাঁর সঙ্গীতশিক্ষার শুরু। এমন একটা হেরিটেজ বাড়িকে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার এই উদ্যোগের জন্য ওখানকার প্রধানমন্ত্রীর অবশ্যই প্রশংসাপ্রাপ্য।’
কুমিল্লার আইনজীবী গোলাম ফারুক ইতিমধ্যে এই কালজয়ী সুরকারের উপর একটি বই লিখে ফেলেছেন। তিনি বলছিলেন, ২০১২ সালে আগরতলায় ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে অংশ নিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। সেই সময় ওখানকার শিল্পী-সাহিত্যিকদের একটি প্রতিনিধি দল তাঁর সঙ্গে দেখা করে দেব বর্মণ পরিবারের এই বাড়ি সংরক্ষণের দাবি জানায়। ২০১৭ সালের মে মাসে কুমিল্লা সফরে এসে সাতটি প্রজেক্টের শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী। তার মধ্যে ছিল ‘শচীনদেব বর্মন কালচারাল কমপ্লেক্স’ গড়ে তোলার এই উদ্যোগ। ওই বছরই নভেম্বর মাসে এই বাড়ি ‘সংরক্ষিত স্থাপত্য’ হিসেবে ঘোষণা করে সরকার।
কাজি নজরুল ইসলাম সহ বহু বিখ্যাত ব্যক্তি কুমিল্লা রাজবাড়িতে এসেছেন। শচীনদেব বর্মনের বাবা ছিলেন বিখ্যাত সেতারবাদক। দেশভাগের পর পাকিস্তানি শাসকদের আমলে এই পরিত্যক্ত বাড়ি সেনাবাহিনীর গুদামঘর হিসেবে ব্যবহৃত হতো। তারপর এই বাড়ির একাংশে চলছিল পোলট্রি ফার্ম। অবশেষে এই বিখ্যাত বাড়ির মর্যাদা ফিরছে। প্রত্নতত্ত্ববিভাগের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাড়ির সংস্কার কাজ করা হবে বলে জানিয়েছেন কুমিল্লার জেলাশাসক মহম্মদ কারুল হাসান।