নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্টি হয়েছে ‘লা নিনা’ পরিস্থিতি। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর শুক্রবার যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, সেখানেই বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। উপকূল সংলগ্ন প্রশান্ত মহাসাগরে জলের উষ্ণতা স্বাভাবিকের থেকে কম হলে ‘লা নিনা’ পরিস্থিতি তৈরি হয়ে। এর বিপরীত অবস্থা অর্থাৎ জলের উষ্ণতা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে ‘এল নিনো’ পরিস্থিতি বলা হয়। ‘লা নিনা’ পরিস্থিতি ভারতে বর্ষাকালের বৃষ্টির ক্ষেত্রে ইতিবাচক বলে মনে করেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু এবারের ‘লা নিনা’র স্থায়িত্ব খুব কম হবে বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। ‘লা নিনা’ দুর্বল অবস্থায় আগামী এপ্রিল মাস পর্যন্ত থাকবে। তারপর তৈরি হবে ‘নিউট্রাল এসনো’ পরিস্থিতি। আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, ভারতে বর্ষাকাল শুরু হয় জুন মাসে। অর্থাৎ পূর্বাভাস অনুযায়ী, বর্ষা আসার আগেই বিদায় নেবে ‘লা নিনা’। তবে তাঁদের আশা, ‘লা নিনা’ বিদায় নিলেও বর্ষার সময় ‘এসনো নিউট্রাল’ পরিস্থিতি থাকবে। গত বছর পুরো বর্ষাকাল এই পরিস্থিতি ছিল। দেশে বর্ষাকালে বৃষ্টিপাতও ভালো পরিমাণ হয়েছে। ২০২৪ সালে সামগ্রিকভাবে স্বাভাবিকের থেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছিল দেশে ফলে কৃষি উৎপাদনও দেশজুড়ে ভালো হয়েছে। ‘এসনো নিউট্রাল’ থাকলে বৃষ্টি মোটের উপর ভালো হলেও ‘এল নিনো’ পরিস্থিতি থাকলে বৃষ্টি অনেকটা কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সাম্প্রতিক অতীতে, ২০১৬ সালে বর্ষাকালে ‘এল নিনো’ পরিস্থিতি সক্রিয় থাকায় বৃষ্টি খুব কম হয়েছিল। তাছাড়া, দেশে বৃষ্টি কতটা হবে, তা ভারত মহাসাগরের ‘ডাইপোল’ পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। তাও গত বছর ইতিবাচক ছিল। আপাতত আগামী দু’মাস ডাইপোল পরিস্থিতি একইরকম থাকবে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
এরার শীতকালে দক্ষিণ ভারত ছাড়া বাকি দেশে স্বাভাবিকের থেকে বৃষ্টি অনেক কম হয়েছে। জানুয়ারি মাসে স্বাভাবিকের থেকে ৭২ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে সামগ্রিকভাবে। এই সময়ে কিছুটা বৃষ্টি হলে রবি চাষের সুবিধা হয়। বাঁধগুলির জলাধারে ও ভূগর্ভে জলের সঞ্চয় বৃদ্ধি পায়। ফেব্রুয়ারিতেও বৃষ্টি স্বাভাবিকের থেকে কম হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। শীতকালে দক্ষিণ ভারত ছাড়া দেশের বাকি অংশে পশ্চিমি ঝঞ্ঝার প্রভাবে বৃষ্টি হয়। এবার বেশ কয়েকটি ঝঞ্ঝা এলেও সেগুলি খুব শক্তিশালী ছিল না। তাই বৃষ্টিও হয়নি সেভাবে। রাজ্যে অল্প কিছু জায়গায় শীতকালে ছিঁটেফোঁটা বৃষ্টি হয়েছে।