সপরিবারে অদূরবর্তী স্থানে ভ্রমণে আনন্দলাভ। কাজকর্মে কমবেশি ভালো। সাহিত্যচর্চায় আনন্দ। ... বিশদ
চলতি বছরে খাদ্য দপ্তরে সাব ইনসপেক্টর পদে নিয়োগের জন্য পরীক্ষা নেওয়া হয়। সার্ভে পার্ক থানা এলাকার একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে চার পরীক্ষার্থী মোবাইল ফোন নিয়ে ঢুকেছিল। তাঁদের ফোনে ক্রমাগত এসএমএস আসছিল। পরিদর্শকের সন্দেহ হওয়ায় চারজনের মোবাইল পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখা যায়, এসএমএস’এ প্রশ্নের উত্তর আসছে। তাঁদের আটক করে সার্ভে পার্ক থানায় খবর দেওয়া হয়। টুকলি করার অভিযোগে চারজন পরীক্ষার্থী গ্রেপ্তার হন। কিন্ত তদন্ত না এগনোয় বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অন্য পরীক্ষার্থীরা। উচ্চ আদালত সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেয়।
তদন্তে নেমে সিআইডি জানাতে পারে, বাজেয়াপ্ত করা মোবাইলের কল ডিটেইলস বের করে সিআইডি। দেখা যায়, টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে জানা যায়, ধুবুলিয়ার একটি নম্বর থেকে ক্রমাগত এসএমএসগুলি এসেছে। শুধু ওই চারজনই নয়, সবমিলিয়ে ৪০০ জনের কাছে এসএমএসগুলি গিয়েছে। এই নম্বরের বাইরে আরও সিম ব্যবহার হয়েছে মেসেজ পাঠানোর জন্য। সবই প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সিম। ভুয়ো নথি দিয়ে এগুলি তোলা হয়েছে। পরীক্ষার দিনই এই সিমগুলি ব্যবহার করেছে অভিযুক্তরা। তারপরই কানেকশন ডিঅ্যাক্টিভেট হয়েছে। সিআইডি জানতে পারে, ধুবুলিয়ার যে নির্দিষ্ট টাওয়ার লোকেশন থেকে মোবাইলটি অ্যাক্টিভেট ছিল, সেটি শঙ্কর বিশ্বাসের। এরপরই বৃহস্পতিবার বাড়িতে হানা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে।
ধৃতকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, শঙ্কর প্রথমে কলকাতা পুলিসে সাব ইনসপেক্টর পদে চাকরি পেয়েছিলেন। পরে অন্য একটি সরকারি পরীক্ষায় সফল হন। দুটি চাকরি ছেড়ে এরপর পিএজিতে যোগ দেন। তিনি তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সমাধান তাঁর কাছে জলভাত। সেই ‘মেধা’কে কাজে লাগিয়ে দুর্নীতির ওই চক্রটি ২০১৬ সালে গড়ে তোলেন। নদীয়ার ধুবুলিয়া, রানাঘাট, কল্যাণী, উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ সহ গোটা রাজ্যে তাঁর চক্রের লোকজন ছড়িয়ে রয়েছেন। চক্রের সদস্যরাই পরীক্ষার্থী জোগাড় করতেন। পরীক্ষার্থী পিছু দু’লক্ষ টাকা করে নিতেন শঙ্কর। প্রশ্নপত্র শঙ্করের মোবাইলে এসএমএস করে পাঠিয়ে দিতেন পরীক্ষার্থীরা। সমাধান করে উত্তর পাঠাতেন কেন্দ্রীয় সরকারের এই আধিকারিক। শঙ্কর ও তাঁর চক্রের মাধ্যমে ঠিক কতজন সরকারি চাকরি পেয়েছেন, তার খোঁজ করছেন গোয়েন্দারা।