বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
রানাঘাট-২ ব্লকের কৃষি আধিকারিক পৃথ্বীরাজ প্রামাণিক বলেন, কলা ও সব্জি চাষের ক্ষতির কথা শুনেছি। তবে কোনও চাষি এখনও লিখিতভাবে সমস্যার কথা জানাননি। চাষিরা সমস্যার কথা দপ্তরে জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে শিলাবৃষ্টির কারণে ফুলচাষের ক্ষতির কথা স্বীকার করে নিয়ে রানাঘাট মহকুমার উদ্যানপালন আধিকারিক মৌ রায় বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমাদের কারও হাত নেই। ফুল চাষের ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি।
রানাঘাট-২ ব্লকের চাপড়া, খরিদা চাপড়া, মাঝের চাপড়া, পূর্ণনগর, ধানতলা সহ বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের প্রধান জীবিকা কৃষিকাজ। ফুলচাষের জন্যই মূলত রানাঘাট-২ ব্লকের এইসব এলাকাগুলি বেশি পরিচিতি লাভ করেছে। ফুলচাষের পাশাপাশি ব্যাপকভাবে সব্জি ও কলা চাষ করা হয়। সোমবার রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি, ঝড় ও মঙ্গলবারের শিলাবৃষ্টিতে ফুল চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা, রজনীগন্ধা, গোলাপ চাষিরা কীভাবে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। বাজারে ফুলের চাহিদা অনুযায়ী জোগান কম থাকায় দাম বাড়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
মাঝেরচাপড়ার এক চাষি নরেশ মণ্ডল বলেন, অনেক কষ্ট করে প্রায় আড়াই বিঘা জমিতে চন্দ্রমল্লিকার চাষ করেছি। বর্তমানে বাজারে চাহিদাও ছিল বেশ ভালো। ফুল গাছগুলিতে কুঁড়ি এসেছে সবে। কিন্তু হঠাৎ শিলাবৃষ্টির কারণে সবটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ওই জমি থেকে আর ফুল নিয়ে বাজারে বিক্রির পরিস্থিতি নেই।
শিলাবৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ের দাপটে নষ্ট হয়েছে বিঘার পর বিঘা রজনীগন্ধা ফুলের জমিও। বিয়ের মরশুম চলায় বাজারে রজনীগন্ধা ফুলের চাহিদা রয়েছে যথেষ্ট। কিন্তু দু’দিনের বৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে রজনীগন্ধা ফুলের চাষের জমিতে একটাও গাছ দাঁড়িয়ে নেই, গাছের গোড়ার দিক থেকে ভেঙে পুরোপুরি মাটিতে শুয়ে পড়েছে গাছ। ফুল চাষি রাজীব বিশ্বাস বলেন, চাপড়া সহ অধিকাংশ এলাকার ফুল চাষিরা বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠী বা সমবায় থেকে টাকা ঋণ নিয়ে ফুলের চাষ করেন। কিন্তু হঠাৎ এই শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ের জন্য সব শেষ। কী করে ঋণের টাকা ফেরত দেব তা বুঝে উঠতে পারছি না। এলাকার চাষি বিশ্বনাথ বিশ্বাস, বিকাশ বিশ্বাসরা বলেন, জমিতে যেতে পারছি না। চোখে জল আসছে। আমরা সর্বস্বান্ত হলাম।
ফুল চাষের পাশাপাশি রানাঘাট -১ ও ২ ব্লকের সব্জি ও কলা চাষের ক্ষেত্রে ও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা। রানাঘাট-১ ব্লকের হবিবপুর, গড়ের বাগান, আইশতলা সহ একাধিক এলাকাতেও ঝড়ের কারণে নষ্ট হয়েছে বিঘার পর বিঘা কলা বাগান। কোথাও গাছ ভেঙেছে মাঝখান থেকে, কোথাও আবার মাটি থেকে উপড়ে পড়েছে গাছ।