সন্তানের স্বাস্থ্যহানির জন্য মানসিক অস্থিরতা ও উদ্বেগ। ক্রমোন্নতি ও প্রশাসনিক ক্ষমতা ও দায়িত্ব বৃদ্ধি। বিদ্যায় ... বিশদ
২০২৩-এর ১৯ নভেম্বর আমেদাবাদে একদিনের বিশ্বকাপের ফাইনালে শেষবার দেশের হয়ে মাঠে নেমেছিলেন ভারতীয় স্পিডস্টার। তারপর চোটের থাবা, লন্ডনে অস্ত্রোপচার, দীর্ঘ রিহ্যাবের ঝক্কি সামলে বাংলার হয়ে রনজি ট্রফিতে প্রত্যাবর্তন। সকলেই ধরে নিয়েছিলেন দেরিতে হলেও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে ভারতীয় স্কোয়াডে যোগ দেবেন সামি। কিন্তু তা হয়নি। বরং পুনরায় মাথাচাড়া দেওয়া চোট তাঁর আন্তর্জাতিক কেরিয়ারকেই প্রশ্নের মুখে ফেলেছিল। কিন্তু আমরোহার পঁয়ত্রিশের ‘যুবক’ নাছোড়বান্দা। আনফিট তকমা নিয়ে কিছুতেই জাতীয় দলের জার্সিকে বিদায় জানাতে চান না তিনি। তাই জারি ছিল লড়াই। রনজির পর বিজয় হাজারে ট্রফি, ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স মেলে ধরার প্রবল ইচ্ছা। সেই সঙ্গে সময়ের সমীকরণ। অবশেষে ঘটে সামির প্রতীক্ষার অবসান। প্রথমে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজ দলে, তারপর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি স্কোয়াডেও জায়গা করে নেন তিনি। বলা ভালো, নির্বাচকদের এই সিদ্ধান্তই যেন তাঁর কাছে হয়ে উঠেছে জিয়নকাঠি। তিনি অস্তমিত সূর্যের মতো ঝলসে উঠতে চান আবারও। সুইংয়ে কুপোকাত করতে চান প্রতিপক্ষ দলের ব্যাটসম্যানদের। কিন্তু সামনে অনেক প্রতিকূলতা। বাঁ হাঁটুর চোট যে পুরোপুরি সারেনি, সেটা রবিবার ইডেনে পায়ে ব্যান্ডেজ বেঁধে প্র্যাকটিস করার মধ্যেই স্পষ্ট। প্রথমে কিছুক্ষণ জিম সেশন। তারপর হাল্কা স্ট্রেচিং সেরে বোলিং কোচ মর্কেলের নজরদারিতে একটানা চলল লেংথ বোলিং অনুশীলন। শরীর ভারী হয়েছে। পায়ে চোট রয়েছে। কিন্তু মনের জোর তো কমেনি। তিনি যেন ইডেনের ‘কোনি’। গ্যালারিতে খিদ্দা নেই তো কী হয়েছে, বহু লড়াইয়ের পোড় খাওয়া সৈনিক নিজেকেই হয়তো মনে মনে উজ্জীবিত করলেন, ‘ফাইট-সামি-ফাইট...’।
ইডেনের ঘড়ি টিকটিক করে এগিয়ে চলেছে। গতি বাড়ছে সামির বলের। রান আপও বাড়াচ্ছেন ধীরে ধীরে। একটা নেটে যখন স্পিনারদের বিরুদ্ধে রিঙ্কু নকিং করছিলেন, তখন পাশের নেটে হর্ষিত, নীতীশদের সঙ্গে হাত ঘুরিয়ে গেলেন সামি। বল দু’দিকেই স্যুইং করালেন। আউটও করলেন। ব্যাটসম্যানকে ইশারায় বোঝালেন, কোন কোন পজিশনে তাঁকে শট খেলতে হবে। তবে এদিন সামিদের পাশে দেখা গেল না অর্শদীপকে। রবিবার রাতে তাঁর কলকাতায় আসার কথা।
কামব্যাক মঞ্চে প্রথম দিনের অনুশীলনে সামিকে দেখে কিছুটা খুশি কোচ গৌতম গম্ভীর। বোলিং কোচ মর্নি মর্কেলও পিঠ চাপড়ে দিলেন বর্ষীয়ান পেসারের। কম্বিনেশন দেখে মনে হল, সব ঠিক থাকলে বুধবার ইডেনে সামি খেলতে পারেন। আসলে বুমরাহর চোট ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টকে প্রবল চাপে ফেলে দিয়েছে। বুমবুম যদি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতে না পারেন, তাহলে সামির অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে। তাই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজে সামিকে খেলিয়ে দেখে নিতে চাইছেন গম্ভীর। সুবিধা হল, সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে চার ওভার বল করতে হয়। ওয়ার্কলোড কম। তাতে সাপও মরবে লাঠিও ভাঙবে না। সামির ধকল কম হবে, আবার ম্যাচ প্র্যাকটিসও পাবেন। সেই অঙ্কই এখন কষা চলছে ভারতীয় শিবিরে।