অর্থপ্রাপ্তির ক্ষেত্রটি বেশ অনুকূল। ব্যবসা, পেশা প্রভৃতি সব কর্মেই কমবেশি উন্নতি ও প্রসারের যোগ। ধর্ম ... বিশদ
চলতি বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে বার বার যা বিরাট কোহলির ঘাতক হয়ে উঠেছে। পারথের দ্বিতীয় ইনিংসের সেঞ্চুরি বাদ দিলে বাকি চার ইনিংসে তাঁর সংগ্রহ মাত্র ২৬। এবং প্রতিবারই এই চ্যানেলে ফাঁদে ফেলে কোহলিকে ফিরিয়েছে অজিরা। কখনও জশ হ্যাজলউড, কখনও মিচেল স্টার্ক বা স্কট বোল্যান্ড একইভাবে ‘শিকার’ করেছেন তাঁকে। আর সেজন্যই সম্ভবত বক্সিং ডে টেস্টের আগে নেটে মনঃসংযোগের প্রতিমূর্তি দেখাল মহাতারকাকে। অফ-স্টাম্পের বাইরের করিডোরে ক্রমাগত বল করলেন হর্ষিত রানা, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণরা। আর কোহলি বল ছাড়ার অভ্যাসে রপ্ত হওয়ার সাধনায় লিপ্ত হলেন। স্টান্স নিলেন ক্রিজের সামান্য বাইরে। তারপর চতুর্থ-পঞ্চম স্টাম্পের লাইনে গুড লেংথ স্পট থেকে আসা বলগুলোয় দিলেন সংযমের পরীক্ষা। কিন্তু নেটে বল ছাড়ার সঙ্গে ম্যাচের ফারাক বিস্তর। কোহলির সামনে তাই মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ। নিজের সুনাম রক্ষার পাশাপাশি দলের আস্থার মর্যাদা দেওয়ার তাগিদও থাকছে।
অবশ্য একা কোহলি নন, মেলবোর্নে এই টেস্ট হয়ে উঠবে ভারতীয় ব্যাটারদের অ্যাসিড টেস্ট। যশস্বী জয়সওয়াল পারথের সেঞ্চুরি বাদ দিলে চরম ব্যর্থ। বারবার স্টার্ককে উইকেট দিচ্ছেন তিনি। শুভমান গিল যতক্ষণ থাকছেন, নির্ভরযোগ্য দেখাচ্ছে। কিন্তু তাঁর স্থায়িত্ব খুবই অল্প। এই দুই নবীনের উপর বড় রানের জন্য অনেকটাই নির্ভর করছে ভারত। কারণ, অধিনায়ক রোহিত শর্মা একেবারেই ছন্দে নেই। আর ঋষভ পন্থও বড় রানের মানসিকতা মেলে ধরতে ব্যর্থ।
ভারতীয় ব্যাটারদের মধ্যে সবচেয়ে জমাট অতি অবশ্যই লোকেশ রাহুল। শুরুতে বল ছাড়ছেন অনায়াসে। রক্ষণ দুর্ভেদ্য রাখছেন। বলে পালিশ তোলার ভূমিকা নিচ্ছেন। তারপর বল যত পুরনো হচ্ছে তত খোলস ছেড়ে বেরচ্ছেন। এই কন্ডিশনে এটাই রান পাওয়ার মন্ত্র। ৩০ ওভারের পর লাল কোকাবুরার জারিজুরি উধাও। তখন সিম-সুইং হচ্ছে না। ফলে টিকে থাকতে পারলে রান আসবেই। কিন্তু যশস্বী-গিলরা ততক্ষণ থাকলে তো!
টিম কম্বিনেশনও ভাবাচ্ছে ভারতকে। যশপ্রীত বুমরাহর উপর বড্ড চাপ পড়ে যাচ্ছে। এখনও পর্যন্ত তিন টেস্টে ২১ উইকেট নিয়েছেন তিনি। কিন্তু অজি শিবির জানে যে ‘বুমবুম’কে প্রথম স্পেলে সামলে দিতে পারলে ভারতীয় বোলিংকে শাসন করার রাস্তা পরিষ্কার। মহম্মদ সিরাজ ১৩ উইকেট নিলেও সেরা ছন্দে নেই। আকাশ দীপ অবশ্য ব্রিসবেনে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু চতুর্থ পেসার হিসেবে নীতীশ রেড্ডি রান আটকাতে পারেননি। গাব্বায় রবীন্দ্র জাদেজাও সেই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ। ফলে চতুর্থ পেসার হিসেবে প্রসিদ্ধকে খেলানোর ব্যাপারে ভাবছে টিম ম্যানেজমেন্ট। সেক্ষেত্রে ২০ উইকেট নেওয়ার জন্য ঝাঁপানো সম্ভব। কিন্তু পাঁচ বিশেষজ্ঞ বোলারে খেলা মানে নীতীশকে বাইরে রাখা। সেক্ষেত্রে ব্যাটিং গভীরতা কমবেই। এখনও পর্যন্ত ৪৪.৭৫ গড়ে ১৭৯ করেছেন ২১ বছর বয়সি। আট নম্বরে তাঁর উপস্থিতি প্রায়শই টপ-অর্ডারের ব্যর্থতাকে ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তাই নীতীশকে বসানো মানে দুঃসাহসী হয়ে ওঠা। দলে পরিবর্তনের সম্ভাবনা তাই নেই।
অস্ট্রেলিয়ার প্রথম এগারোয় অবশ্য দুটো বদল ঘটছেই। চোটের জন্য ছিটকে যাওয়া হ্যাজলউডের জায়গায় খেলবেন বোল্যান্ড। আর বাদ পড়া ওপেনার নাথান ম্যাকসুইনির জায়গায় অভিষেক হচ্ছে স্যাম কনস্টাসের। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া আশাবাদী, প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে পাঁচ দিনে প্রায় আড়াই লক্ষ ক্রিকেটপ্রেমী হাজির হবেন গ্যালারিতে। পাঁচ ম্যাচের সিরিজ এখন ১-১। এই টেস্টে যারাই জিতবে তারা অন্তত সিরিজ হারবে না। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ওঠার অঙ্কও মাথায় রাখতে হচ্ছে দুই শিবিরকে। আর তাই উত্তেজনা ক্রমশ ছাপিয়ে যাচ্ছে বড়দিনের উৎসবকে।
খেলা শুরু বৃহস্পতিবার ভোর ৫টায়। সম্প্রচার স্টার স্পোর্টসে।