জলপথ পরিবহণ কর্মে বিশেষ শুভ। হস্তশিল্পী, হিসাব-শাস্ত্রবিদ প্রমুখের কর্মে উন্নতি ও সুনাম। মানসিক অস্থিরতা থাকবে। ... বিশদ
খঞ্চিতে এই রথযাত্রার বিশেষ আকর্ষণ হল হাইস্কুল ময়দানে মেলা। ভোরবেলায় পায়রা কেনাবেচা হয়। এছাড়াও বাঁশের ঝুড়ি, বাঁশের তৈরি গৃহস্থালির নানা সরঞ্জাম, মাদুর, চাটাই সহ গ্রামীণ কুটিরশিল্পের পসরা বসে। ওইসব জিনিস কেনার জন্য প্রচুর ভিড় জমে। এখানকার প্রাচীন রথযাত্রার সঙ্গে খঞ্চির মানুষের আবেগ জড়িয়ে আছে। রথ টানার সময় প্রচুর মানুষ তাতে শামিল হন। পারিবারিক গণ্ডি ছাপিয়ে এই রথযাত্রা এখন সর্বজনীন হয়ে উঠেছে।
মেলা কমিটির সদস্য রামশংকর চক্রবর্তী বলেন, ১০১০ বঙ্গাব্দে এই রথযাত্রার সূচনা করেন খঞ্চির চক্রবর্তী পরিবারের পূর্বপুরুষ প্রয়াত লালবিহারী চক্রবর্তী। তখন থেকে মাঘী পূর্ণিমার তিথিতে আজও এই মেলা হয়ে আসছে। ২৫০ বছর আগে মেলার সরকারি অনুমতি পত্র সংরক্ষিত করে রাখা আছে। রথে অধিষ্ঠান করেন চক্রবর্তীর পরিবারের কুলদেবতা শ্রীশ্রী রসিকরাই জিউ ঠাকুর। দূর-দূরান্ত থেকে কয়েক হাজার মানুষের সমাগম হয় এখানে। ভক্তরা তাঁদের মানত করা বাতাসা, ফল হরির লুট দেন। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, দুই ২৪ পরগনা জেলা থেকেও ব্যবসায়ীরা স্টল নিয়ে মেলায় আসেন।
জানা গিয়েছে, এই মেলার সঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসও জড়িয়ে আছে। তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের বিদ্যুৎ বাহিনীর কেন্দ্র ছিল খঞ্চি। একটা সময় ব্রিটিশ পুলিসের গ্রেপ্তারি এড়াতে বিপ্লবীদের গোপনে একত্রিত হওয়ার মাধ্যম ছিল এই মেলা। চক্রবর্তী পরিবারের সদস্য প্রয়াত কালীকুমার চক্রবর্তী, প্রমথনাথ চক্রবর্তী, মন্মথনাথ চক্রবর্তী বিপ্লবীদের গোপনে সহযোগিতা করতেন। গ্রামের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মধ্যে অন্যতম সতীশচন্দ্র দত্ত, প্রহ্লাদ পাত্র, ধীরেন্দ্রনাথ ঘোড়ই প্রমুখ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই মেলা কমিটির সঙ্গে যুক্ত হন। এই মেলায় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের একত্রিত হওয়ার খবর ব্রিটিশ পুলিসের কাছে পৌঁছনোর পর এক বছর মেলা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন জেলা কালেক্টর। কিন্তু, সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত আবেগে সেই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায়নি।-নিজস্ব চিত্র