জলপথ পরিবহণ কর্মে বিশেষ শুভ। হস্তশিল্পী, হিসাব-শাস্ত্রবিদ প্রমুখের কর্মে উন্নতি ও সুনাম। মানসিক অস্থিরতা থাকবে। ... বিশদ
বিষ্ণুপুর হাসপাতালের সুপার শুভঙ্কর কয়াল বলেন, জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত এক বালককে মঙ্গলবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরিবারের কাছে জানতে পেরেছি, তিনমাস আগে কুকুরে কামড়ালেও অ্যান্টি র্যাবিস ভ্যাকসিন দেওয়া হয়নি। বাড়াবাড়ি হওয়ার পর হাসপাতালে আনা হয়। বুধবার সকাল ৮টা নাগাদ তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনমাস আগে ডাঙরপাড়া গ্রামে একটি পুকুরে মাছ ধরা হচ্ছিল। ঋজু অন্যান্যদের সঙ্গে তা দেখতে গিয়েছিল। পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকার সময় একটি কুকুর হঠাৎ ঝোপ থেকে বেরিয়ে এসে তাকে কামড়ে দেয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে প্রথমে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। পরে স্থানীয় এক ওঝার কাছে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, ওই ওঝা তেলপড়া দেন। তা ঋজুকে খাওয়ানো হয়। ক্ষতস্থানে রক্ত বন্ধ করার জন্য চুন লাগানো হয়। ওতেই ভালো হয়ে যাবে জানানোয় পরিবারের লোকজন বাড়ি ফিরে আসেন। পরবর্তীকালে ক্ষত শুকিয়ে যায়। যথারীতি সে স্কুলেও যায়। কিন্তু, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে ঋজুর মুখ দিয়ে লালারস বেরতে থাকে। খিঁচুনি শুরু হয়। অস্বাভাবিক আচরণ করে। গায়ে জল ছিটিয়ে দিলে আতঙ্কে ছটফট করতে থাকে। পরিস্থিতি দেখে রাতেই তাকে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার সকালে তার মৃত্যু হয়।
এদিন বিষ্ণুপুর হাসপাতালের সামনে মৃতের বাবা বুলেট লোহার আক্ষেপ করে বলেন, কুকুরে কামড়ালে স্থানীয় এক ওঝার কাছে নাকি রোগ ভালো হয়ে যায়। তাই শুনে ছেলেকে সেখানেই নিয়ে গিয়েছিলাম। হাসপাতালে চিকিৎসা করালে আমার ছেলেটাকে এভাবে চলে যেতে হতো না। কেন যে এমন ভুল করলাম! মৃতের পিসি সরস্বতী লোহার বলেন, আমরাও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেছিলাম। কিন্তু, আমাদের কথা না শুনে তেলপড়া খাইয়ে আর ক্ষতস্থানে চুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ঋজু ভালোই ছিল। ক্ষতস্থানের ঘাও শুকিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, মঙ্গলবার হঠাৎ মুখ দিয়ে লালারস বেরতে থাকে। অস্বাভাবিক আচরণ করছিল। জল গায়ে ছিটিয়ে দিলে ভয় পাচ্ছিল। সেটা দেখেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু, শেষ রক্ষা হয়নি।
ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সৌম্য সেনগুপ্ত বলেন, চিকিৎসা এত উন্নত হওয়ার পরেও মানুষ ওঝার কাছে যাচ্ছেন। বর্তমানে কুকুরে কামড়ানোর ভ্যাকসিন প্রত্যেকটি ব্লক হাসপাতালে পাওয়া যায়। তা সত্ত্বেও এরকম মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। এর জন্য নিরবিচ্ছিন্ন প্রচার ও সচেতনতা প্রয়োজন।
(শোকার্ত পরিবার। -নিজস্ব চিত্র)