জলপথ পরিবহণ কর্মে বিশেষ শুভ। হস্তশিল্পী, হিসাব-শাস্ত্রবিদ প্রমুখের কর্মে উন্নতি ও সুনাম। মানসিক অস্থিরতা থাকবে। ... বিশদ
বন্যা আর ঘাটাল—প্রায় সমার্থক। দীর্ঘদিনের এই অভিশাপ থেকে মুক্তির কোনও দিশা পাচ্ছিলেন না ঘাটালবাসী। সেই পঞ্চাশের দশকে প্রথমবার সংসদে সমস্যার কথা তুলে ধরেছিলেন তৎকালীন সাংসদ। তৈরি হয় একটি বিশেষ কমিটি। নেতৃত্বে ছিলেন মানসিংহ। ১৯৫৯ সালে ঘাটালের দুঃখ-দুর্দশা সরেজমিনে খতিয়ে সেই কমিটি মাস্টার প্ল্যানের প্রস্তাব দেয়। তারপর শিলাবতী, ঝুমি ও কংসাবতী দিয়ে অনেক জল গড়িয়ে গিয়েছে। পার হয়ে গিয়েছে নিরবচ্ছিন্ন ৩৪ বছরের বাম শাসনও। মাস্টারপ্ল্যান থেকে গিয়েছে ভোট রাজনীতির ‘গাজর’ হয়ে। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঐকান্তিক চেষ্টায় বাস্তবায়নের পথে এই মেগা প্রকল্প।
স্বভাবতই এদিন দুঃখ ভোলার আনন্দে মেতেছেন ঘাটালবাসী। রাস্তার মোড়ে, পাড়ায় দেদার চলেছে মিষ্টিমুখ। মুখ্যমন্ত্রীকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে মিছিল বের করে তৃণমূল। দেব বলছিলেন, ‘দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) যা কথা দেন, তা রাখেন। তিনি ঠিক এক বছর আগে কথা দিয়েছিলেন, রাজ্য সরকারের টাকা দিয়েই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তাবায়িত হবে। সেই কথাই বাজেটে টাকা বরাদ্দের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হল।’ সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন, ‘এবার দুই মেদিনীপুর জেলার দীর্ঘদিনের দুর্দশার অবসান হতে চলেছে। সমস্ত স্তরের মানুষের সহযোগিতা পেলে ২০২৮ সালের মার্চ মাসের মধ্যে এই মাস্টার প্ল্যানের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।’
মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটির সম্পাদক নারায়ণ নায়েক বলেন, ‘এতদিন কেন্দ্র মাস্টারপ্ল্যানের জন্য কিছু করেনি। রূপায়ণে এবার উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য। আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি। তবে, বর্ষার আগে শিলাবতীর নিম্ন অববাহিকা খনন করাটা জরুরি।’ এদিকে, মাস্টারপ্ল্যানে রাজ্যের বরাদ্দকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। দলের বিধায়ক শীতল কপাট বলেন, ‘টাকা মঞ্জুর হয়েছে শুনলাম। কিন্তু, বাস্তবে কী কাজ হবে এবং ৫০০ কোটি টাকার কতটা দলের নেতাদের পকেটে ঢুকবে, সেটাই দেখার বিষয়।
স্বাধীনতার আগে থেকেই প্রত্যেক বছর বর্ষার সময় থেকে অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার ১৬৫০ বর্গ কিমি এলাকা প্লাবিত হয়ে আসছে। প্রায় ২০ লক্ষেরও বেশি মানুষ এই সমস্যায় ভুক্তভোগী। কিন্তু, মাস্টারপ্ল্যানকে সামনে রেখে গত কয়েক দশক কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে অর্থ বরাদ্দ নিয়ে টানাপোড়েন চলে। দেব ২০১৪ সালে ঘাটালের সাংসদ হওয়ার পর থেকে বার বার ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে সংসদে সরব হয়েছিলেন। ২০২৩ সালে মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে কোনও আসার আলো দেখতে না পেয়ে তিনি হতাশ হয়ে পড়েন। তিনি দলকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, মাস্টারপ্ল্যান কার্যকর করার বিষয়ে ঘাটালের মানুষকে স্পষ্ট ধারণা দিতে না পারলে তিনি লোকসভায় প্রার্থী হবেন না। গত বছর ১২ ফেব্রুয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরামবাগের এক নির্বাচনী সভায় দেবকে সামনে রেখে রাজ্যের উদ্যোগেই মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন।