সন্তানের স্বাস্থ্যহানির জন্য মানসিক অস্থিরতা ও উদ্বেগ। ক্রমোন্নতি ও প্রশাসনিক ক্ষমতা ও দায়িত্ব বৃদ্ধি। বিদ্যায় ... বিশদ
হাসপাতালের সুপার বিপ্লব মণ্ডল বলেন, আবাসন দেখভালের দায়িত্ব পূর্তদপ্তরের। আমরা আবাসনগুলির সংস্কারের জন্য পূর্তদপ্তরকে চিঠি দিয়েছি।
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের মধ্যেই কয়েকটি আলাদা আবাসন রয়েছে। তারমধ্যে একটি চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের ও একটি ঝাড়ুদার কর্মীদের আবাসন আছে। দু’টি আবাসনই বহু পুরনো। একটি ১৯৮০-’৮৫ সালের মধ্যে তৈরি হয়। অন্যটি আরও আগে তৈরি হয়। চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের দোতলা আবাসনে দশটি ঘর রয়েছে। আর ঝাড়ুদারদের তিনতলা আবাসনে ১৪-১৫টি ঘর রয়েছে। কর্মীরা সেখানে সপরিবারে থাকেন। দু’টি আবাসনের অবস্থাই বেহাল হয়ে পড়েছে। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় আবাসনগুলি ক্রমশ ভেঙে পড়ছে। মাঝে একবার সংস্কার হলেও তা যথেষ্ট নয়।
আবাসনের বাসিন্দা রোশন সাউ, সুস্মিতা সাউ বলেন, প্রায়ই আমাদের ঘরের ছাদের চাঙর খসে পড়ছে। রান্নাঘরের অবস্থা আরও ভয়ঙ্কর। ছেলেপুলে নিয়ে খুব আতঙ্কে থাকি। বর্ষাকালে কোয়ার্টারের ছাদ দিয়ে জল চুঁইয়ে পড়ে। আমরা সুপারকে জানিয়েছি। হাসপাতাল থেকে কোয়ার্টার সংস্কারের জন্য পূর্তদপ্তরকে বহুবার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। আবাসনের অন্য এক বাসিন্দা সারদা রায় বলেন, কয়েকমাস আগে আমাদের সিলিং থেকে আচমকা ফ্যান খুলে পড়ে গিয়েছিল। বারান্দা থেকেও চাঙর খসে পড়ছে। জলের পাইপলাইনে মরচে ধরেছে। পূর্তদপ্তর বলছে আমাদের ফান্ডে টাকা নেই। টিভিতে দেখলাম, কলকাতায় আবাসন হেলে পড়েছে। কোনদিন আমাদেরও আবাসনও হেলে পড়বে। তখন সবার টনক নড়বে।
হাসপাতালের পুরনো আউটডোরের কাছে রয়েছে আরও একটি আবাসন। সেখানে হাসপাতালের ঝাড়ুদার পদের কর্মীরা থাকেন। দূর থেকে আবাসনটিকে দেখে হানাবাড়ি মনে হয়। দেওয়ালে আগাছা জন্মেছে। কোনও ঘরের দরজা খুলে বেরিয়ে আসছে। আবার কোনও ঘরের কংক্রিটের ঢালাই ভেঙে শিক বেরিয়ে আসছে। কর্মীরা ভবনটির বেহাল দশা নিয়েও সরব হয়েছেন। শিবু হরিজন বলেন, আসলে আমরা চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। তাই হয়ত পূর্তদপ্তর আমাদের আবাসন সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছে না। হাসপাতালের গাড়ির চালক গণেশ মল্লিক ও তাঁর স্ত্রী লক্ষ্মী মল্লিক বলেন, বারান্দার ছাদ থেকে বড় বড় চাঙর ভেঙে পড়ছে। রাতে ঘুম আসে না। সবসময় আতঙ্কে থাকি। আমাদের বেতন থেকে প্রতি মাসেই আবাসনের ভাড়া কেটে নেওয়া হয়। তবুও আমাদের বেহাল আবাসনেই থাকতে হচ্ছে। প্রায়দিনই সাপ বেরোয়। সব হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়লে তবে কি সবার টনক নড়বে?
বেহাল সরকারি আবাসনের বাসিন্দাদের বাজার থেকে পানীয় জল কিনে খেতে হচ্ছে। প্রতিদিন তাঁরা কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে পরিষেবা দিচ্ছেন। অথচ তাঁরা নিজেরাই এখন নিরাপদে থাকেন না।