সন্তানের স্বাস্থ্যহানির জন্য মানসিক অস্থিরতা ও উদ্বেগ। ক্রমোন্নতি ও প্রশাসনিক ক্ষমতা ও দায়িত্ব বৃদ্ধি। বিদ্যায় ... বিশদ
পুরুলিয়ার কংসাবতী দক্ষিণের ডিএফও পূরবী মাহাত বলেন, বাঘটি ঝাড়খণ্ডের দিকে রওনা দিয়েছে। জমশেদপুর বনবিভাগকে এব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। বাঘ চলে গেলেও ফের ফিরে আসার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আমরা সতর্ক রয়েছি। ঝাড়খণ্ড সীমান্তে জঙ্গল লাগোয়া এলাকার গ্রামগুলিতে সতর্কতা জারি করা হচ্ছে। গ্রাম পাহারার ব্যবস্থাও থাকছে।
শনিবার থেকে ভাঁড়ারিয়ায় শুরু হয় ৪৮ঘণ্টার জঙ্গল অভিযান। বনদপ্তর, স্থানীয় লোকজন মিলয়ে প্রায় ৪০০জন ১৪টি দলে ভাগ হয়ে অভিযানে নামে। বাজি ফাটিয়ে, হল্লা করতে করতে তারা জঙ্গল চষে বেড়াতে থাকে। জঙ্গল অভিযানে বেরিয়ে শনিবার বাঘের দেখা না পাওয়া গেলেও রবিবার অবশ্য দেখা মিলেছিল। বাঘটিকে ঝাড়খণ্ডের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাই করছিলেন বনদপ্তরের কর্তারা। কিন্তু, বনদপ্তরের কর্তাদের এই তত্পরতায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে বাঘটি। একবার তো পিছন ঘুরে গর্জনও করে ওঠে। তারপরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সোমবার বাঘটিকে কোনও বিরক্ত করাই হবে না।
সোমবার বাঘ ধরতে কোনও কসরতই করেননি বনদপ্তরের কর্তারা। কোনও বাজি পটকা ফাটানো নয়, তির ধনুক নিয়ে জঙ্গলে অভিযানও হয়নি। বরং বাঘকে ছেড়ে দেওয়া হয় তার নিজের মর্জির উপরেই। কেবল আড়াল থেকে নজর রাখা হয়। অনুসরণ করা হল তার পদচিহ্ন। পদচিহ্ন দেখে বনদপ্তরের কর্তারা নিশ্চিত, সোমবার সকালেই বাঘটি স্বেচ্ছায় বাংলা ছেড়ে ঝাড়খণ্ডে পৌঁছে গিয়েছে। তবে বাঘটির যা গতিবিধি, তাতে সে যেকোনও মুহূর্তে ফের বান্দোয়ান কিংবা ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ীর দিকেও চলে যেতে পারে বলে অনুমান করছেন বনদপ্তরের কর্তারা।
বাঘের পদচিহ্ন দেখে বনদপ্তরের কর্তাদের দাবি, সোমবার বাঘটি ভাঁড়ারিয়া থেকে জঙ্গল পথেই দুয়ারসিনীর কাছে কুচিয়া বিটের মাকপালি পৌঁছয়। সেখান থেকে হয়ে ঝাড়খণ্ডের তম্বুবুরু হয়ে আমবেড়ার দিকে গিয়েছে। ভাঁড়ারিয়া থেকে জঙ্গল পথে এসব এলাকার দূরত্ব ২০কিলোমিটার। বান্দোয়ানের কুচিয়া বর্ডার থেকে ঝাড়খণ্ডের দিকে বাঘটি পাঁচ সাত কিলোমিটার দূরেই অবস্থান করছে। অর্থাৎ, সে যে কোনও সময়েই বনদপ্তরের কর্তাদের চোখে ধুলো দিয়ে এদিকে চলে আসতেই পারে। তাই বাঘ ধরতে খাঁচা পাতা থেকে শুরু করে যা যা ব্যবস্থা ছিল, তা থাকছে।
প্রসঙ্গত, জিনাত যাওয়ার পর গত ৩১ ডিসেম্বর ফের ঝাড়খণ্ডের ঝাড়খণ্ডের চাণ্ডিল ও দলমা এলাকায় বাঘের আতঙ্ক ছড়ায়। গত ১১ জানুয়ারি ঝাড়গ্রামে, পরের দিন রবিবার পুরুলিয়ার বান্দোয়ানে বাঘের অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়। জঙ্গল থেকে বহু গোরু, ছাগলের দেহও উদ্ধার হতে থাকে। এরপর ১৮ জানুয়ারি বান্দোয়ানের যমুনাগোড়া এলাকায় প্রথম ট্র্যাপ ক্যামেরায় বাঘের ছবি ধরা পড়ে। বাঘ ধরতে গত এক সপ্তাহ ধরে কার্যত নাস্তানাবুদ হতে হয়েছিল বনদপ্তরের কর্তাদের। অবশেষে সোমবার স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন বনদপ্তরের কর্তারা।