নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: এক সময় পড়ুয়া ভর্তি থাকত স্কুলে। কচিকাঁচাদের ভবিষ্যৎ গড়ার পাঠ দিতেন শিক্ষকরা। পড়াশোনার ঝাঁপ কয়েক বছর আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন নবাবহাটের কাছে গোদা বাইপাসের বন্ধ ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মদ, গাঁজার আসর বসে। বাইপাসের ধারে থাকা জায়গা এখন অগ্নিমূল্য। তাই সেদিকেই কু-দৃষ্টি পড়েছে জমি হাঙরদের। প্রাথমিক কাজ তারা শুরু করে দিয়েছে। স্কুলের জায়গায় তারা জবরদখলকারীদের বসাচ্ছে। এরপরের ধাপ সেখানে বহুতল গড়ে তোলা। এমনটাই অনুমান করছেন স্থানীয়রা। তাঁরা বলেন, গোদা বা নবাবহাট এলাকায় জমির হাঙরদের দৌরাত্ম্যর কথা এলাকার কারও অজানা নয়। বন্ধ থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জায়গা গ্রাস করতে তাদের বেশি সময় লাগবে না। এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, বাম আমলের শেষের দিকে জুনিয়র গালর্স হাইস্কুলটি তৈরি হয়েছিল। প্রথম দিকে কয়েক বছর স্কুলটি ভালোই চলছিল। পরে পড়ুয়া সংখ্যা কমে যায়। এক সময় ছাত্রীর সংখ্যা ১০এর নীচে নেমে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত স্কুলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ধাপে ধাপে স্কুলের দরজা, জানালা, চেয়ার, টেবিল দুষ্কৃতীরা উধাও করে ফেলেছে। এখন শুধু ফাঁকা বিল্ডিং ও জমি রয়েছে। সেটাও উধাও করতে জমি মাফিয়ারা ঘুঁটি সাজাচ্ছে। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু কোনার বলেন, বিষয়টি জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে দেখছি। এরকম হয়ে থাকলে প্রশাসন অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। এক আধিকারিক বলেন, সরকারি জমি কেউ দখল করতে পারে না। বন্ধ স্কুলের জায়গা যদি কেউ দখল করে প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ নেবে।
যদিও শহরের বাসিন্দারা বলেন, বন্ধ থাকা স্কুলের জমি দখলের অভিযোগ আগেও উঠেছিল। একটি পুরনো স্কুলের বিল্ডিং এক বছর আগে ভেঙে ফেলা হয়। সেই জায়গাটি একটি ক্লাব কব্জা করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। সেই সময় প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ এবং বর্ধমান পুরসভা চিঠি দেয়। কিন্তু ওই পর্যন্তই। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সাহস কেউ দেখায়নি। তাই গোদা বাইপাসের ধারে থাকা বন্ধ স্কুলের জমি দখল হয়ে গেলেও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না তা নিয়ে অনেকেই সংশয়ে রয়েছেন। ওই এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, জমি দখলের পরিকল্পনা কিছুদিন আগে থেকে শুরু হয়েছে। অনেকেই বিষয়টি ভালোভাবে নিচ্ছে না। কিন্তু প্রতিবাদ করার সাহস কারও নেই। কেউ মুখ খুললেই জমি হাঙরদের লোকজনরা সেখানে হাজির হয়ে যায়। কংগ্রেস নেতা গৌরব সমাদ্দার বলেন, শাসক দলের মদতেই অবৈধ কাজ চলছে। শহরে সরকারি জমি দখল বহু আগে থেকে শুরু হয়েছে। বন্ধ থাকা ওই স্কুলের জমিটিও বেশি দিন পড়ে থাকবে না। তৃণমূল নেতা দেবু টুডু বলেন, দলের কেউ এসব করলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। অন্যায় কাজ করলে কেউ ছাড় পাবে না। -নিজস্ব চিত্র