স্ত্রীর শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে হঠাৎ সমস্যায় মানসিক চিন্তা ও উদ্বেগ। কাজকর্ম কমবেশি এগবে। অতিরিক্ত পরিশ্রমে ... বিশদ
ঝাড়গ্রামে লৌকিক দেবদেবীরা চিরায়ত প্রথায় আজও পূজিত হয়ে আসছেন। গ্ৰামের মানুষজন নিজেদের মতো করে দেবদেবীর পুজো করেন। চিঁড়ে, গুড়, দুধ, ঘি, কলা, ফলমূল শালপাতার ঠোঙায় ভরে দেবীর থানে অর্পণ করা হয়। পুজোয় নির্দিষ্ট কোনও মন্ত্র নেই। পুরোহিতেরও দরকার হয় না। দেবদেবীর কাছে মনের ইচ্ছে প্রকাশ করাই একপ্রকার পুজো। সকল স্তরের নারী ও পুরুষ ইচ্ছে করলে নিজেরাই লৌকিক দেবদেবীর পুজো করতে পারেন। ধরা-বাঁধা কোনও আচার ও নিয়ম নেই। জেলার মানুষের বিশ্বাস ঘৃতখাম গ্ৰামের মা কোঁদাই বুড়ি জাগ্ৰত দেবী। গ্ৰামের ডিহিথানের বিশাল বটবৃক্ষের নীচে তাঁর অধিষ্ঠান। যদিও তাঁর কোনও বিগ্ৰহ নেই। বটবৃক্ষের থান ঘিরে ভক্তরা তাঁর পুজো দেন। প্রতিবারের মতো মকর সংক্রান্তির পরের দিন এবারও ধুমধাম করে দেবীর পুজো হয়েছে। ভক্তরা পুজোর সামগ্ৰীর সঙ্গে মানত করা মুরগি ও ছাগ অর্পণ করেছেন।
ঝাড়গ্রাম ব্লকের গোলবান্দী গ্ৰামের বাসিন্দা শেফালি মাহাত বলেন, রীতি মেনে কোঁদাই মাকে চিঁড়ে, দই, কলা, শশা দিয়ে পুজো করেছি। মনোস্কামনা পূরণ হওয়ায় মায়ের থানে ছাগ অর্পণ করেছি। পিন্ডরা এলাকার বাসিন্দা গীতা মাহাত বলেন, দেবীর কাছে মুরগি মানত করেছিলাম। প্রতিবছর এই দিনে দেবীর থানে আসি। ঘৃতখাম গ্ৰামের বাসিন্দা জগদীশ মাহাত বলেন, জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষজন এখানে পুজো দিতে আসেন। পুজোর আগে ডিহি থানের সামনের খালের জলে ভক্তরা স্নান করেন। যৎসামান্য রীতি আচারেই দেবী সন্তুষ্ট হন। পরিবারের লোকজন বা নিকটআত্মীয় স্বজন যাঁদের নিখোঁজ হয়ে গেছেন, তাঁরাও এখানে পুজো দিতে আসেন। ভক্তরা বিশ্বাস করেন, দেবী হারিয়ে যাওয়া মানুষদের খুঁজে দেন।
নেদাবহড়া গ্ৰাম পঞ্চায়েতের প্রধান মিঠুন মান্ডী বলেন, জাগ্ৰত এই দেবীকে ঘিরে নানা মাহাত্ম্য ছড়িয়ে আছে, যার ব্যাখ্যা করা যায় না। দেবী শুধু মানুষের নয়, তিনি বনের পশুপাখি, প্রকৃতিরও রক্ষাকর্তী। জেলা পরিষদের সভাধিপতি চিন্ময়ী মারান্ডী এদিন বলেন, ঘৃতখামে দেবীর থানে আসা সৌভাগ্যের বিষয়। জঙ্গলমহলের মানুষ বহু যুগ ধরে লৌকিক দেবদেবীকে নিজেরাই পুজো করে আসছেন। চিরায়ত এই প্রথায় আজও কোন ছেদ পড়েনি। এই স্থানে পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে। সামনের দিনে যাতে সেটা করা যায়, তা দেখা হবে। -নিজস্ব চিত্র