স্ত্রীর শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে হঠাৎ সমস্যায় মানসিক চিন্তা ও উদ্বেগ। কাজকর্ম কমবেশি এগবে। অতিরিক্ত পরিশ্রমে ... বিশদ
বনদপ্তর সূত্রের খবর, জানুয়ারির শুরু থেকেই ঝাড়খণ্ডের চাণ্ডিল, দলমার একাধিক জায়গায় অজানা পশুর পায়ের ছাপে নতুন আতঙ্ক তৈরি হয়। এরপর শনিবার ঝাড়গ্রামের বাঁশপাহাড়ীর মনিয়ারডি গ্রামের কয়েকজন জঙ্গলে বাঘের দেখা পান বলে দাবি করেন। রবিবার ভাঁড়ারিয়া পাহাড়ের অদূরে যমুনাগোড়া এলাকায় নরম মাটিতে পায়ের ছাপ মেলে। সোমবার একই ধরনের ছাপ মেলে লাউপাল, উদলবনী গ্রাম সংলগ্ন ধানজমির আলে। মঙ্গলবার সকালে বোরোর নেকড়া, বেলডুংরির একাধিক এলাকায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যায়। কিন্তু বুধবার বাঘের কোনও পদচিহ্ন মেলেনি! তবে মঙ্গলবার বান্দোয়ানের গঙ্গামান্না, কুড়িয়াপাড়ায় বেশ কয়েকটি ছাগলের দেহ উদ্ধার হতেই বাঘের আতঙ্ক জোরালো হয়। এখনও নিখোঁজ রয়েছে বহু ছাগল।
পুরুলিয়া দক্ষিণের ডিএফও পূরবী মাহাত জানান, ‘যে ছাগলগুলি উদ্ধার হয়েছে সেগুলির দেহের পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছে। ছাগলের শরীরে কামড় ও আঁচরের যে চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে তা বাঘের না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। বরং নেকড়ে কিংবা হায়না জাতীয় প্রাণীরা ওভাবে শিকার করে। বাঘের শিকারের কায়দা আলাদা।’ তার মানে যে জঙ্গলে বাঘ আসেনি, একথা বলছেন না বনকর্তারা। পূরবীদেবী বলেন, ‘যে পায়ের ছাপ পাওয়া গিয়েছে, তা বাঘেরই। শুধুমাত্র ছাগলের দেহে বাঘের শিকারের চিহ্ন মেলেনি।’ তবে, বাসিন্দাদের অনেকেরই মনে প্রশ্ন, জঙ্গলে অন্যান্য হিংস্র বন্যজন্তু তো আছেই। কিন্তু একসঙ্গে এত ছাগলের দেহ তো আগে উদ্ধার হয়নি? এক বনকর্তার জবাব, হতে পারে বাঘের উপস্থিতি টের পেয়ে অন্য বন্য জন্তুগুলি জঙ্গলের একদিকে চলে এসেছে। তারাই এক কাণ্ড ঘটিয়েছে। তাছাড়া এখনও তো একাধিক ছাগল নিখোঁজ রয়েছে। হতে পারে সেগুলি বাঘের জিম্মায় রয়েছে। জঙ্গলে শিকারের জন্য অন্যান্য বন্যাজন্তুরও তো অভাব নেই।
বাঘ ধরতে মঙ্গলবার সাতসকালেই বান্দোয়ানে এসে পৌঁছেছে সুন্দরবনের বিশেষজ্ঞ দল। রাতে তিনটি খাঁচাও পাতা হয়। ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করতে জঙ্গলে প্রস্তুত ছিল শার্প শ্যুটার। যদিও টোপ গেলেনি বাঘ। বুধবারেও বনদপ্তরের অন্যান্য কর্মীরা মিলে জঙ্গলের বিভিন্ন এলাকা চষে বেড়িয়েছেন। কার্যত গোরু খোঁজা খুঁজেও বাঘের কোনও হদিশ মেলেনি। বাঘের গলায় রেডিও কলার না থাকায় এত বেগ পেতে হচ্ছে। এক বনকর্তার কথায়, রাইকা, ভাঁড়ারিয়া সহ বান্দোয়ানের এইসব পাহাড় ও জঙ্গল এলাকায় বহু গুহা রয়েছে। রয়েছে পর্যাপ্ত খাবারও। হতে পারে ভূরিভোজ সেরে বাঘ সেখানেই ডেরা বেঁধেছে। রাতটা না কাটলে কিছুই বলা সম্ভব হচ্ছে না। আর এক বনকর্তা বলেন, গভীর জঙ্গলের পাথুরে এলাকায় বাঘের পায়ের ছাপ পাওয়া সম্ভব নয়। ফলে বাঘ পাহাড়ী পথেই জিনাতের খোঁজে জঙ্গল ছেড়ে অন্যত্র গিয়েছে কিনা তাও বলা সম্ভব হচ্ছে না।