দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় থেকে অর্থাগম ও পুনঃ সঞ্চয়। কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি বা নতুন কর্ম লাভের সম্ভাবনা। মন ... বিশদ
মালদহে পর্যটনের বিকাশের নতুন দিশা প্রসঙ্গে জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া বলেন, পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে বেশকিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
ঐতিহাসিক দিক থেকে মালদহ উত্তরবঙ্গ তথা রাজ্যের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি জেলা। এখানে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান ছড়িয়ে আছে। মালদহের একপ্রান্তে রয়েছে ঐতিহাসিক গৌড়। যা এক সময় বাংলার রাজধানী ছিল। বর্তমানে গৌড়ের ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি নগর এখানকার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী অঞ্চলে রয়েছে। ইতিহাসের পাতায় যা লক্ষণাবতী বা লখনৌতি নামে পরিচিত। লুকোচুরি দরজা নামে পরিচিত গৌড়ের মূল ঐতিহাসিক প্রবেশদ্বার প্রায় ৬০০ বছরের ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে। কাছেই রয়েছে রামকেলির বিখ্যাত মন্দির। শ্রীশ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ৫০০ বছর আগে পায়ে হেঁটে মালদহে এসেছিলেন। এই রামকেলিতে তিনি বিশ্রাম নেন। এখানে তাঁর পায়ের ছাপ রয়েছে। প্রতি বছর রামকেলিতে এক বিশাল মেলা আয়োজিত হয়। যা সনাতন ধর্মের অন্যতম তীর্থকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এই রামকেলিতেই প্রতি বছর বড় মেলা বসে। পাশেই মহদিপুরে রয়েছে ভারত ও বাংলাদেশের স্থলবন্দর।
মালদহ মার্চেন্টস অব চেম্বারের সহ সভাপতি কমলেশ বিহানী বলেন, গৌড় নামে মালদহে একটি রেলস্টেশন আছে। আমরা আমাদের সংগঠনের তরফে এখানে বেশকিছু দূরপাল্লার ট্রেনের স্টপেজের জন্য প্রশাসনকে প্রস্তাব দিয়েছি। যা গৌড়কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা পর্যটনশিল্পকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
ঠিক একই ভাবে মালদহের উত্তর প্রান্তে গাজোলে রয়েছে দেশের বহু প্রাচীন স্থাপত্যগুলির মধ্যে অন্যতম সাড়ে ৬০০ বছরের পুরনো আদিনা মসজিদ। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জগজীবনপুরে রয়েছে বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষ। সেখানে ইতিমধ্যেই একটি সংগ্রহশালা তৈরি করা হয়েছে। সেই সংগ্রহশালাটিকেও আধুনিক রূপে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে প্রশাসন।
মিষ্টির দিক থেকেও মালদহ যথেষ্ট ঐতিহ্যবাহী। এখানকার কানশাট, মনোহরা,রসকদম্ব রাজ্যের মধ্যে বিখ্যাত। ইতিমধ্যেই এখানকার বিখ্যাত মিষ্টি রসকদম্বের জিআই ট্যাগের দাবি নিয়ে সরব হয়েছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ। এরসঙ্গে রয়েছে মালদহের জগৎবিখ্যাত আম। হিমসাগর, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, ফজলি, আশ্বিনা এখানকার অন্যতম বিখ্যাত আম। সারা দেশ তথা পৃথিবীতে মালদহ আমের শহর বা ম্যাঙ্গো সিটি হিসেবে পরিচিত। মালদহের আমসত্ত্ব দেশের বাইরেও খ্যাতি অর্জন করেছে। এছাড়াও মালদহের দুই প্রান্ত দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে গঙ্গা ও মহানন্দা। যাকে ঘিরেও গ্রামীণ পর্যটনের অসংখ্য সম্ভাবনা রয়েছে মালদহতে। এই সমস্ত বিষয়গুলিকে তুলে ধরে দেশে পর্যটন শিল্পে আরও পাকাপোক্ত জায়গা করে নিতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করছে জেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবারের প্রশাসনিক বৈঠকে টি ট্যুরিজমের আদলে ম্যাঙ্গো ট্যুরিজম নিয়েও আলোচনা হয়। প্রশাসনের তরফে মালদহ জেলায় ৫০ থেকে ৬০ একর জমিতে গড়ে ওঠা আমবাগানগুলিকে চিহ্নিত করা এবং সেখানে পিপিপি মডেলে ইকো ট্যুরিজম গড়ে তোলার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
(পর্যটনের প্রসারে বৈঠক জেলাশাসকের। - নিজস্ব চিত্র।)