অর্থপ্রাপ্তির ক্ষেত্রটি বেশ অনুকূল। ব্যবসা, পেশা প্রভৃতি সব কর্মেই কমবেশি উন্নতি ও প্রসারের যোগ। ধর্ম ... বিশদ
জন্মদিনে দাদা ডাব্লুকে বাড়ি নিয়ে আসতে কোচবিহারে গিয়েছিলেন খুড়তুতো বোন শিবানী রায়। সন্ধ্যা থেকে দাদার জন্য দীর্ঘ অপেক্ষাও করেন। দেরি হচ্ছে জেনে বউদিকে ফোন করতে বলেন। আর তাতে মিলল দুঃসংবাদ। শিবানীর ভাই ডিম্পল দাদার জন্মদিনে ফল নিয়ে আসে। কিন্তু দুসংবাদ শুনে দাদার দেহ আনতে ছুটে যায় কোচবিহারের মর্গে। সব মিলিয়ে আনন্দ-উত্সবে মুখরিত হয়ে ওঠার বাড়িতে এখন শুধুই নীরবতা।
ডাব্লু রায় কোচবিহার দুই ব্লকে রেভিনিউ ইন্সপেক্টর হিসেবে ভূমিদপ্তরে কর্মরত ছিলেন। কোচবিহার শহরে ভাড়া বাড়িতে বউকে নিয়ে থাকতেন তিনি। রবিবার পাড়ায় কীর্তন ছিল। এই সময় মায়ের সঙ্গে শেষবার কথা হয়েছিল ডাব্লুর। প্রতি রাতের মতো সোমবারও ছেলের ফোনের অপেক্ষায় ছিলেন মা। ফোন এসেছিল। তবে সেটি ডাব্লুর মৃত্যু সংবাদের। ছেলে ক্লাস সেভেনে পড়াকালীন স্বামীকে হারিয়েছিলেন অলকা রায়। এবার সন্তানহারা হয়ে শোকে পাথর তিনি। বলেন, ওর বাবা চলে যাওয়ার পর অনেক কষ্ট করে ছেলেকে মানুষ করেছি। চাকরি পাওয়ায় সংসারের হাল ফিরছিল। সেই ছেলেও চলে গেল। এখন আমার কেউ থাকলো না। তিল তিল করে গড়ে তোলা সংসারে এখন তিনি একাই। জা, বৌমা, দেওরের ছেলে-মেয়ে এখন তাঁর ভরসা।
কাকার মৃত্যুর পর এক ছেলে ও মেয়ের লেখাপড়ার দায়িত্ব সামলাতেন ডাব্লু। সেই অভিভাবক সমতুল্য দাদার জন্মদিন ছিল মঙ্গলবার। কোচবিহার কলেজে পড়তে গিয়ে দাদার বাড়িতে পৌঁছে যান কাকার মেয়ে শিবানী। অফিস থেকে দাদা ফিরলেই বউদি সহ দাদাকে নিয়ে গ্রামে ফিরে আসার কথা ছিল তাদের। কিন্তু, অফিসের সময় গড়িয়ে গেলেও ডাব্লু ফেরেননি। এরপর তাঁর মোবাইলে ফোন করতেই মেলে মৃত্যু সংবাদ। ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে শয্যাশায়ী হন ডাব্লুর মা। তাঁকে সামলাচ্ছেন আত্মীয়-স্বজনরা।
মৃতের কাকিমা কল্পনা বর্মনরায়ের কথায়, বাবা মারা যাওয়ার পর কাকা ছেলের মতই মানুষ করেছে সবাইকে। ওর কাকাও চলে গিয়েছেন। এখন দুই জা একসঙ্গেই চলি। ডাব্লুই আমার ছেলে-মেয়ের অভিভাবক ছিল। আমার মেয়ে ওদের গ্রামে ফিরিয়ে আনতে কোচবিহার গিয়েছিল। জন্মদিনে ডাব্লু নয়, ওঁর মৃতদেহ বাড়ি এল।