নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: পৃথিবীর কোনও মিউচুয়াল ফান্ড পারবে না। কোনও সরকারি-বেসরকারি লগ্নি পারবে না। সাধারণ সাদা চোখে দেখা যায়, এমন কোনও ব্যবসাও পারবে না। কয়েক বছরের মধ্যে অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৩ হাজার শতাংশ বাড়িয়ে দিতে পারবে একমাত্র বিজেপি। দুনিয়ার তাবৎ বিজনেস ম্যানেজমেন্ট স্কুল এবং ইনভেস্টমেন্ট স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রতিষ্ঠান আপাতত হন্যে হয়ে খুঁজছে একজনকে। তাঁর নাম পরবেশ ভার্মা। সোমবার বিজেপিকে আক্রমণ করে এই ব্যঙ্গোক্তি আম আদমি পার্টির। দিল্লি সরকারের মন্ত্রী তথা আপের হাই প্রোফাইল নেতা সৌরভ ভরদ্বাজ সোমবার বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ করে বলেছেন, মাত্র ৫ বছরে বিজেপির দু’বারের এমপি পরবেশ ভার্মার মোট সম্পত্তি বেড়েছে ১১,৫০০ শতাংশ। ১৭ লক্ষ টাকা বার্ষিক আয় দেখানো বিজেপি নেতার সম্পদ সাত বছরে বেড়ে হয়েছে ১১৫ কোটি টাকার। আর ৩ হাজার শতাংশ বেড়েছে শুধুমাত্র অস্থাবর সম্পদ। অর্থাৎ টাকা, গয়না, শেয়ারের কাগজ, মিউচুয়াল ফান্ড, ফিক্সড ডিপোজিট ইত্যাদি। পরবেশ ভার্মার ব্যক্তিগত বা পারিবারিক মালিকানায় কর্পোরেট কোম্পানি নেই। একজন এমপির বেতন অথবা ভাতা কত, সেটাও খোলা পাতা। সৌরভ ভরদ্বাজ বলেছেন, ‘এই ম্যাজিকের রহস্য কী? শুধু পরবেশ ভার্মা নন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলরাও এই মিরাকলের ব্যাখ্যা দিন ভারতবাসীকে। এই ফর্মুলায় একা পরবেশ ভার্মারই আর্থিক উন্নতি হবে, আর আম জনতা কিছুই জানতে পারবে না... এটা তো উচিত নয়!’ ভোটের আবহে এই বিস্ফোরক তথ্য নিয়ে আম আদমি পার্টি প্রচারে নেমেছে। কোণঠাসা করছে বিজেপিকে। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই পরবেশ ভার্মা সাধারণ নেতা নন। বিজেপির প্রাক্তন নেতা তথা প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী সাহিব সিং ভার্মার পুত্র। আসন্ন ভোটে তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে নয়াদিল্লি কেন্দ্র থেকে। অর্থাৎ অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে বিজেপির বাজি তিনি। কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, জিতলে পরবেশই হবেন বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী।
দিল্লির বিধানসভা ভোট ৫ ফেব্রুয়ারি। বাংলা আর দক্ষিণের কিছু রাজ্য বাদ দিলে ধনী, দরিদ্র, ক্ষুদ্র, বৃহৎ, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যেই সরকার গড়তে সক্ষম হয়েছে এনডিএ। কিন্তু দিল্লি? বিজেপির কাছে অভিশপ্ত। শত চেষ্টা করেও ২৭ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরেই থেকে গিয়েছে বিজেপি। নরেন্দ্র মোদি যে শহরে বাস করেন, সেই রাজ্যই তাঁর হাতছাড়া। সুতরাং বিজেপি এবার মরিয়া। এমন এক হাই ভোল্টেজ ভোটের প্রাক্কালে পরবেশ ভার্মার ২০১৯ সালের নির্বাচনী তথ্য তুলে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে আপ। দেখা যাচ্ছে, তাঁর অস্থাবর সম্পদের অঙ্ক সাড়ে ৩ কোটি টাকা। আর সম্প্রতি মনোনয়ন পেশের সময় তিনি যে সম্পত্তি ঘোষণা করেছেন, সেখানে ওই সম্পত্তি হয়েছে সাড়ে ৯৬ কোটি টাকা! স্থাবর সম্পত্তি ছিল ১২ কোটির। অর্থাৎ বাড়ি, ফ্ল্যাট, জমি। সেটা হয়েছে ২০ কোটি টাকার। ২০১৮ আর্থিক বছরে পরবেশ ভার্মার বার্ষিক আয় ছিল ১৭ লক্ষ টাকা। এখন ২০ কোটি টাকা। সৌরভ ভরদ্বাজের কটাক্ষ, বিজেপি যদি একবার এই ফর্মুলা বলে দেয়, ভারতের দারিদ্র্য কমে যাবে।