অর্থপ্রাপ্তির ক্ষেত্রটি বেশ অনুকূল। ব্যবসা, পেশা প্রভৃতি সব কর্মেই কমবেশি উন্নতি ও প্রসারের যোগ। ধর্ম ... বিশদ
অমিত শাহের বেফাঁস মন্তব্যে বিজেপি কয়েকদিন ধরেই দিশাহারা ছিল। এবার তার আঁচ পড়ছে সরকারেও। কারণ, প্রকাশ্যে মন্তব্য না করলেও মোদি সরকারের আয়ুর প্রধান দুই স্তম্ভ নীতীশ কুমার এবং চন্দ্রবাবু নাইডু বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা এই ইস্যুতে প্রবল ক্ষুব্ধ। আর তাতে অস্বাভাবিক কিছু নেই। কেন? এই দুই মুখ্যমন্ত্রীর দলের প্রধান ভোটব্যাঙ্কই হল অনগ্রসর এবং দলিত সমাজ। অন্ধ্রপ্রদেশের গোদাবরী অঞ্চলজুড়ে অন্তত ৪০টি বিধানসভা কেন্দ্র দলিত প্রভাবিত। আটটি লোকসভা কেন্দ্রের জয়-পরাজয় নির্ধারণ করে দলিত ভোট। কুর্মি ও কৈরী ছাড়াও মহাদলিত ভোটব্যাঙ্ক সাম্প্রতিক লোকসভা ভোটে নীতীশ কুমারের জয়ের কারিগর। আগামী বছরও তাঁর ভাগ্য নির্ভর করছে এই অংশের উপর। অতএব ‘বাবাসাহেব আম্বেদকরের নাম নেওয়া আজকাল ফ্যাশন হয়েছে’ মন্তব্য করা অমিত শাহের বিবৃতির দায় যে শেষমেশ তাঁর উপরও আসতে চলেছে, বিহার ভোটের আগে সেই আশঙ্কা যথেষ্ট রয়েছে নীতীশের। আর তাই তাঁর দলের এমপিরা ক্ষোভের বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন মোদি সরকারের কাছে। সঙ্গী চন্দ্রবাবুর দল। এই ইস্যুতে পরিস্থিতি যে হাতের বাইরে যাচ্ছে, সেটা বুঝেই শরিকদের সন্তুষ্ট করতে আজ এনডিএ’র বৈঠক ডেকেছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। শুধু এই জোট বৈঠকে হাজির থাকতেই দিল্লি এসেছেন চন্দ্রবাবু নাইডু। বৈঠকের এজেন্ডা হিসেবে দেখানো হচ্ছে ওয়াকফ সম্পত্তি বিল, ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেকশন এবং জোট সমন্বয়ের স্ট্র্যাটেজি নির্ধারণকে। কিন্তু প্রকৃত ইস্যু? আম্বেদকর।
সংসদে অমিত শাহের ওই বিতর্কিত মন্তব্যের পর থেকেই দেশজুড়ে আন্দোলনে নেমেছে বিরোধীরা। বাংলার তৃণমূল কংগ্রেস থেকে তামিলনাড়ুর ডিএমকে। বিহারে আরজেডি এবং উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি। এবং অবশ্যই কংগ্রেস। ইন্ডিয়ার তাবৎ শরিক রাস্তায়। মোদি সরকার এবং বিজেপিকে ‘আম্বেদকর ও দলিত বিরোধী’ আখ্যা দিয়ে চলছে প্রচার এবং লাগাতার অমিত শাহের ইস্তফা দাবি। বিরোধীদের এই প্রচার যে দেশের দলিত সমাজকে প্রভাবিত করছে এবং ভোটব্যাঙ্কের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে, সেটাও স্পষ্ট। আর এই ইঙ্গিত পেয়েছেন বলেই বিজেপি-সখ্য ভুলে নিজের অস্তিত্ব রক্ষায় সরব হয়েছেন মায়াবতী। লখনউতে তাঁর দল বহুজন সমাজ পার্টি মঙ্গলবার বিক্ষোভ দেখিয়েছে বিজেপির বিরুদ্ধে। দাবি করেছে, অমিত শাহের পদত্যাগ চাই। রাজ্যে রাজ্যে একটাই অভিযোগ—শাহকে সমর্থন প্রমাণ করে যে, বিজেপি আম্বেদকর বিরোধী।
এক ‘সংবিধান খতরে মে হ্যায়’ প্রচারেই কয়েক মাস আগে নরেন্দ্র মোদির চারশো পার স্বপ্ন ভেঙে গিয়েছিল। এবার আম্বেদকরকে অপমানের অভিযোগ। অতএব মোদি দিশাহারা। তারই প্রমাণ, তড়িঘড়ি এনডিএ বৈঠক। কোনও ইস্যুতে জোট শরিককে তুষ্ট করতে বৈঠক ডাকা হয়েছে, এরকম নজির ‘মোদি ওয়ান’ এবং ‘মোদি টু’ জমানায় নেই। এখন দেখা যাচ্ছে কেন? কারণ, তৃতীয় মোদি সরকারে শরিকরাই রিমোট কন্ট্রোল। তাই সরকার বাঁচানো প্রধান দায়! মৃত্যুর ৬৮ বছর পরও বাবাসাহেব প্রমাণ করছেন, তাঁর নাম আজও শক্তিশালী। ভীত বিশ্বগুরুও!