অর্থপ্রাপ্তির ক্ষেত্রটি বেশ অনুকূল। ব্যবসা, পেশা প্রভৃতি সব কর্মেই কমবেশি উন্নতি ও প্রসারের যোগ। ধর্ম ... বিশদ
মোদি জমানায় ২০১৪ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত দেশের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টার দায়িত্ব সামলেছেন অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যম। জিএসটি চালু হয় ২০১৭ সালের জুলাই মাসে। এই ব্যবস্থার তিনিই ছিল অন্যতম কাণ্ডারী। কিন্তু জিএসটির নানাবিধ ফাঁকফোঁকর কখনও ঢেকে রাখার চেষ্টা করেননি সুব্রহ্মণ্যম। তিনিই বলেছিলেন, ‘জিএসটি ব্যবস্থায় নানারকম সেস মিলিয়ে প্রায় ৫০ রকমের কর আছে। যদি অন্যান্য করগুলির হিসেব করা যায়, তাহলে সেগুলির সংখ্যাই হবে প্রায় ১০০। কর-সন্ত্রাস এবং অতিরিক্ত করের বোঝা ভারতীয় সংস্কৃতির অন্যতম অঙ্গ। জিএসটি তা আরও এক ধাপ বাড়িয়ে দিয়েছে।’ ব্যবসায়ী মহলে জিএসটি নিয়ে অসন্তোষের আঁচ অব্যাহত। কিন্তু মোদির একদা আর্থিক উপদেষ্টাই যদি এ নিয়ে সরব হন, তা নজর করার মতো বটেই। সৌজন্যে, শেষ জিএসটি বৈঠক। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়েছেন, তাঁরা নোনতা পপকর্নে পাঁচ শতাংশ, প্যাকেটজাত ও লেবেলিং করা পপকর্নের ১২ শতাংশ এবং ক্যারামেল পপকর্নের উপর ১৮ শতাংশ জিএসটি রাখতে চান। সেই প্রেক্ষিতেই প্রাক্তন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বলেন, ‘করকাঠামোর সরলীকরণের জন্য জিএসটি চালু করা হয়েছিল। এই ধরনের সিদ্ধান্ত সেই উদ্দেশ্যই নষ্ট করে দিচ্ছে। আসলে আমরা সরলীকরণের নামে আরও জটিলতার দিকে এগচ্ছি। এটা যুক্তির ঊর্ধ্বে। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’
জিএসটি নিয়ে এমনিতেই সমালোচনার অন্ত নেই। বিরোধীরা তো বটেই, দেশের বণিকমহলের একাংশও বারবার মোদি সরকারের চালু করা জিএসটি ব্যবস্থার সমালোচনা করেছে। এমন বহু পণ্য রয়েছে, যা সাধারণ মানুষের রোজকার প্রয়োজনে লাগে। তাতেও জিএসটির বোঝা চেপে রয়েছে। তার উপর অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, কোনও পণ্যে যদি অতিরিক্ত চিনি থাকে (অ্যাডেড সুগার), তার জন্য আলাদা কর গুনতেই হবে। এছাড়া বিমায় জিএসটি নিয়ে বিতর্ক তো চলছেই। এই কর ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে গরিবের নাভিশ্বাস আর ব্যবসায়ীদের কপালের ভাঁজ বাড়ানো নিয়ে সুব্রহ্মণ্যমের প্রতিক্রিয়া ছিল, ‘জটিলতাতেই ব্যুরোক্র্যাটদের আনন্দ, আর সাধারণের দুঃস্বপ্ন।’ দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় সত্ত্বেও অবশ্য জিএসটি কাউন্সিল দেশবাসীকে সুরাহা কিছু দিতে পারছে না। উপরন্তু জটিলতা বাড়ছে। সেই কারণেই বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছেন মোদিরই প্রাক্তন উপদেষ্টারা। বিরোধীরা বলছে, এই জমানায় অর্থনীতির গোড়াই ক্ষয়ে যাচ্ছে। আর প্রধানমন্ত্রী ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। আচ্ছে দিন সত্যিই সাধারণ মানুষের জন্য আসছে তো?