সপরিবারে অদূরবর্তী স্থানে ভ্রমণে আনন্দলাভ। কাজকর্মে কমবেশি ভালো। সাহিত্যচর্চায় আনন্দ। ... বিশদ
জয়পুরে আয়োজিত ‘রামরথ অযোধ্যা যাত্রা দর্শন পূজন সমারোহ’ নামক একটি অনুষ্ঠানে ইন্দ্রেশ কুমার বললেন, ‘যাঁরা রামচন্দ্রের ভক্ত, তাঁরা ক্রমেই অহঙ্কারী আর উদ্ধত হয়ে পড়েছেন। তাই রামচন্দ্রই তাঁদের শাস্তি দিয়েছেন। যাঁরা নিজেদের দলকে বিশ্বের বৃহত্তম বলে আখ্যা দিয়েছিল, তাঁরা নিজেরাই লোকসভা ভোটে গরিষ্ঠতা পেল না! ২৪০-এর মধ্যে আটকে যেতে হল! প্রভু রামচন্দ্র নিজেই তাঁদের ২৪০ এর মধ্যে আটকে দিয়েছেন।’ এর আগে মোহন ভাগবত বলেছিলেন, ‘প্রকৃত স্বয়ংসেবক কখনও উদ্ধত হয় না।’ সেই ভাবনার প্রতিফলন মিলেছিল ‘অর্গানাইজারে’। প্রবন্ধে তীব্র আক্রমণ করে ভোটে বিজেপির বিপর্যয়ের জন্য দায়ী করা হয়েছিল অহঙ্কারকে। ওই প্রবন্ধে ৪০০ পারের কটাক্ষকেও অবশ্য ছাপিয়ে গিয়েছে ইন্দ্রেশ কুমারের মন্তব্য। খাস অযোধ্যায় বিজেপির পরাজয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘লাল্লু সিংকে প্রভু রামচন্দ্র আদেশ দিয়েছেন, আপাতত পাঁচ বছর চুপ করে বসে থাকো।’ কে এই লাল্লু সিং? অযোধ্যা যে লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত, সেই ফৈজাবাদের এমপি ছিলেন এবং এবারও বিজেপির টিকিট পেয়েছিলেন। তাঁকে পরাস্ত করেছেন সমাজবাদী পার্টির দলিত নেতা অবধেশ প্রসাদ। এ নিয়ে বিজেপি প্রবল বিব্রত। আরএসএস কর্তা বলেছেন, ‘রামচন্দ্রের বিধান দেখুন। যাঁরা নিজেদের রামচন্দ্রের ভক্ত বলে প্রচার করে ঔদ্ধত্যের চরম সীমায় পৌঁছে গিয়েছেন, তাঁরাই গরিষ্ঠতা পেলেন না।’ তবে মহাজোট ‘ইন্ডিয়া’কেও কটাক্ষ করেছেন তিনি। বলেছেন, ‘যাঁরা রামচন্দ্রের বিরোধিতা করেন, তাঁদেরও গরিষ্ঠতা দেওয়া হয়নি।’ তবে তা চলে গিয়েছে পিছনের সারিতে। বিজেপির অন্দরে তোলপাড় চলছে ইন্দ্রেশ কুমারের ‘ঔদ্ধত্য-আক্রমণ’ নিয়েই। প্রশ্ন উঠছে, নরেন্দ্র মোদির উপর সঙ্ঘের চাপ বাড়ছে কেন? রাজনৈতিক মহলে জোরদার জল্পনা, বিজেপিকে লাগাতার আক্রমণের মধ্যে রয়েছে আরএসএসের নির্দিষ্ট কোনও পরিকল্পনা। খুব নিয়মিত এবং সুচারু কৌশলে চলছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে তোপ দাগা। কারণ কী?
বিজেপির শীর্ষ স্তরে অস্বস্তি এবং ক্ষোভ দানা বাঁধলেও প্রত্যক্ষ মন্তব্য এ পর্যন্ত করেননি কোনও শীর্ষ নেতা। কিন্তু তাঁদের ক্ষোভের আঁচ পাওয়া যায় যখন বিহার সরকারের মন্ত্রী বিজেপি নেতা নীতিন নবীন বলেন, ‘আমরা রামচন্দ্রকে নিয়ে রাজনীতি করি না। রামচন্দ্র আমাদের আরাধ্য। কংগ্রেস আসলে আরএসএস বনাম বিজেপি দ্বন্দ্ব উস্কে দিতে আসরে নেমেছে।’ ইন্দ্রেশ কুমারের মন্তব্য সম্পর্কে কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা কিন্তু বলেছেন, ‘এসব বলে কী হবে? সঙ্ঘ কী বলল, না বলল... প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গ্রাহ্যই করেন না! কিন্তু আরএসএস এসব কথা ভোটের আগে কেন বলল না? ফলপ্রকাশের পর বোধোদয় হয়েছে?’
আগামী বছর রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের শতবর্ষ। বিজেপির অন্দরের আশঙ্কা, এই কারণেই অতিসক্রিয় হয়ে ওঠার প্রবণতা দেখা যেতে পারে আরএসএস কর্তাদের মধ্যে। ব্যক্তি নয়, সংগঠন আগে। এই ফর্মুলা কি তাহলে ফিরছে? পরাজয়ের সব দায় তাহলে ব্যক্তির উপরই চাপবে? সঙ্ঘের বা দলের নয়?