শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা। গুপ্তশত্রুতার মোকাবিলায় সতর্কতা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় বিলম্বিত সাফল্য।প্রতিকার: ... বিশদ
দেশের অভ্যন্তরীন আর্থিক বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশে নেমে আসায় আদালত থেকে পুলিসি হেফাজতে যাওয়ার পথেই মোদি সরকারকে কটাক্ষ করেছিলেন পি চিদম্বরম। আজ তোপ দেগেছেন মার্কিন মুলুকে হিউস্টনে হাউডি মোদি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে। অর্থনীতি থেকে শিল্প, কর্মসংস্থান থেকে কৃষি, এই সরকারের আমলে দেশের অবস্থা বেহাল বলেই বিরোধীদের অভিযোগ। কিন্তু সেসব স্বীকার না করেই আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে অনাবাসী ভারতীয়দের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারতে সব ভালো আছে। ইংরেজি, হিন্দির পাশাপাশি বাংলা, তামিল, ওড়িয়া, গুজরাতির মতো ভারতের নানা ভাষায় এই মন্তব্য করে হর্ষধ্বনি আর হাততালি কুড়িয়েছেন মোদি।
জেলে বসে সেই খবর পেয়েই আজ সকালে ট্যুইটারের মাধ্যমে আক্রমণ করেছেন পি চিদম্বরম। তিহারে মোবাইল ব্যবহারের অনুমতি নেই। তাই তাঁর হয়ে পরিবারকে দায়িত্ব দিয়েছেন ট্যুইট করার। একটি মিডিয়া হাউসকে পদের অপব্যবহার করে বিদেশি বিনিয়োগের সুবিধা পাইয়ের দেওয়ার অভিযোগে গত ২১ আগস্ট পি চিদম্বরমকে গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই। প্রথমে তাঁকে পুলিসি হেফাজতে রাখা হলেও আদালতের নির্দেশে ৫ সেপ্টেম্বর থেকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে তিহার জেলে পাঠানো হয় তাঁকে। আপাতত আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত সেখানেই থাকতে হবে চিদম্বরমকে।
জেলে বসেই পরিবারের মাধ্যমে নিজের ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে কটাক্ষের সুরে আক্রমণ চড়িয়ে পি চিদম্বরম লিখেছেন, ‘বেকারত্ব, চাকরি চলে যাওয়া, বেতন কমে যাওয়া, গণপিটুনি, কাশ্মীর অবরুদ্ধ হয়ে থাকা এবং বিরোধী নেতাদের জেলে পোরার ঘটনা ছাড়া ভারত মে সব আচ্ছা হ্যায়!’ কেবল ইংরেজিতে নয়। হিন্দিতেও অনুবাদ করে ট্যুইটারে মোদি সরকারকে আক্রমণ শানিয়েছেন চিদম্বরম। পাশাপাশি এদিন তাঁর সঙ্গে সোনিয়া গান্ধী, ড. মনমোহন সিং সাক্ষাৎ করতে যাওয়ার বিষয়টিকেও উল্লেখ করেছেন তিনি। বলেছেন, আমি সম্মান্নিত। যতদিন কংগ্রেস শক্তিশালী এবং সাহসী থাকবে, ততদিন আমিও শক্তিশালী এবং সাহসী থাকব।
অন্যদিকে, এআইসিসির পক্ষ থেকেও মার্কিন মুলুকে মোদির রাজনৈতিক আচরণ নিয়ে সমালোচনা চড়ানো হয়েছে। দলের রাজ্যসভার উপদলনেতা আনন্দ শর্মা বলেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মতো মর্যাদাসম্পন্ন পদে থেকে বিদেশে গিয়ে এভাবে রাজনীতি করা উচিত হয়নি নরেন্দ্র মোদির। হিউস্টনে প্রবাসী ভারতীয়দের অনুষ্ঠানে গিয়েছেন, ভালো কথা। সেখানে আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পও এসেছেন। তাও ভালো। তা বলে সেদেশের ঘরোয়া রাজনীতির সঙ্গে কেন নিজেকে জড়াবেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী? প্রশ্ন তুলে আনন্দ শর্মা বলেন, আমেরিকার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক দুই রাষ্ট্রের। কোনও ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির নয়। যে দলের সরকাররই হোক, আমাদের নীতি মতো তাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখাটাই দস্তুর। সেখানে নরেন্দ্র মোদি আমেরিকার রাষ্ট্রপতিকে পাশে দাঁড় করিয়ে ‘অব কি বার, ট্রাম্প সরকার’ প্রচার করতে পারেন কি? নাকি শোভা পায়?
এ ব্যাপারে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের অবস্থানই অবলম্বন করা নরেন্দ্র মোদির উচিত ছিল মন্তব্য করে আনন্দ শর্মা বলেন, আমেরিকায় কখনও রিপাবলিকান, কখনও ডেমোক্র্যাটরা ক্ষমতায় আসে। রিপাবলিকান বুশের আমলে ভারতের সঙ্গে নিউক্লিয়ার চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তির পরেই ছিল ভোট। ড. মনমোহন সিং কিন্তু সেখানে কোনও প্রচারে অংশ নেননি। আবার পরে যখন ডেমোক্র্যাটের বারাক ওবামা ক্ষমতায় এসেছিলেন, তাঁর সরকারের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্ক একইরকম ছিল। ড. মনমোহন সিংকে তাঁর সরকারের প্রথম স্টেট গেস্ট করে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ওবামা। তাই সম্পর্ক দুই রাষ্ট্রের। দুই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নয়। আর সেটাই বেমালুম ভুলে গিয়ে কেন রাজনৈতিক প্রচার করলেন মোদি?